Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

আজকের লেখায় শতদ্রু ঋক সেন

maro news
আজকের লেখায় শতদ্রু ঋক সেন

কোভিডের ডায়েরি....

কোনো সিম্পটম না থাকলেও বাড়ি থেকে বেরোনো মানা। এছাড়া ক্লান্তি দোসর। একা ফ্ল্যাটে গৃহবন্দী অবস্হা। যদিও জিনিস পত্রের কোনো কমতি নেই। বাড়িতে ফোন করলে কাকা পাঠাবে, বন্ধু কাম দাদা সঞ্জুও সদা প্রস্তুত। আরো কজন বন্ধু বান্ধবী বলেই রেখেছে, যা লাগবে তা খালি একটা ফোনকল দূরে। নিজে রান্নার পাট আপাতত চুকিয়ে হোম ডেলিভারি আনাড়ি ভরসা। বলতে নেই রান্না বান্না বেশ ভালোই। এছাড়া বাকি সবের জন্য সুইগি, গ্রোফার্স ও রেডি। অতএব খাও, দাও ঘুমাও।

কিন্তু গোল বাধলো এক জায়গায়। করোনাকালে স্মোকিং কমালেও একেবারে ছাড়তে পারিনি। আর বাথরুম যেতে ওটা লাগেই। এক মাত্র স্পেন্সার থেকে অনলাইন পাওয়া যায় তো ঐ ভেবে সেখানে অর্ডার করেছিলাম। শনিবার সকালে উঠে দেখি মেসেজ এসেছে, কিছু প্রবলেমের জন্য অর্ডার দেবে রবিবার। এদিকে স্টক শেষ, যত কম খাই, দৈনিক তিনটে লাগেই। এক প্যাকেটের জন্য কাউকে ডাকতেও মন চাইলো না। নিজে এদিকে বাড়ির চৌকাঠ পেরোচ্ছি না। তো কি করা যায়?? মুস্কিল আসান হয়ে দেখা দিলো ফাটাফুটো তারকাটা। আনাড়ি থেকে যে ছেলেটি আমার খাবার আনে। কোন মহাপ্রভু ছেলেটির নাম ঐ বলে সেভ করেছে জানি না, কল করলেই ট্রু কলার ঐ নাম দেখায়। সে খাবার ডেলিভারি করার আগে, একবার করে রোজ কল করে, সেদিন কল করা মাত্র তাকে অনুরোধ করায় সে সানন্দে এনে দিলো। তারপর আরো দুদিন। বড়ো ভালো ছেলেটি, আমি টিপস দিতে চাইলেও নেয়নি।

দিন তিনেক আগে, সে ফোন করে জানালো যে তার ডিউটি এরিয়া চেঞ্জ হয়েছে, অন্য কেউ আসবে। একটু খারাপ লাগলো, কিন্তু কি আর করা। জানালার ধারে বসে আকাশ পাতাল ভাবছি, ফোন দেখি বাজছে। ফোন তুলতেই এক বামাকন্ঠ, স্যার আজ থেকে আমি খাবার ডেলিভারি করবো। আমার পার্সোনাল হোয়াটসঅ্যাপ নং দিচ্ছি, কাইন্ডলি, একটু লাইভ লোকেশন পাঠাবেন প্লিজ। ওরে বাবা এ আবার কে.. যাইহোক নং এলে সেভ করে লোকেশন পাঠালাম। ডিপিতে দেখি একটা হেভি কিউট ছবি, নিজেকে কেরম একটা রাজা গজা মনে হলো। নাঃ সকালে কোন খেয়ালে হরে কৃষ্ণ ১১৭৬ লিখেছিলাম, এ নিশ্চয়ই তার ফল। হাজার হলেও আমি সিঙ্গল, থুড়ি ডিভোর্সি। ভাবলাম আর কিছু না হোক, আলাপ তো করা যাবে। ওমা আধা ঘন্টা পরে যখন এলো, দেখি পুরো অন্য কেউ। ছবিতে দেখে মনে হচ্ছিল মারাদোনা, এ যে আদতে চারা পোনা। জিজ্ঞেস করেই ফেললাম ডিপি কার। বলে মেক আপ করে অনেক ফিল্টার লাগিয়ে তোলা। বুঝলাম, এই জন্যই অলি গলিতে পার্লার গজিয়ে উঠেছে।

তারপর থেকে কদিন তিনিই আমার খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। যখন আসে তখন প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে তাই এই একটু মজা করেই লিখলাম। আশাকরি কেউ কিছু মনে করবেন না।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register