Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৫২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৫২)

পুপুর ডায়েরি 

আজ আটত্রিশ বছর হল সেই দিনটির যেদিন সাড়ে সতেরো বছরের অপোগণ্ড আমাকে এক বিদগ্ধ গভীর মানুষ আশ্রয় দিয়েছিলেন। অফিশিয়ালি ঠিকানা দিয়েছিলেন, বেলুড়। তিনি তখন শ্রী রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের প্রেসিডেন্ট, গম্ভীরানন্দ মহারাজ। তখনও হায়ার সেকেণ্ডারি পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোয়নি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ঢিপঢিপ করা অন্তরাত্মা চুপটি করে বসে আছে একলা ঘরে। উফ, এই সময়টায় ছোটোদের কত ভয়, কত চাপ, কত যে কষ্ট!! বড়োরা একটু যদি নিজেদের সেই দিন গুলো মনে রাখেন, আর একটু ভালো বেসে হাত রাখেন ওদের কাঁধে, বড্ড ভালো হয়। অনেক সুন্দর, থিতু হয়ে ওঠে জীবন। যে পেশায় যাই হই, সেই কাজ দিয়ে ত আদরের মাপ হবে না, না? আর সব রকম কাজ করার মানুষেরই দরকার ত সমাজে। যাকে বলে, " বিগার পিকচার ", সে ত যিনি শিল্পী, কোথায় বসে বেণু বাজান, তিনি জানেন। সে ছবি ফুটে ওঠে সময় নামক তুলিতে জীবনের ক্যানভাসে। তার জন্য ধৈর্য্য ধরে থাকার কঠিন চেষ্টাটুকুতেই চুল রুপোলি হয়ে যায়।

সেই যে, আশ্চর্য দোসরা জুলাই, উনিশশো ছিয়াশি, সেদিন থেকে পদে পদে টের পেলাম, অবোধ জনে কোল দেবার জন্যে, কে দু হাত বাড়িয়ে থাকেন, কেবলই। আমি শুধু সেই আলোওয়ালার কাছ থেকে মোম বাতি জ্বালিয়ে এর ওর হাতে ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করি।

আর প্রনাম জানাই সেই শক্তি স্বরূপিনী মাতৃ শক্তি কে। যিনি সব সময় বললেন, আমি আছি তো, ভয় কী? উদ্ভাসিত হও নতুন খুকিরা মায়ের। আমি ত মায়ের মত সংস্কৃত আদ্য মধ্য পাস করিনি, তবু বুকের মধ্যে বুঝতে পারি, ত্বমেব বন্ধুশ্চ সখা ত্বমেব কথাগুলির মানে। বুঝি, অমৃতের পুত্র কন্যারা তাকেই জানতে চলেছে। হে আমার আদিত্যবর্ণ মহান বেদে অবর্ণনীয় সখা , তুমি মা হয়ে আমায় কোলে নিয়েছ,প্রিয় হয়ে পাশে বসেছ, কচি মুখ হয়ে গলা জড়িয়ে রেখেছ... এখন বসে আছি নিশ্চিন্ত হয়ে, ঠাকুর দেখতে যাবার বেলার মতই। পুপুর বাবা হয়ে এসে দুহাত বাড়ালে, কাঁধে মাথা রাখা, হাঁটার ঝাঁকুনির ছন্দে অভ্যস্ত আমি,এক গাল হেসে, কোলে উঠে, বাড়ি যাব।

 
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register