কবিতায় সুমিতা চৌধুরী
অনন্ত অপেক্ষায়
দখিনা বাতাসকে হলুদ খামে পাঠিয়েছিলাম চিঠি,
কোনো এক সুদূরের মেঘমুলুকের উদ্দেশ্যে।
সেই থেকে অনন্ত অপেক্ষায় গুণে চলেছি প্রহর,
বুঝি কোনো বার্তা আসে ফেরারী হাওয়ার সাথে।
ভোরের পাখি যখন আলো মাখে ডানায়,
ভৈরবী ছন্দে ঘুমের চাদর সরায় পৃথিবী,
মনপাখিও পাখনা মেলে নতুন পথের খোঁজে,
কোনো চেনা সুরের আভাস পাওয়ার আশায়।
রোদলা পথ যখন হয় তপ্ত শ্বাসে শ্রান্ত,
মরিচীকার ভ্রান্ত দর্শনে পথিক পথ ছাড়ে,
ধোঁয়াশার পর্দা ঠেলে তখনও দুচোখ দৃষ্টি বেছায়,
কোনো ঝরা পাতার বুকে উঠছে ফুটে কি, কিছু কথা...
ঘুঘুচরা দুপুরের ওপারে যখন জাগে সবে খুনসুটির বিকেল,
কপোত-কপোতীর ভালোবাসার ভিজে ঠোঁটে।
মিঠে বাতাস করে কানাকানি ঘাসের গালিচায়,
তখনই মন পালক দেয় উড়ান, কোনো গোধূলি মাখার বাসনায়।
রক্তিম সাঁঝ নামে যখন পাখির ক্লান্ত ডানায়,
রাখাল আলপথ বেয়ে ফেরে ঘরের টানে,
তুলসী প্রদীপের আর শঙ্খধ্বনির মাঝে মরমিয়া মন,
থাকে আকূল প্রতীক্ষায়, শুনতে সেই আবেগী বাঁশির ধুন।
এরপর পালা রাতের তারা গোণার,
সলমাজুরি চাঁদের বাসর রাতে।
কোনো পিউকাঁহার দরদী ডাকের মাঝে,
খুঁজে পেতে সেই গোপন, অতি আপন ফেরারী বার্তার।
এভাবেই আছি অপেক্ষায় আজও,
পল থেকে প্রহর থেকে দিন-মাস-বছরের চক্রপথে,
শুধু নীল আকাশের খামে লেখা রামধনুর আখরে,
মেঘমুলুকের বৃষ্টির আঘ্রাণ মেখে তোমার গোপন বার্তার পথ চেয়ে।।
0 Comments.