Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৫৮)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৫৮)

পুপুর ডায়েরি

আমার মামার বাড়ি যাদবপুরে। সেন্ট্রাল পার্ক, কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাকটরি হল বাস স্টপেজ। বাস থেকে নেমে রিকসায় চেপে বা হেঁটে গেলে গ্লাস ফ্যাকটরির ভেতরটা দেখা যায়। অনেক কাঁচ পড়ে থাকে চার পাশে। ভেতরের ফারনেসে বড়ো আগুন জ্বলে। একটা টিপিক্যাল ঝাঁঝালো গন্ধ… সেইখান থেকেই মনে হয়, একটা অন্য দেশে এসেছি। এটা, টালিগঞ্জ, তার ব্যস্ত রাস্তা, ট্রামলাইনে অজস্র ট্রামের চাকা আর টং টং করে ঘন্টার আওয়াজ, হাজার হাজার বাস, রেলব্রিজের ওপরে ট্রেনের শব্দ, ওয়ান বাই সি চারু অ্যাভিনিউ-র সঙ্গে একই দেশের জায়গা হতেই পারে না। এখানে সবই অন্যরকম। তবে, ভালো, খুব ভালো। এটা শহর নয়। এটা একটা গ্রাম। রূপকথার গল্পের মতো। কতো গাছ। কতো রকমারি পাতা। কতো রকম ফুল। রোদটাও যেন অন্যরকম, রঙিন চকচকে। এখানে চার দেয়ালের ছোট্ট গণ্ডী নেই। চার দিক খোলা। এ বাড়ির উঠোন আর ও বাড়ির মাটির উঠোন একসঙ্গে মেশা। দেয়ালের জায়গায় কখনো বাখারির ছোটো বেড়া কোমর সমান। কখনো গাছের, ঝোপেদের সীমানা। সবাই হুটহাট সবার ঘরে ঢুকে গল্প করছে। জানতাম না, শহুরে দক্ষিণ কলকাতা একে বাঙাল কলোনি বলে। মামাবাড়ি পৌঁছোতে যাবার আগে রাস্তায় , কালি বাড়ীতে নমো করতে করতেই এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে ডেকে কথা শুরু হয়ে যেত মায়ের সঙ্গে । … দীপু নাকি ? বা , মেজদি নাকি ? কেমন আসো ? পুপু কোন ক্লাস ? কয় দিন থাকবা ? ইত্যাদি … সবাই যেন একটা বিশাল পরিবারের মধ্যে আছে । চেনা গাছ , চেনা মানুষ … আর মায়ের কী সম্মান সবার কাছে ! মাকে তখন দূরের মনে হত । যেন একটা সেলিব্রিটি , অনেক ওপর তলার মানুষ । ঠাকুরের মতো , সিংহাসনের ওপর।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register