Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ১১৮)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ১১৮)

রেকারিং ডেসিমাল

ডাক্তারদের সবার কাছে মাপ চেয়ে নিয়ে, তাঁদের আশ্বস্ত করে ছোট ডাক্তার। হ্যাঁ, ভুল করে ফেলেছি। ঠিক কথা। এতবড় ভুল স্টেটমেন্ট কোন ডাক্তারের উচ্চারণ করা বেআইনি হয়। খুবই অন্যায় হয়ে গেল। কিন্তু, তারজন্য কাউকে অপদস্ত হতে হবে না। বাড়ির লোক কেউ অভিযোগ নিয়ে যুদ্ধ করতে আসবেন না হাসপাতালে। খুব আস্তে ঘরটার দরজা বন্ধ করে দিয়ে লিফটে নীচে নেমে আসে বত্রিশ বছর বয়েসী এক নতুন সংসারী নারী। নতুন মা। নতুন প্র‍্যাকটিস শুরু করা ডাক্তার। নতুন ঘরকন্না। সবেই দু নম্বর ফ্ল্যাটে এসে সাজানো শুরু করেছে। বাচ্চাদের নতুন ইস্কুলে যাওয়া, কার পুল। ভাইফোঁটার শরৎ রঙ মাখা সকালটা কেমন এলোমেলো লাগে মেয়ের। হাসপাতালের এক তলায় ঢুকেই মস্ত হলঘর। সারি সারি চেয়ার সেখানে। মানুষ এসে বসবে বলে। এক দিকের দেয়ালে সারি সারি খোপ। তাতে টেলিফোন রাখা। পয়সা দিয়ে কল করা যায়। একটা চেয়ারে চুপ করে বসে থাকে মেয়েটা। মাথার মধ্যে চিন্তারা অবান্তর জট পাকায়। কিছুই গুছিয়ে ভাবতে পারে না মস্তিষ্ক। কেমন শীত শীত করে ভেতরে। ঠাণ্ডা লাগে হাত পায়ের তলা। এখুনি তিন তলার বেডের পাশে গেলেই এক গাল হেসে রিপোর্ট জানতে চাইবেন রোগিণী। তিনি নিশ্চিন্ত হয়ে আছেন আজ বাড়ি যাবেন বলে। কি বলবে সেই মানুষটাকে? এত অসহায় লাগে ভেতরটা। ডাক্তার হিসেবে অনেক মৃত্যু দেখা হয়েছে। হাতের ওপরে জন্মেওছে অনেক মানুষ। কিন্তু নিজের ঘরের, কাছের, অত্যন্ত সজীব, মাত্রই পঞ্চাশ পেরোনো একটা মানুষকে এমন ভয়াবহ রোগের নাম শোনানো যায় কী করে! কর্কট রোগ তার বীভৎস দাঁড়া বের করে অট্টহাসি হেসে এসে দাঁড়াল সামনে। বলল, ভালো করে দেখেনে। ভয় পেতে শেখ। ওস্তাদি পকেটে পুরে রাখ। আমি সারা পৃথিবীতে আতঙ্কের জাল ছড়াই। কোনো ঘর বাদ যাবে না। আমি দাঁড়া নেড়ে আসবোই।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register