Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ২১)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ২১)

পদচিহ্ন

উনবিংশ পর্ব ওদিকে নতুন জমিতে না হয় নতুন ভবন গড়ার কাজ চলুক আমরা আবার একটু পেছন দিকে হেঁটে আসি। বলরামবাবুর স্বপ্ন ধীরেধীরে সাকার হচ্ছে। যে বসতবাড়িতে স্কুল বলতে ছিলো মাটিতে গাঁথা ইটের পিলারের ওপর খড়ের আটচালা আর ছাত্রছাত্রীদের সাথে পরিবারের শয়নকক্ষও ছিলো একইরকমের। নীচে ইটের সোলিংএর ওপর বালি সিমেন্টের প্রলেপ দেওয়া মেঝের ওপর ঢালাও বিছানা। সেই ছাত্রছাত্রীরাও বলরামবাবুর সাথে একইরকমভাবে আনন্দে খুশীতে এসে নতুন বাড়ি তৈরিতে হাত লাগাতো। দূরের রাস্তা থেকে মাথায় করে ইট বয়ে এনে দোতলায় তুলে দেওয়া, রাস্তার থেকে বালির স্তুপকে ঝুড়ি করে বয়ে নিয়ে আসা, নতুন বাড়ির গাঁথনিতে জল খাওয়ানো এরকম আরও কতো কি! ছাত্রদের একজন বাসুদেব বরের সাথে সম্ভবত আপনাদের আগেই পরিচয় হয়েছে। বাসুদেব তখন ক্লাস থ্রীর ছাত্র। ওর কথায় -- জানো জেঠু, আমাদের তখন রাতে ভালো ঘুম হতো না। রোজ ভোর হওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম আর ভোর হলেই একছুটে পেরিয়ে যেতাম দেড় কিলোমিটার পথ। দুচোখ ভরে দেখতাম আমাদের নতুন বাড়ি ( সুধী পাঠক," আমাদের " শব্দটাকে খেয়াল করবেন, কতোটা একাত্ম হলে একজন শিশু এই শব্দটা ব্যবহার করতে পারে)। রোজ সকালে এসে দেওয়াল ভেজাতে শুরু করে দিতাম। ইট বয়ে, বালি বয়ে দিতাম। বলরামকাকু বারণ করতেন কিন্তু আমাদের তখন দুচোখ জুড়ে স্বপ্ন। ভাবতাম কবে এসে এখানে পড়াশোনা করবো এই স্কুল বাড়িতে। -- ক্লান্তি আসতো না তোদের? আমি জিজ্ঞাসা করি। -- সেরকমটা বোঝার মতো বুদ্ধি তখনও আমাদের হয়নি যে -- -- প্রথমে কোন বিল্ডিংটা তৈরী হয়েছিলো রে? -- মন্দিরটা গো, মন্দিরটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছলো দুহাজার সাত সালে, আমি তখন ক্লাস থ্রির ছাত্র। তোমরা এখন যেটাতে বসে অফিসিয়াল কাজকর্ম করো সেটা সেসময় ছিলো প্রার্থনার ঘর আর খাওয়ার ঘর, সেই ঘরটার দক্ষিণ পূর্ব কোণে এখনও মুখ ধোওয়া, বাসনকোসন মাজার জন্য যে সিঙ্ক ছিলো সেই সিঙ্কটার চিহ্ন আছে। ওই ঘরটা দিয়েই শুরু হয়েছিলো বাড়ি তৈরীর কাজ। তারপর বাড়িটা দুদিক ধরে এগিয়ে গেছিলো পুবদিক বরাবর। মাঝখানে যে জায়গাটা ছিলো সেখানে তৈরি হলো ইটের রাস্তা আর কিচেন গার্ডেন। বাড়িদুটোর প্রতি তলায় আটটা করে ঘর। আট দুগুনে ষোলো, আর ষোলো দুগুনে বত্রিশ। এই মোট বত্রিশটা ঘর গো জেঠু। --- বাব্বা, তোর তো অনেককিছু মনে আছে দেখছি। বর্তমানে যুবক বাসুদেবের চোখেমুখে লজ্জার ছাপ পড়ে। যতদূর শুনেছি এই বাসুদেব পড়াশুনোতেও খুব ভালো ছাত্র ছিলো। -- আচ্ছা বাসুদেব, পুরোনো স্কুলে তোদের পড়াতেন কে? --- প্রথমে তো অলকা দিদিমণিই পড়াতেন তারপর কলকাতা থেকে ময়নাদি এলেন। তখন তিনিও পড়াতেন। --- কলকাতা থেকে ময়না দি এলেন? মানে কি? ময়না কি কলকাতা থাকতো নাকি? কেন? ক্রমশ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register