Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত - ১২

maro news
ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত - ১২       গতকাল ছিল বাইশে শ্রাবণ। প্রাণের ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। যেটুকু রবীন্দ্র ভাবনা অথবা চেতনার উন্মেষ আমার ঘটেছে অধিকাংশটাই আমার স্কুল নবনালন্দার জন‍্য আর আমার সাংস্কৃতিক উৎসাহের ও কেন্দ্রস্থল ওই স্কুল। কান টানলেই যেমন মাথা আসে তেমনি স্কুল বললেই আসে বন্ধু। গত পরশু গেছে বন্ধুত্ব দিবস। তাই একটু স্কুল বন্ধুত্ব ইত‍্যাদি নিয়ে বকবক করছি। আমাদের স্কুলের এ‍্যালুমনি অ‍্যাসোসিয়েসন থেকে ঠিক হল একটা অনুষ্ঠান হবে "আলিঙ্গন"। সেই আলিঙ্গনে যোগদান করার জন‍্য নোটিশ ঘোরাঘুরি করতে লাগল হোয়াটস অ‍্যাপ গ্রুপগুলোতে। আমি আবার সেই সময় কলকাতায় তাই নামটা দিয়েই দিলাম, শুনলাম কমিটি থেকে আমায় ফোন করে সব ডিটেইলস জানাবে।ফোন এল,ওমা এ তো দেখি আমাদের ইনা। ইনা আজ সেলিব্রিটি হলেও সেই স্কুলের ইনাই আছে, যার সাথে ছোটবেলা থেকে প্রচুর অনুষ্ঠান করেছি। এখন নৃত্য পরিবেশনা তো করব কিন্তু আলাদা হতে হবে, এবার ইনার এই ব‍্যাপারে প্রচুর উৎসাহ, আমরা গেলাম গড়িয়াহাট মার্কেটের কোনের এক দোকানে, সেখানে খুঁজে পাওয়া গেল অমূল রতন, মানে একখানা মিউজিক পিস যেখানে রবীন্দ্র সঙ্গীত এর সাথে ক্ল‍্যাসিকালের দুর্দান্ত মিক্স আছে। আমাদের দেশে যে কত এরম মানুষ ছড়িয়ে আছে যাদের মিউজিক সেন্স কী অসাধারন অথচ কেউ জানতেই পারল না। যাই হোক, একদিন ইনার বাড়ি একদিন আমার বাড়ি এইরকম করে রিহার্সাল চলল। যে অনুষ্ঠানে সবাই সেজেগুজে পার্টি মেকাপে গেছে সেখানে আমরা চললাম মাথায় গজরা পরান্দি পড়ে। স্কুলের জন‍্য প্রোগ্রাম এক আলাদাই মাদকতা। স্টেজ থেকে নামার পর বন্ধুদের হই হই এক অন‍্য দুনিয়ায় নিয়ে যায় বারবার। তাই জন‍্যই তো আবার পরের বছর যখন ইন্দ্রানী ফোন করে বলল যে, এবার অ‍্যালুমনি অ‍্যাসোসিয়েসনের রবীন্দ্র নজরুল সন্ধ্যায় আমাদের সাথে শ্রুতি নাটক টা কর। আমি ও এক পায়ে খাড়া। ইস্কুলের বন্ধুদের সাথে আবার অনুষ্ঠান ছাড়া যায় না কী? তার পর তো ইতিহাস... মহড়া চলছে, কিন্তু আমার পার্ট হলো একটি ঝগড়াটি বউয়ের, ঝগড়া টা তেমন জমছে না। কী করে জমবে?বাপের বাড়ি মানেই তো হা হা হি হি হাসি রাশি রাশি। চিরন্তন ব্যানার্জী এবং সুদীপেন্দ্র পাল বারবার বলতে লাগল তুই নাটকের দিন অন্তত ফোন করেই বরের সাথে একবার ঝগড়া করে নিস। কয়েক দিন বেচারা একটু নিশ্চিন্তে আছে তাই তাকে রেহাই দিলাম । এল সেই অনুষ্ঠানের দিন,জমিয়ে ঝগড়া করার জন্য যে টেনশন হয় সেই দিন জেনেছি। যাক তবে উতরে দিয়েছিলাম, মানে শুধু অভিনয় কিন্তু। রবীন্দ্র- নজরুল সন্ধ্যা বলে কথা,একটা নাচ না করে কী থাকা যায়। ঝটপট মহড়া দিয়ে একটা নাচও করে ফেললাম। ,বন্ধুদের ও ইসকুলতুতো ভাই বোন ও দাদা দিদিদের বাহবা পেয়ে বুঝলাম এখানে পাস করে গেছি বেশ ভালো ভাবে। নাম বলার সময় আর এক কান্ড...সবে ঝগড়া পর্ব চুকেছে।শান্তির দুটো নিঃশ্বাস ফেলেছি। সেইসময় পাশে দাড়িয়ে থাকা ছোট ভাইগুলোর কথা শুনতে শুনতে যেই আমার পালা এসেছে, ভুল করে স্কুল পাশের বছরটা মাত্র আট বছর কম বলে ফেলেছি। বদমাইশ গুলোর সে কী খ‍্যাক খ‍্যাক হাসি। শুভজিৎ ব্যানার্জী আজও হাসে এটা নিয়ে। এটাই হল বন্ধু্ত্ব দিবসে পাজি বদমাইস ছেলে আর মিষ্টি মেয়েগুলোর জন‍্য আমার গিফ্ট।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register