Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গুচ্ছ কবিতায় সুশীল নাগ

maro news
গুচ্ছ কবিতায় সুশীল নাগ

জলঙ্গী

নদীর ছলচ্ছল শব্দে জলকে ছোঁবে বলে লজ্জাবতী ঘাটে তুমি জনান্তিকে পা বাড়ালে ঢেউ ভাঙে জলঙ্গীর জলে
এখন তোমাকে ভেজাবে এই জলে কিংবদন্তী কাহিনীর মতো মারীচ মায়ায় ঘাটের কিনারা ছুঁয়ে কলমিদামের গন্ধ আর জলের ছলচ্ছল শব্দ কিছু ভেশে আসে স্বপ্নলীন স্মৃতির বাতাসে
এত অন্ধকারে কি ছবি আঁকা যায়--?
এইতো তোমার রং তুলি ক্যানভাস তুমি শিল্পী, মানুষ আঁকতে চেয়েছিলে, মানুষ--- অথচ আঁকতে পারনি সামান্য মানুষ। তোমার বসবার ঘর আছে। রং তুলি ক্যানভাস সব আছে, শুধু--- ও ঘরে, এমন কোনো জানালা জাফরি নেই আলো আসতে পারে। এ ভাবে অন্ধকারে কি কোনও ছবি আঁকা যায়!

সাক্ষাৎকার

সকালে পিকাসো, বিকেলে ভ্যানগগ কখনও-সখনো লিয়োনার্দো সারাসাত আড্ডা জমায় ঘরের দাওয়ায়...... জীবনান্দের সাথে বনলতা সেন আসে— নীরাও আসে সুনীলের সাথে চপ-চা মুড়ির সাথে আড্ডা জমে। সেদিনও তুমি বললে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গানে তুমি অসম্ভব নড়ে উঠেছিলে; আবার কোনো কোনো দিন মালগাড়ির একটানা ঝম্‌ ঝম্‌ শব্দে হিরোশিমা নাগাসাকি বেজে ওঠে মধ্যরাতে। যারা নির্বোধ তারা শুধু জেগে থাকে সচেতন মানুষের প্রতিটি ঘুমের পাশে

পেরোস্ত্রৈকা

পিথাগোরাসের উপপাদ্য সবটুকু আকার চেনায় না, অনেকটাই নিরাকার। এক্সট্রার সমীকরণ অত সহজ কিছু না তবু তাকে বাদ দেবে কীভাবে? একটা শরীর গন্ধ বিকেলের হাওয়ায় গোর্কি সদনের লনে দাপিয়ে বেড়ায়। অথচ এত অন্ধকারে কেউ কিন্তু কারও মুখ পর্যন্ত চিনতে পারে না চৌকাঠের ওপারে কিম্বা খিড়কিতেও কেউ নেই আলেয়া না ধূমকেতু কী যেন বলে অতর্কিতে ঝাঁপ দেয় রাতের নিস্তব্ধ প্রহরে নিরীহ পানীয়ের মতো নয় – এ জীবন রাগী তরলের ঝাঁজ উঠে আসছে পাশের রেস্তোরাঁ থেকে ওখানে যুবকদের যাতায়াত ইদানিং বেশ বেড়েছে
গড়ের মাঠে একা দাঁড়িয়ে রয়েছেন লেনিন

কবি তুমি কোনদিকে যাবে

এক খণ্ড তির্যক রোদ জানালা টপকে ঘরে এলো। সোজা হয়ে দাঁড়ালো সে এক কোণে পড়ে থাকা তেপায়া টেবিলে।
রোদ তো নয় কারও দীর্ঘ ছায়া ঠোঁট নেড়ে কথা বলতে চায় কী কথা জানতে গেলে পর – অভ্যস্ত জ্ঞানের আঁধারে টান পড়ে।
এখন সকাল গড়িয়ে যাচ্ছে দুপুরের দিকে – বকুল গাছের ডালে একটা পাখি এসে বসে ফের উড়ে যায় অনন্ত আকাশে...
পর্দার ওপাশে রোদ; এ পাশে ছায়ার ভিতর থেকে মাথা তোলে অনন্য এক অদেখা প্রবণতা নদীতে দু-একটি নৌকো ভেসে যায় বর্গাকার মাঠটিকে কৌণিক ভেদ করে মন্থর গজ; বাঁকুড়ার ঘোড়ার আড়াই লাফের ফাঁকে জেগে ওঠে দশদিক
কবি তুমি কোন দিকে যাবে?

রবীন্দ্র প্রতিকৃতি; একাল সেকাল

গতরাতে এই প্রথম আমার এমন একটি স্বপ্ন দেখা এতে বলার মতন তেমন আহামরি তেমন গল্প নেই---- সামান্য একটা ছবি আঁকার গল্প ছাড়া ঠিক ছবিও নয়---একটা প্রতিকৃতি মানুষটার নাক-মুখ-চোখ, চয়াল মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অব্দি সব আঁকা হল যেমনি তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন হাত দুটি পিছনে রেখে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে। গায়ে ওভার কোট পায়ে চটি ঠিক তেমনই।
অথচ হল না। একে ছবি বলতে আপত্তি নেই প্রতিকৃতি বলতেই যত আপত্তি আজ সেই জোড়া সাঁকো নেই, শান্তিনিকেতন শিলাইদহ নেই সব কেমন পালটে গেছে। একা প্রতিকৃতির আর কি দোষ? রং টুলির শত চেষ্টাতেও সেই মেজাজ, চরিত্র ব্যক্তিত্ব কিছুই ফুটে উঠলো না যদিও মানুষটার আকৃতি মাপজোক সব যেমন ঠিক তেমনটিই আঁকা হয়েছিল।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register