কবিতায় শান্তালতা বিশই সাহা
আমি জন্মেছিলাম বাঁচার অধিকার নিয়ে
আমি তাদের ধিক্কার জানাই,
যারা সন্তানের মঙ্গল কামনায় নিজের বিবেককে অন্যের কাছে বিকিয়ে দেয়।
আমি তাদের ধিক্কার জানাই,
যারা ধর্ষণকারীর ন্যায়বিচার না করে সমস্ত প্রমাণ লোপাট করে।
আমি তাদের ধিক্কার জানাই,
যারা সাধারণের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে অবলীলায় আত্মসুখে মগ্ন থাকে।
আমি তাদের ধিক্কার জানাই,
যারা মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে আগামী প্রজন্মকে অনিশ্চিতের পথে ঠেলে দেয়।
আমি তাদের ঘৃণা করি,
যারা আপন সত্ত্বাকে বলি দিতে বিন্দুমাত্র কুন্ঠা বোধ করে না।
আমি তাদের ঘৃণা করি,
যারা সমাজের রক্ষক হয়েও কাপুরুষের মতো নিজেকে ভক্ষকের ভূমিকায় রাখতে বেশী পছন্দ করে।
আমি তাদের ঘৃণা করি,
যারা বুদ্ধিজীবী হয়েও অন্যায়ের প্রতিকার চায় না।
সমাজের এই নগ্ন রূপ দেখতে দেখতে আমি ক্রমশ ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে পড়ছি,
আমার অবসাদগ্রস্ত মন কোথায় তলিয়ে যাচ্ছে....
পাপে পঙ্কিল সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন বিষবাষ্প,
এর প্রতিকার দরকার।
কবিরা কলম তুলে নাও,
সাদা পাতার বুকে দেয়ালে ফেষ্টুনে ঝড় উঠুক প্রতিবাদের।
চরমতম ঘৃণা ও যন্ত্রণার প্রলেপ দিতে
শিক্ষককে লাথি মারার প্রতিবাদে
এখনই কবিতা লেখার উপযুক্ত সময়।
জীবনযন্ত্রণায় কাতরানো মৃত্যুহীন প্রাণকে জাগিয়ে তুলতে
নতজানু হও কবিতার কাছে।
দিশেহারা হতাশাক্লিষ্ট মেরুদণ্ডের চোখে চোখ রেখে
অসি'কেই শেষ অস্ত্র বলে মেনে নাও,
পাঠ হোক কবিদের হৃদয় নিংড়ানো রক্ত মাংস হাড় দিয়ে গড়া
প্যানোডোরার ঝুলি থেকে অজস্র কোলাজ কবিতা।
খুলে ফেলো উমেদার প্রবঞ্চক আর তোষামোদকারীর মুখোশ,
ছুঁড়ে দাও কবিতার ইস্তাহার লুঠতরাজ হত্যাকারীদের শোষণ ও ত্রাসের বুকে,
অশিক্ষার বিদ্যায়তনে, হত্যাকারীর বিচারালয়ে
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক।
যতদিন না নতুন সকাল আসে
ততদিন আমার চোখে এ দেশ জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড,
আমার দেশ এখন ভিসুভিয়াসের মতো জ্বলে উঠে সব লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে।
শ্যামলিমাহীন ধূসর মরুপ্রান্তর আমরা চাই নি
জল্লাদের ধ্বংসলীলা আমরা চাই নি
বিস্তীর্ণ শ্মশান আর কসাইখানার রক্তস্রোত আমরা চাইনি।
আমি জন্মেছিলাম একটা স্বাধীন দেশের উর্বর জমিতে,
যেখানে প্রত্যেক নাগরিক বাঁচার অধিকার পাবে।
0 Comments.