Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গুচ্ছকবিতায় হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়

maro news
গুচ্ছকবিতায় হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়

নৈবেদ্য

নিজের ছায়ার সঙ্গে খেলতে খেলতে আজ এতদূর,আমি জানতাম না আকাশ মানে এখনো লাবনী ঘোষাল মানে কুর্চি ফুল, নৈবেদ্য মূর্ছনা সে এলে সুর অগোছালো আট বাই দশ ঘরখানি অপার্থিব মননে চিন্তনে অত‍্যাগসহন...

কবিকৃত

ঘুমোতে গেলেই স্বপ্নে কবির দল সুনীল শক্তি বিনয় মজুমদার পঞ্চাশ ষাট সত্তর আশি চ ওড়া ব‍্যাটে হাকাচ্ছে ছয় চার কবিদের ও আছে কলমের মারপ‍্যাচ রাধাকে পেয়েছে কদম গাছের তলা লুটে পুটে খাবে যমুনার জল শাওয়ারের ঝারি কানু জানবে না কিছু, সাবান নিজেই খুলবে শরীর পাতা গুলি তার সংশ্লেষ নিয়ে ছুটন্ত ঘোড়া ,শুধু ঘুমোতে গেলেই ফেলে আসা দিন ফেলে আসা স্মৃতি বিভঙ্গময় ,নেভার সময় জ্বলে ওঠা ছাড়া কিছু নয়....

পদবী থেকে পরিচয়

এখনো পর্যন্ত যা যা অত‍্যাচার অবিচার তুমি করেছো হ‍্যা আমি বলব সেটাও জানাব ফেসবুক টুইটারে ইনস্টাগ্রামে আমি যা পারব না অন্য কেউ অন্য কোনোখানে ঠিক ফাঁস করবে শব্দ নেবে পিছু পিছু এক থেকে বহু মৃত্যুর ও বলার থাকে কিছু দেখা যাক কে তবে দোষী সাব্যস্ত হয় ফুলের বদলে আগুন নাকি আগুনের বদলে ফুল অক্ষর যদি বিলাসিতা হয় এখন সময় অল্প ভাববার মতো আর কি আছে কিছু। ? মীরজাফরের দেশ মীরকাশিমের দেশ সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ এখনো পাখি উড়ে যায় গাছ থেকে গাছে ফেলে যায় নরম তুলতুলে পালক,বালক বালিকার অঙ্কুরোদগম হয় পথিক পথ হারায় নক্ষত্র আলোয় তারপর দুমিনিট নীরবতা পালন, শোকপ্রস্তাব তারপর নিদ্রাহীন হেঁটে যাওয়া পদবী যেখানে শ্রেষ্ঠ পরিচয়

মিছিল

দুটো রুটি বেশি পাবো বলে বন্ধুকে খুন করেছি অনায়াসে, দিন শেষে দানা চায় এই অন্ধকার গ্রামে কার ও মাথা উপড়ে নেয় কারো দুলাভাই বদলে যায় আমি দেখেও দেখিনা মিছিলে হাটিনা ,সভা সমিতি চলতে থাকে রাত্রির বাতাসে লিখে রাখি শুধুমাত্র সোজাসাপ্টা খিদে,যে স্বস্তির জন্যে অপেক্ষা এক মুঠো ভাতফুল একসাথে বসে খায় শকুন ও চিল জানি এতদূর পৌঁছনোর প্রশ্ন ই নেই তোমার মিছিল..

পোস্টকার্ড সাইজের হাওয়া

আমাকে নিয়ে চলো সেইখানে যেখানে পোস্টকার্ড সাইজের হাওয়া বাতাসকে প্রশ্ন করি যদি এবার কি হবে তবে কাল যারা ডাইনে আজ তারা বামে,মাথা কেটে নিয়ে গেছে পড়ে আছে ধড় প্রথমে আজান শুরু তারপর সামগান স্বর আমি তো ভুলিনি কিছুই ইতিহাস ভূগোল তার হে সময় হে মহাজ্ঞানী আমার কম্পাস যত ভাবি ছোট হয়ে আসে পরিধি ,জয়োল্লাস জানিনা কি জবাব দেবো তার...

মঞ্চ থেকে মঞ্চে উঠে গেছি

কারো কারো তীরে এসে তরী ডুবে যায় কারো কাছে প্রেম মানে সুচিত্রা সেন জাদুঘর জুড়ে অসংখ্য ঘড়ি সঞ্জীবনী দূরে শ্মশানভূমি দুদিকে জ্বলছে এখন বাতাস ও দু:খকে লুকোচুরি খেলতে নিয়ে গেছে, এই যে আ্যনড্রয়েড ফোন গাড়ি বাংলা ঝকমকে নারী এত যে আলোর ঝলকানি, ফ্লাই ওভারের উপরের রান ওয়ে দিয়ে উড়ছে রাজহাঁস যেভাবে দেখছে চোখ ঝাপসা পথবাতি জানলায় উকি দেয় মধ‍্য‍রাত তারপর শুধুই দৌড় দৌড়... দৌড়াচ্ছি নদীর রেলিং ধরে নবান্নের দিকে আকাদেমীর দিকে নন্দন টু এর দিকে, বড়োগাছে নাড়া বাধার দিকে, তারপর আর জানা নেই  ...মঞ্চ থেকে মঞ্চ উঠে গেছি ধর্মে না জিরাফে না অধর্মের বক হয়ে রাত্রির মরুতে নীল মরীচিকায়....

