Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

শনিবারের গল্প দেবদাস কুণ্ডু

maro news
শনিবারের গল্প দেবদাস কুণ্ডু

রূপকথার সন্ধান

বিট্টুর মন খুব খারাপ। একটু আগে সাদা পায়রাটার একটা ডানা ধরে ঝুলিয়ে নিয়ে ফেলে দিয়ে এলো দাশদের পানা ভর্তি পুকুরে। এনেছিল শাবক। নিজের হাতে খাইয়ে যন্ত নিয়ে বড় করলো। একটা নর আনলো হাট থেকে। বেশ জোড় হয়েছিল। ডিম দিল। বাচ্চা হলো। তাদের বড় করলো। হঠাৎ ওর যে কি অসুখ হলো কে জানে। খায় না। শুধু ঝিমুয়। বিট্টুর কাছে পাখি পশুর অসুখের বই আছে। সেখনে এই রকম অসুখের কথা নেই। তবু সে শ্যামবাজার আর জি কর হাসপাতালের উল্টো দিকে পশুপাখির অষুধের দোকান আছে। সেখান থেকে অসুষ এনে খাইয়েও সুস্থ হলো না। আজ মারা গেল। কি সুন্দ উড়তো। শূন্যে ভল্ট খেত দারুন। কতো দূর থেকে ছেড়ে দিয়ে এলেও ঠিক বাড়ি চলে আসতো। বড় ভাল ছিল। মাদি তো। চলে গেল। বিট্টুর চোখ ছল ছল করছে। বিট্টু এর আগে একবার হাট থেকে কিনে ছিল ময়না। দারুন দেখতে। কি সুন্দর কথা বলতো। মাঝে মাঝে শিস দিতো। কি ভালো লাগতো।। একদিন সকাল বেলা বিট্টু দেখে ময়নার মুন্ড খাচার বাইরে। আর দুটো পা পড়ে আছে খাঁচার ভিতরে। দেহটা খেয়ে নিয়েছে বড় ইন্দুর। বিট্টুর মন এতো খারাপ হয়েছিল যে, তিনদিন কিছু খায় নি। মা বাবা কতো বলেছে। তবু না। ঠাকুমা বলতে ঠাকুরমার সংগে খেয়েছে ভোগের প্রসাদ। এক সময় তার একটা বড় এ্যকোরিয়াম ছিল। তাতে ছিল কত রংয়ের মাছ। ছিল কিং ফিস। রেড মলি। ব্ল্যাক মলি। গোল্ড ফিস। একদিন নিয়ে এলো টাইগার ফিস। ও মা এনে তো বড় বিপদে পড়ে গেল বিট্টু। সব মাছকে মারছে। তাড়া করছে। সংগে সগে সেটাকে তুলে আলাদা বোতলে রেখে হাতিবাগান বাজারের ভিতর হাটে বেচে দিল। ঘরের আলো বন্ধ করে সে এ্যকোরিয়ামের দিকে তাকিয়ে থাকতো। নিল জলরাশি, আমাজন গাছ, আর ঝরনা। তার মধ্যে মাছের নানা ভঙ্গিতে বিচরন বেশ লাগতো। মা বলতো, এখন আর মাছের দিকে না তাকিয়ে পড়তে বসে যাও।' সে মাছেদের সংগে গল্প করতো। মাছেরা সমুদ্রের গল্প বলতো। বিট্টু শুনতে শুনতে সমুদ্রে চলে যেত। তখন শীতকাল। হিটার দিতে হয়। দিয়েছে তবু মাছেদের গায়ে সাদা সাদা দাগ। আবার বই। এটা মাছেদের অসুখের বই। পড়ে অসুষ নিয়ে এসে জলে ফেলে দিলো। কিন্তু কিছুই হলো না। একটা একটা করে তার প্রিয় বন্ধুদের মৃত্যু দেখলো। সে কি কষ্ট! সে কি যন্তনা।! আজ সেই যন্ত্রণা আবার অনুভব করছে। চুটচাপ বসে আছে উঠোনে। ঠাকুমা বললেন, কি হয়েছে কর্তা? ' "আচ্ছা ঠাকুমা আমি যা পুষি। যাকে ভালোবাসাবাসি, সেই মরে যায়। কেন বলত? ' দেখ কর্তা সব প্রানীর মৃত্যু আছে। আগে বা পরে। ' ' তাহলে তুমিও কি একদিন মরে যাবে? ' ' সে তো যেতে হবে ভাই। ' ' তাহলে কে আমাকে রুপকথার গল্প শোনাবে? ' ' রুপকথারা বুকের ভিতর থাকে। তুমি নিজেই তার সন্ধান পেয়ে যাবে. একদিন।' 'বিট্টুর চোখ জ্বল জ্বল করে উঠলো।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register