Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় মধুসূদন দরিপা

maro news
।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় মধুসূদন দরিপা

বংশী দর্জি আর ডোমের গল্প

বংশী দর্জি সারা বছর বেগার খাটে বাবুর । বাবু দয়া পরবশ হয়ে মাঝে মাঝে খেতে দেন দুটো এঁটো কাঁটা । ওর বউ মন্দিরে রান্না করে বিনি পয়সায় । জগজ্জননীর ভোগ । ----মা ঠিক কৃপা করবেন তোকে । পূজারী ঠাকুর ভোগের রান্না খেতে খেতে আশ্বাস দেন । ও সন্তানহীনা । কুড়ি বছর হয়ে গেলো । -- আর কি হবে ? --হবে হবে ঠিক হবে সবুর কর । সবুরে মেয়া ফলে ।
মেয়া ফলে । বছরে দেড় মাস । দুর্গা পূজার সময় । একমাত্র ওই তিন পক্ষ কাল বংশী দর্জির খাতির বেড়ে যায় । পুজো যত এগিয়ে আসে তত ডাঁট বাড়ে তার । ' আর অর্ডার নেওয়া হবে না ' দোকানের সামনে টাংগানো থাকে । তবুও অর্ডার নিতে হয় । ' ভি আই পি'-রা যে সমাজের আনাচে কানাচে এখন । কার কখন গোঁসা হয় ! ----হ্যাঁ রে বংশী ! ওদের গোঁসা হলে তোর কি ? হারানোর কি বাকি আছে তোর ? বংশী ফ্যাল ফ্যাল করে আকাশের দিকে থাকিয়ে থাকে ! ----তা তো জানি না । তবুও যদি গোঁসা হয় ! যদি ...
এ বছর করোনা ! অর্ডার নেই । বরাত নেই । বংশীরও খাতির নেই । ডাঁট নেই । ভি আই পি-দের ভয় নেই ! করোনার জন্য পৃথিবী বদলে গেছে । লোকেরা নতুন জামা বানাচ্ছে না । বানিয়ে কি হবে ? যে কোন মুহূর্তে মৃত্যু হতে পারে ! মৃত্যু হলে উলঙ্গ দেহ পোড়াবে ডোম । থুড়ি ! বিদ্যুৎ চুল্লি !
ডোমটির কাজ নেই । চুল্লির বাইরে নদীর ধারে কাঠের চিতাটি অভুক্ত থাকে প্রায় দিন । ডোমটি বসে থাকে শ্মশানে মা কালীর মুখ চেয়ে । ----চুল্লিটা বিকল করে দে মা ! মড়ার আঁচে দুটো ভাত ফুটিয়ে খাই !
চুল্লির আঁচ বেড়ে চলে রোজ । মন্দিরে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকে ডোমটি । বংশী বেগার খেটে যায় বাবুটির । ওর বৌ রান্না করে যায় ঠাকুরের ভোগ ।
কবি ছবি আঁকেন প্রজাপতি ব্রহ্মার চারটি মুখ !
করোনা ডোম বংশী বংশীর বৌ ।
আদতে একটিই মুখ । শুধু লিঙ্গের তফাৎ ! কবিতা লেখা হয় ! ছাপা হয় না ! প্রেসে তালা পড়ে গেছে । সেলাইকলের মতো । কাঠের চিতার মতো ।
শুধু মন্দির খোলা থাকে ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register