মোমের সমিধ

প্রকৃত মানুষ মোহনা ছেড়ে একদিন দিকশূন‍্যপারে চলে যায় তখন রৌদ্রে উত্তাপে চাওয়া বা না চাওয়ার কিছু নেই, সত্যিই কি কিছু নেই? অন্ধকারে উচুঁ নীচু অন্ধকারে মাঝে মাঝে ঢুকে পড়ে আলান নামানো গাভী যেখানে ভাঙা বাড়ির পাশটিতে গন্ধরাজ ফুটেছে আসলে এই হল নীহারিকা যা পৃথিবীর মাঝখান থেকে দেখতে হয় শীতের বিকেলে যে আকাঙ্খা জেগে থাকে নীলকন্ঠ পাখির ডানায় তার কোনো উত্তর নেই বরং প্রশ্ন ধেয়ে আসে অক্ষরে অক্ষরে লেগে থাকে আর্তনাদ এইসব উপহার উপাচার সমারোহ শেষে একদিন তাই ফুলডুংরি পাহাড়ের কাছে আশ্রয় নিতে হয় যেখানে অদ্ভুত গোধূলি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং ঈশ্বর সন্ধ্যা নামছে বড়ো নরম, নিবিড় আরণ্যক ছায়ায় হাতে তার ছাই আর মোম...

অদ্ভুত গোধূলি

বসে আছি দামোদরের চরে,মালিয়াড়ার দিকে সন্ধ্যা নামছে অচেনা লাগছে কি জলাভূমি ? শ্মশান থেকে উঠে এলেন একজন লম্বা চুল দাড়ি ঝুল পাঞ্জাবি চোখে তার অদ্ভুত গোধূলি বলি,কে আপনি  ? উত্তর নেই... কিছুক্ষণের বিরতি অপুকে দেখেছো  ?   অপুকে অমলকান্তিকে  ?  ঐ যে, যে  রোদ্দুর হতে চেয়েছিলো... আচ্ছা অমিত  কিংবা লাবণ্যকে... আমাকে নিশ্চুপ দেখে তিনি নেমে গেলেন জলে পার হয়ে যাচ্ছেন কিছু কি বলছেন শুধু বিচ্ছেদের, বিজয়ার গান বাজছে  কোথাও বিড় বিড় ধ্বনি কানে বাজছে জানি একদিন ভুলে যাবে রঞ্জন নন্দিনীকেও ,দুর্বল  বাল্মীকিকেও স্বপ্ন দেখতে তোমরা  ভুলে যাবে একদিন...

ত ওবা   ত ওবা

একটি রাতের খেলা বড়ো জোর,আমি হাত রেখেছি অজানায় তুমুল  পরিধি জুড়ে নূহের  জাহাজ তখনও বজ্রাসন  ,কূটকৌশল দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে রাজনৈতিক মিথ্যাচার... আ্যন্টিসেপটিক থেকে কনট্রাসেপ্টিভ রোদে পুড়ে ঘেমে নেয়ে দেখতে পাচ্ছি একটি বৃষ্টিমুখ উবু হয়ে আছে ভাতের হাড়ির ঢাকনার মতো আর মৌমাছিরা উড়ে উড়ে পথ করে দিচ্ছে একক শক্তি বলে কিছু নেই সবাই ভাগাভাগি, আমি বলে কিছু হয় না আমরাই আসল,অথচ সূচীপত্রজুড়ে লেখা থাকে টাকা মাটি মাটি টাকা তুমি হে সংগোপন  তুমি ই ক্রমবিকাশের ছবি উন্নয়ন নাম ধরে সীমাহীন কলরবে অধিষ্ঠান তোমার। হে পূতজন অকপটে নিসর্গপ্রতিভা শান্তিনিকেতনের পথে বাসিফুল কখন যে। পুষ্প হয়ে যায় তোমারি মহিমায়... # আমাদের অর্ধেক জীবন, সাধ সংকলন হাসানহোসেনের নিরবধি নিয়মকাহিনী একটি রাতের খেলা বড়জোর  তারপর  সব ঠিক হ‍্যায় ত ওবা  ত ওবা। ...

কাঠটগরের উপকথা

ঐ দূরে যে ফুলগাছটি দেখেছো ,ওটি হল কাঠটগর ,আমার প্রাকযৌবনে ভালোবাসার সঙ্গী,হারাকিরি...প্রেম ভালোবাসা মানে যাদের কাছে এখনো রক্ত শূন্য করা হাহাকার... যারা এতকাল দূরে দূরে ছিল যারা এতকাল কঠিন গ্রানাইট পাথর বিছানো সম্পর্কের কফিন আসছি বলে প্রেমিকা পালিয়ে যায় নাগপুর তারাও ক্ষুধার্ত শীতের মতো নবমীর  জ‍্যোৎস্না গোপন অশ্রুর ফাঁস তাদের সবার ধারাভাষ্য নিয়ে ঐ কাঠটগর দাঁড়িয়ে আছে আন্দামানের সেই পিপুল গাছটির মতোই... আর এদিকে কামোচ্ছাস,শীৎকার এক অবিস্মরণীয় যৌবনের গান গা ইতে গাইতে যেসব প্রেমিকারা কবি হয়ে গিয়েছিল একদিন, ঐ কাঠটগরের ঘ্রাণ তাদের অনেক কিছু ই শিখিয়েছিল সমকোণী ত্রিভুজ থেকে সমকামিতা ট্রাপিজিয়ামের দুষ্টুমি বিপত্তারিণীর  ব্রত সঙ্গী হীন জানলা দিয়ে অন্তর্বাস বেবিফুড... ডোকরাতে লাগানো সোনা হতাশায় যুক্তিবোধ হারিয়ে গেলে ও আমি কখনো ঐ কাঠটগরের সহনশীলতা ভুলিনা ,ও: কাঠটগর তুমি আমার শির:পীড়া তুমি আমার স্বপন কুমার স্বপ্না কুমারী তুমি আমার ফেরিঘাটে জেগে থাকা মাধুরী দীক্ষিত....
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register