Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৬৪)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৬৪)

পুপুর ডায়েরি

কিছু কিছু দিনে, কিছু অনুভূতি কিছু বোধ, বেশী জোরালো হয়ে ওঠে। এই হেমন্তের ঘুরে যাওয়া রোদ, হাওয়া, শিরশিরে ভেতর, পুজো শেষ হবার ম্লান বিষন্নতা, সব কিছু মিলিয়ে বাবার জন্মদিন পনের নভেম্বর এসে যায়। এই বছর ঘুম চোখে ভোর বেলাতে হাতের আঙুলের ডগায় একটা স্মৃতি ফুটে উঠলো। সাদা প্লাস্টিকের ফিতে দিয়ে টানাপোড়েনে ক্রিসক্রস করা একটা চেয়ারের পিঠ। কাঠের হাতল দেয়া চেয়ার। তার ছোঁয়াটা মনে পড়ে গেল। মানুষের মন কী আশ্চর্য একটা অরগ্যান!! এই সঙ্গে মন মনে পড়িয়ে দেয়, খুব ঠাণ্ডা একটা মানুষের সিল্কের মত পায়ের চামড়াটা ছুঁয়ে প্রণাম করার স্মৃতি। খুব জীবন্ত ছোঁয়াটা। যেন এই এখুনি ছুঁলাম। শীর্ণ মানুষটি। ছোট্ট বড়ির মত খোঁপা বাঁধা চুলগুলি তেলতেলে করে টেনে নিয়ে। গোল চশমার রিম। হাসিমুখ। বাবু ওরফে নিবেদন ওরফে শ্রীমান নির্মাল্য চক্রবর্তী মহাশয়ের ঠাকুমা। তিনি ডাকেন তাতা, আমি ঠাকুমাই বলি। সেই মানুষটির গলার আনন্দ, “দীপালি আইসো নাকি! ”,সাথে আরেকটা রিনরিনে গলার উচ্ছ্বাস, আমার ছোট্টখাট্টো রমা কাকিমার, “ ও বলাইদা, পুপু… ”, বিশুদার কালো ফ্রেমের পিছনে চকচকে চোখের মুখখানা, আর খুব খুব রোগা, সাদা শিঁটে হাত পা, বাংলা করে পরা সাদা শাড়ির আঁচল জড়ানো বিশুদার মা, তাঁর গলা, সব কলকলগুলো একসাথে এসে ছুঁয়ে যাচ্ছিলো আমার আধোঘুমে থাকা মনকে। সেই যে কাঠের দরজায় লোহার কড়া ঠুকঠুক করে বাবা ভারি গলায় বলেন, “ বাবুল, আছেন নাকি! ” পুপুর ছোটো বেলার আদ্ধেকটাই জুড়ে এইসব ছবি আর আওয়াজরা।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register