Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৬০)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৬০)

পুপুর ডায়েরি

 

গরম কালের ছুটির সকালে মামাবাড়ি মানেই ম্যাজিকের মত সময়। সেই রোদ্দুরের তুলনা হয় না। একটু তাড়াতাড়ি উঠে পারলে একটা “ট্রিট” থাকত। মানে পুপুর ইংরিজি গল্পের বই পড়া মাথার কাছে সেটার নাম “ট্রিট” আর কি। হুস করে জামা পালটে নিয়ে ; সাজি হাতে ফুল তোলার “ রাইট” পাওয়া যায়। আসলে পুজোর ফুল তুলতে গেলে রাতের পরা বাসি জামাটামা চলবে না। তাই চটাপট পরিষ্কার কাচা জামা প্যান্ট গলিয়ে হাত ধুয়ে এলে মাসিরা ছোটোদের হাতে ধরিয়ে দিত পুজোর ফুল তোলার সাজি। সে হাতে পাওয়ার আনন্দই আলাদা। ভোরের একটা বিশেষ গন্ধওয়ালা মিষ্টি হাওয়া দেয় গরম কালে। তার সঙ্গে টগর, কল্কে, জবা পাতার গন্ধ মিশলে মনটা কেমন যেন হয়ে যায়। মনে হয়, আ্হা কী ভালোই আছি। হাওয়াই চটি ফটর ফটর করে এ বাড়ি, ও বাড়ির গাছ থেকে নানা রঙের, নানা রকম পাপড়ির ফুলে সাজি ভরতে কী ভালো লাগে, সে ছোটোরাই জানে। সবশেষে তোলা হত মাধবী ; কারণ, ও তো বাড়িরই গাছ। বাড়ির সামনের লম্বা বারান্দার বাঁ দিকে, দাদুভাইয়ের ঘরের কোনা থেকে ছাদের ওপরে উঠে ফুলে ঢেকে থাকতো মাধবীলতা। কী তার মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ। আমার সবচেয়ে আশ্চর্য লাগতো এর ফুলগুলো দেখে। এই কুঁড়ি থেকে ফুটে ধবধবে সাদা ; একটু বেলা বাড়লেই গোলাপির ছিটে, তারপর বেবি পিঙ্ক, শেষে একেবারে টকটকে লাল, এটা এত বেশি ম্যাজিকাল মনে হত… কী বলি!! মায়ের কাছে শুনতাম আমি হবার পর, প্রথম ঘর থেকে বাইরে, ওই বারান্দাতেই নিয়ে যাওয়া হত আমায়। রোজই বাবা আসতেন বিকেলে আমাদের দেখতে। তখন বাবার কোল থেকে ওই ফুলগুলোর দিকেই নাকি হাত বাড়াতো ছোট্ট পুপু। আর তাতেই তার “ প্রাউড পেরেন্টস ” ভীষণ আল্লাদিত হয়ে, নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতেন, “ দেখেছো কীই বুদ্ধি… ”

এইসব ছবি গন্ধ মিশিয়ে গরম কালটা বড়ো আরামের হয়ে রইল মনের ভেতরে।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register