Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১৩)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব - ১৩)

স্ট্যাটাস হইতে সাবধান

একদিকে হাজব্যান্ডের এই ক্যালানে মার্কা বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা, তার ওপরে বরুণের ক্ষেপে যাওয়ার ভাবনা ফুলটুসিকে অস্থির করে তুললো। --- স্যারকে কি তাহলে হসপিটালাইজ করতে হবে? সুমন অত্যন্ত নিরীহভাবে কথাটা জিজ্ঞাসা করলো। হসপিটালাইজ? কাকে? কেন? আপনার কি সেরকমটা মনে হচ্ছে ভাই? না, মানে আপনি যদি মনে করেন, তাহলে... আমি কী বলি বলুন তো! আসলে আমি তো কোনো হসপিটাল চিনিই না, মানে যেতে হয় নি কোনোদিনও। -- না, মানে আর কি, আমার তো তাহলে সবকিছু ব্যবস্থা করতে হবে। -- বলছিলাম কি ভাই, মানে আপনার তো নিশ্চয়ই এসব বিষয়ে কিছু হলেও জ্ঞান আছে, ওকে কি এখুনিই হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে? মানে যাওয়া উচিৎ? --- দেখুন বৌদি, হাজব্যান্ড আপনার, সো ডিসিশনটাও তো আপনারই নেওয়া উচিত। আপনি ডিসিশন নিলে আমি সাথে সাথে নন্দন চত্বরের বাইরে রাখহরিদার চায়ের দোকানে ফোন করবো। সেখানে যে সব কবি বন্ধুরা আছে তাদের সাথে কথা বলে পিজি হাসপাতালে ভর্তি... --- কবি বন্ধু! নন্দন চত্বরে! আর দাঁড়ান ভাই, আমাকে একটু বুঝে নিতে দিন প্লিজ, আপনি মানে তুমি বুঝি কবি! কবিতা লেখো? -- একদম। আমি আজ তিন বছর হলো কবিতা লিখছি, প্রচুর স্মারক আমার ঘর ভরে আছে, কেনকি, আমায় চেনে না, এরকম কোনো কবি এই পশ্চিমবঙ্গে নেই। ওদের মুখে কবিতার কথা শুনে মিষ্টার তলাপাত্রের পুরোমাত্রায় চৈতন্য ফিরে এসেছে। --- কাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে? আমার কিস্যু হয় নি, ইলেকট্রিকের সস্মান্য শক্ লেগেছিলো। আপনি আমার বিপদের কথা শুনে এসেছেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনি এখন আসতে পারেন। -- না, না, সে কী, চলে যাবেন কেন? একটু চা খেয়ে যান ভাই, নইলে গৃহস্থের অকল্যাণ হবে যে, --- অকল্যাণ হলে হোক, সে আমার সংসারে হবে, অন্য কারো সংসারে নয়, বুঝেছো? আমি চা চাইলে ব্যস্ততা থাকে, আর অজানা, অচেনা মানুষকে -- একটু চা খেয়ে যান -- -- ভেঙাবে না কিন্তু বলে দিলাম। বেশ করেছি চা করিনি, আবার এখন, এমুহূর্তে চা করবো তো বেশ করবো। উহ্,যেন দাসীবাঁদী রেখেছেন। বলে সুমনের হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে বসার ঘরের সোফার ওপর বসিয়ে ফুলটুসি চিৎকার করে বলে উঠলো, আমি আজই বাপের বাড়ি চলে যাবো। সারাদিন ধরে তো মিষ্টিমুখে একটা কথাও নেই, তারওপর বাইরের লোকের সামনেও যা নয় তাই বলে অপমান করবে? বলাবাহুল্য, কথাগুলো বলার সময় ফুলটুসির অজান্তে কাঁধ থেকে আঁচলটা সেন্টার টেবিলের ওপর খসে পড়লো। সুমন মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে আছে ফুলটুসির দিকে, ওর মুখোমুখি দেওয়ালে ফুলটুসির একটা ঢাউস মার্কা ছবি টাঙানো, ফুলটুসি যখন চায়ের ট্রে নিয়ে ঘরে ঢুকছে, সুমন তখন নিজের মনে জীবনানন্দ আওড়াচ্ছে -- -- চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তির কারুকার্য সমুদ্র জোড়া ঢেউ দেখে যে নাবিক হারায়েছে দিশা...

ক্রমশ

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register