কবিতায় শ্যামলী ব্যানার্জী
স্বাধীনতার প্রহসন
বাজছে বিষাণ, উড়ছে নিশান,
স্বাধীনতা জ্বালছে আলো,
সর্বহারা ভাবছে বুঝি
ঘুচলো মলিনতার কালো।
সাতাত্তরটি বছর মোরা,
পার করেছি হেসে কেঁদে,
কাঠের আঁচে ভাত রেঁধেছি,
পথের ধারে ঝুপড়ি বেঁধে।
কবে মোদের ফিরবে সুদিন,
কোন ঘাটেতে বাঁধবো তরী?
উথাল পাথাল পেটের ক্ষিধে,
সামাল দিতে আর না পারি।
ঐ যে ছোট ল্যাংটা শিশু,
ভোর না হতে ভাতের খোঁজে,
পেটের ক্ষিধে মিটলে তবেই
স্বাধীনতার মানে বোঝে।
ওই যে হোথায় শিশুশ্রমিক,
রেস্টুরেন্টে বাসন মাজে,
পথের ধারে কিশোরীটি
পেটের দায়ে বেশ্যা সাজে।
নোনা জলে ডুবলে ফসল,
চাষীরা দেয় গলায় দড়ি,
মালিক শ্রমিকের রক্ত চুষে,
ব্যাংকে বাড়ায় লাভের কড়ি।
ডিগ্রি হাতে বেকার যুবক
বেকারত্বের জ্বালায় কাঁদে,
শিক্ষকরা চাকরীহারা,
ধর্না দিয়ে ব'সে পথে।
মুক্তি ওদের কবে হবে?
কবে হবে চিরস্বাধীন?
মুক্ত বিহগ যেমন ওড়ে,
স্বাধীন ভাবে বাঁধনহীন।
শহিদের ঋণে স্বাধীনতা
কিনে জননেতাদের জয়োল্লাস,
মুনাফালোভী মজুতদারেরা
করল দেশের সর্বনাশ।
নিরন্ন শিশুর শ্রমের বেসাতি,
ধর্ষিতা নারীর হাহাকার,
যেদিন হবে স্তব্ধ সেদিন
স্বাধীনতা আসবে সবাকার।
আটাত্তরের স্বাধীন ভারতে,
আমরা ফেলব মুছে সব মলিনতা,
তিরঙ্গার স্বাধীন উড়ান
দেবে বিশ্বের কাছে শান্তির বারতা।
আজকে দাঁড়িয়ে আটাত্তরে,
শপথ নিতে হবে,
"ভারত আবার জগত সভায়
শ্রেষ্ঠ আসন লবে।"
0 Comments.