Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে নীলম সামন্ত (পর্ব - ১৯)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে নীলম সামন্ত (পর্ব - ১৯)

মহাভারতের মহা-নির্মাণ (বর্বরিক)

ঘটোৎকচ লেখার সময় থেকেই আমার মাথার মধ্যে যে চরিত্রটি ঘুরছিল সেটি বার্বরিক। মধ্য পান্ডব তথা ভীমের পৌত্র ছিলেন এই বালক। কিভাবে? ভীমপুত্র ঘটোৎকচ ও কামকালিকার পুত্র হলেন বর্বরিক। ছোট থেকে তার মায়ের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন তাঁকে তাঁর মা যুদ্ধ শিক্ষা দিয়েছেন, সাথে এও শিখিয়েছিলেন সময় দুর্বল পক্ষের পাশে দাঁড়াতে। এই শিক্ষাই হয়তো বর্বরিককে মহাভারতের একজন বিখ্যাত এবং অন্যতম মুখ হতে দিল না। কেন তা নিয়েই কিছুটা আলোচনা করব।

মহাভারতে তখন মহাসমারহে আয়োজন চলছে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের। দুই পক্ষ পাণ্ডব এবং কৌরবদের দলে নানান রাজ্যের রাজারা নাম লিখেছেন। দুই পক্ষের বীর যোদ্ধা মহারথী ধনুর্ধর কর্ণ এবং অর্জুন মুখোমুখি লড়বেন। অর্জুন কে শক্তিশালী করতে রয়েছেন অর্জুনের সারথী শ্রীকৃষ্ণ। এই মহাযুদ্ধে তিনি কেবল সারথীই। রাজ্যের রাজা হয়েও সুদর্শন চক্র থাকা সত্ত্বেও তিনি সশস্ত্র যোদ্ধা নন। কেন? কোন কারনে তিনি যদি সুদর্শন চক্র প্রয়োগ করেন, তবে দুই পক্ষই নিমিষে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে কেউই বেঁচে থাকবেনা, আর ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যও সফল হবে না। তাই তিনি নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সশস্ত্র যুদ্ধ করবেন না। এ সিদ্ধান্ত তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নিন কিন্তু ঘটোৎকচ পুত্র বার্বরিক বীর যোদ্ধা হয়েও এই যুদ্ধে জায়গা করে নিতে পারলেন না৷ পারলে হয়তো কুরুক্ষেত্রের চিত্রটি অন্যরকম হত৷

ঘটোৎকচ ও কাম কালিকার বিবাহ হয়েছিল শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে। এবং বিবাহ সম্পন্নের পর শ্রীকৃষ্ণ ঘটোৎকচের মা হিড়িম্বাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এদের যে সন্তান আসবে তাকে যেন ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করা হয়। বিয়ের কিছুদিন পরেই জন্মগ্রহণ করেন বর্বরিক। শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশ মতোই তার পিতামহী তাকে শিশু বয়স থেকেই ধর্ম ও আধ্যাত্মিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে থাকলেন। কিন্তু বড় হওয়ার পর বর্বরিকের মনে হতে থাকলো মোক্ষ লাভের সহজ উপায় কি। হিড়িম্বা তখন তাকে বললেন মুখোলাপ করতে হলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হাতে বীরগতি পেতে হবে। বারবারিক তখন ভাবলেন শ্রীকৃষ্ণকে গিয়ে বলবেন তাকে মেরে ফেলতে। এই শুনে সেলিম বা বললেন শ্রীকৃষ্ণ তো কখনো কাউকে অন্যায় ভাবে মৃত্যুদণ্ড দেন না, তাই তার হাতে বীরগতি পেতে হলে তার সাথে যুদ্ধ করতে হবে, এবং সেই যুদ্ধের জন্য নিজেকে বড় যোদ্ধা হিসেবে তৈরি করতে হবে । এবং রণক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধও করতে হবে।

পিতামহের কথা শুনে বর্বরিক তখন মা দুর্গার কঠোর তপস্যায় ব্রতি হলেন। মা দুর্গা তার তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের জ্ঞান দিলেন। কিন্তু বর্বরিকের এটুকুই চাহিদা ছিল না তাই সে সন্তুষ্ট হয়নি এবং মা দুর্গা কে বলেছিলেন তিনি শক্তিশালী সমকক্ষ যোদ্ধা হয়ে শ্রীকৃষ্ণের মুখোমুখি যুদ্ধ করতে চান। এই শুনে মা দুর্গা বললেন যে জায়গায় বসে তিনি মা দুর্গার উপাসনা করেছেন এতদিন, সেখানেই সিদ্ধিমাতার উপাসনা করতে হবে। তিনি সন্তুষ্ট হলে তাকে তার অভীষ্ট বর দেবেন।

চলবে...  
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register