Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পে কবিরুল (রঞ্জিত মল্লিক)

maro news
গল্পে কবিরুল (রঞ্জিত মল্লিক)

জানালা

"সারাদিন মন মরা হয়ে পড়ে থাকলে হবে ? শরীরের কি হাল হয়েছে দেখেছিস ?" "কিছু ভাল লাগেনা রে আজকাল। মনে হয় মরে যেতে পারলেই বাঁচি। আমার কপালে সুখ কোন দিনই ছিল না।আর থাকবেও না।" "খুব হয়েছে। নে, আর চোখের জল ফেলতে হবে না। বুঝি। সব বুঝি। জীবনের সব কিছু খুইয়ে তোর এককিত্বের জ্বালাটা অনুভব করি।"

........... .......... ............

আজ অফিস থেকেই ফিরেই বিদিশা বৈশালীর জন্যে স্যামসুংয়ের একটা দামী সেট এনে দিয়েছে। সারাদিন একা একা থাকে মেয়েটা। সময় কাটতে চায় না। মোবাইলটা হাতে পেলে অনেকটা ফ্রেশ অক্সিজেন পাবে। বিদিশা টেক স্যাভি। মোবাইলের সব কিছু শিখিয়ে দিয়েছে। দুজনে একটা ছোট রুম নিয়ে ভাড়া থাকে।

স্বামী এক্সিডেন্টে মারা যাবার পর একমাত্র মেয়ে তিতলিও ক্যানসারে চলে যায় না ফেরার দেশে। অপয়া মেয়ে বলে শ্বশুড়বাড়ি থেকে বৈশালীকে তাড়িয়ে দেয়। বাবার বাসাতেও দাদা বৌদিরা মুখ ফিরিয়ে নেয়। তখন থেকেই ওর একার লড়াই শুরু। সব শুনে বিদিশা ওকে নিজের কাছে রেখেছে।

দুসপ্তাহ কেটেছে। মুঠোফোনের দৌলতে বৈশালীর এফবিতে ইদানিং প্রচুর বন্ধু হয়েছে। অনেকের সাথে কথা, মেসেজ চালাচালিও হয়। ওর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু চৌদ্দ বছরের অনাথ তনিমা। হোমে থাকে।

দুজনের সম্পর্কটা এ কদিনেই মা মেয়ের জায়গাতে এসে ঠেকেছে। ওর মোলায়েম কথাগুলো বৈশালীর কানে সব সময় শিহরণ জাগায়।

"আমি তোমাকে 'মিষ্টি মা' বলে ডকব।" তনিমা ফটফট করে। "বেশ তো তাই হবে।"

স্বামী পরিত্যক্তা নিঃসন্তান বিদিশাও জানে "মা" ডাকে কত মধু।

তিন মাস পরে .....

ছোট্ট তনিমা এখন বৈশালী, বিদিশার সাথে এক বাসাতে থাকে। ওরা দুজনেই ওর পেরেন্টস্। হোমের সুপারের থেকে অনুমতি আগেই নেওয়া হয়েছে। বাকি ফর্মালিটিগুলো কদিন পরেই হবে।

তনিমা নিজেই যেন এখন একটা আস্ত প্রাণবন্ত মোবাইল। প্রতিদিন দুজনের জীবনে মোবাইলের মত নতুন নতুন জানালা খুলে দিচ্ছে।

তনিমা আসার পর থেকে দুই বন্ধুর জীবনে একটা আলাদা ছন্দ এসেছে। হাসি, গল্পে ছোট্ট ভাড়াবাড়িটা খুব অল্প সময়ে ঝলমল করে উঠছে।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register