Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৮১

maro news
ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৮১

ফেরা

আজ কিছুটা হলেও প্রসঙ্গ চেঞ্জ করবো। আগের সপ্তাহের পর্ব লেখার সময় মনে মনে সেটা স্হির করে রেখেছিলাম। ২০১০ সালের কেদারনাথ ভ্রমণের তিন বছর পরের কথা। কদিন ধরেই শুনছিলাম যে এবার উত্তরাখণ্ডে তুমুল বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা। এর মধ্যে আরো একটি ছোট্ট খবর নেট ঘাঁটতে গিয়ে চোখে পড়েছিল। কিছু কারণবশতঃ, ধারী দেবী, যাঁকে কিনা ঐ অঞ্চলের রক্ষাকত্রী হিসেবে গণ্য করা হয়, তাঁর মন্দির স্থানান্তরিত করা হবে। যে ভদ্রলোক এই আর্টিকেল লিখেছিলেন, তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে অতীতে এই কার্য্য করে ওই অঞ্চল প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছিল, এবার না আবার হয়। কিন্তু অধিকাংশ কেউ এই কথা পাত্তা দেয়নি। ফল যা হবার তাই হয়েছিল। যে সন্ধ্যায় মন্দির সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই রাতেই তুমুল বৃষ্টির ফলে গান্ধী সরোবর বা চোরাবালিতাল উপচে প্রচন্ড বেগে জল আর পাথর কেদারধামের দিকে এগিয়ে আসে। একমাত্র মন্দির ছাড়া আর প্রায় কোনোকিছুই অক্ষত ছিলো না। অনেক লোক মারা যান। রামওয়াড়া ধ্বংস হয়ে যায়। পরেরদিন সকালে খবর শুনে তড়িঘড়ি স্যাটেলাইট ইমেজ দেখি। মন্দিরের পাশে ভারত সেবাশ্রমের আর কোনো চিহ্ন নেই, কেউ যেন চেঁছে তুলে নিয়েছে। এত মন খারাপ হয়ে যায়। তারপর সংঘের সন্ন্যাসীদের কোনো খবর ও পাই নি। কদিন পরে গড়িয়াহাট অফিসে গিয়ে জানতে পারি, তিন সন্ন্যাসী শহিদ হয়েছেন। হ্যাঁ, আমার চেনা মহারাজ আছেন তার মধ্যে। আরো কদিন পরে ওই দুর্যোগ থেকে বেঁচে আসা একটি ছেলে তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে একটি বইয়ে। শেষ সময়ে, মহারাজ তার সাথেই ছিলেন। জলস্রোত নেমে আসতে দুজনে দুদিকে ছিটকে পড়েন। ছেলেটি কোনোক্রমে বেঁচে গেলেও, মহারাজ সাধনাচিত ধামে গমন করেন। আজো যখন পাহাড়ের প্রসঙ্গ আসে, আমার ওনার সাথে কাটানো মুহুর্ত মনে পড়ে। ওনাকে কথা দেওয়া আছে, আবার যাবো। হ্যাঁ যাবো, যেতে আমাকে হবেই।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register