Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে রীতা পাল (পর্ব - ১৭)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে রীতা পাল (পর্ব - ১৭)

যাও পাখি দূরে

সবিতা দেবীর লিলুয়া থেকে বাড়ি ফিরতে একটু রাত হয়ে গেল। এসেই মেয়ের ঘরে ঢুকলেন। দেখলেন কুমারী অঘোরে ঘুমাচ্ছে। সুখেন বাবু স্কুলের খাতা দেখছেন। সবিতা দেবী ফ্রেস হয়ে সুখেন বাবুকে খাওয়ার টেবিলে ডাকলেন। সুখেন বাবু খেতে বসেই জিজ্ঞাসা করলেন,“ কেমন আছেন নয়ন? ও কিছু বললো?” “ ওর চোট তো তেমন ছিল না। মাথাটা ফেটে গিয়েছিল। এখন সুস্থ আছে।” সবিতা দেবীর মুঠো ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা রিসিভ করে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন,“ আচ্ছা ঠিক আছে। আমি কাল তোমাকে ফোন করে নেবো।” ফোন রেখে সুখেন বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন,“ না,তেমন কিছু না। তবে সমরেশ বসু কেন আমাদের মিথ্যা বললেন! ওরা উনার বাড়িতে গেছিল। তারপর রঞ্জনা আর ওদের সাথে ফেরেনি। ও বাড়িতেই থেকে গিয়েছিল। আর বাকিরা ফিরে আসছিল।” “ কিভাবে মেয়েটা গেল আর কিভাবে ফিরে এলো! একে কি ফেরা বলে সবিতা?” “ খেয়ে নাও। অনেক রাত হলো।” বলেই সবিতা দেবি উঠে পড়লেন। সকালে সুখেন বাবু আর সবিতা দেবী চা খাচ্ছেন এমন সময় মিস্টার হালদার এলেন। এত সকালে মিস্টার হালদার! দেখেই দু’জনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। সুখেন বাবু তাড়াতাড়ি এসে দরজা খুলে দিলেন। মিস্টার হালদার ড্রইং রুমে ঢুকেই জিজ্ঞাসা করলেন,“ কুমারী কেমন আছে?” সবিতা দেবি এক কাপ চা মিস্টার হালদার কে দিয়ে বললেন,“ এখন একটু ভালো। তবে এখনও অব্দি কথা বলেনি।” “ সেকি! এদিকে উপর থেকে চাপ আসছে কেসটার তাড়াতাড়ি সমাধান করবার জন্য।” “ তার জন্য এত সকালে ছুটে চলে এলেন?” “ না,আরও একটা কারণ আছে। আপনারা আপনার মেয়ের মোবাইল ফোনটি নিয়েছিলেন?” সুখেন বাবু বলে উঠলেন,“ আমাদের তো খেয়ালই নেই। দূর,মোবাইল ফোনটার কথা আমাদের মনেই নেই। কিন্তু কেন বলুন তো?” “ যারা ছিল,সবার ফোন পাওয়া গেছে কিন্তু আপনার মেয়ের মোবাইল ফোনটা পাওয়া যায়নি। তদন্তের স্বার্থে ওটা আমাদের খুবই দরকার। ওর ফোনটা গেল কোথায়?” “ হয়তো ছিটকে পড়ে গেছে বা কেউ নিয়ে নিয়েছে”,সুখেন বাবু বলে উঠলেন। “ কুমারী ফোনটা খুব দরকার ছিল। যাক, ললিতের ফোনটা কিছুতেই খোলা যাচ্ছিল না। আর হ্যাঁ,মুম্বাই থেকে ললিতের বাবা-মা এসেছে। কাল থানায়ও এসেছিল। আপনাদের ঠিকানা নিয়ে গেছে। ওরা হয়তো আপনাদের সাথে দেখা করতে আসতে পারে। আচ্ছা, তাহলে আমি জানিয়ে দিই কুমারীর ফোন আপনাদের কাছে নেই। সরি,সুখেন বাবু!”, বলেই মিস্টার হালদার বেরিয়ে গেলেন। দুপুরে আয়া দিদি বলল,“ জানো দিদি,আজ মেয়ে সবটুকু ভাত খেয়েছে।” সবিতা দেবী আয়া দিদির দিকে তাকিয়ে,“ ও, - - - ওকে ওষুধগুলো ঠিক করে দিও। বিকালে সামনের বাগানটায় একটু হাঁটিও। এখন তো নিজে নিজে হাঁটতে পারে।” “ দিদি,সেদিন তুমি বেরিয়ে যাবার পর কুমারী একা একাই বাগানে এসেছিল। ওকে দেখে আমি একটা চেয়ার নিয়ে গেলাম। ও চুপ করে বেশ কিছুক্ষণ বসে সূর্যাস্ত দেখছিল। সন্ধ্যায় আমি আবার ওকে ঘরে নিয়ে এলাম। কোথায় মশা কামড়াবে,চারিদিকে যেভাবে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে!” “ হুম,এই সপ্তাহে মালি এলে বলতে হবে বাগানে কোথাও যেন জল না জমে থাকে।” সবিতা দেবীর মুঠো ফোনটা বেজে উঠল - - - - ফোনটা ধরে,“ হ্যালো,বলো,কি বলছো? কি! আমি কোথাও বেরাবো কি না? না,আজ আমার বেরোনো নেই। আচ্ছা,সন্ধ্যায় তোমরা আসবে,এসো,আমি আছি।” ফোনটা কেটে গেল। ক্রমশঃ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register