Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৫

maro news
ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৫

দুই পা ফেলিয়া

আজ একটি ঘটনার কথা লিখছি, ঘটনাটির কেন্দ্র চরিত্র আমার পিসেমশাই, স্বর্গীয় লক্ষ্মীপ্রসন্ন সেন( উনি ২০১৮ সালে লোকান্তরিত হন)। ঘটনাটি ঘটেছে আজ থেকে প্রায় ২৩ বছর আগে, ৯৭-৯৮ সালে, দূর্গা পূজার সময়।
বাগবাজারের সুবিখ্যাত কবিরাজ সেন বাড়ি, আমার পিসিমার শ্বশুরবাড়ি। এ বংশের প্রাণপুরুষ কবিরাজ গঙ্গাপ্রসাদ সেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের চিকিৎসক ছিলেন, ওনার পদ স্পর্শে এ বাড়ি ধন্য হয়েছে। এই বাড়িতে বিগত প্রায় ১৬০ বছর ধরে দূর্গা পূজা হয়, কলকাতার বনেদি বাড়ির পূজা হিসেবে অন্যতম। এটি পূজার সপ্তমীর ঘটনা। আমরা অষ্টমী পূজার দিন গিয়ে পিশেমশাই এর মুখে ঘটনাটি শুনেছিলাম।
ওখানকার বাড়ি সম্বন্ধে একটু গৌর চন্দ্রিকা করে নিই, তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে। বাড়িটি একদম রেললাইনের ধারে, তারপর রাস্তা, আর তারপরেই গঙ্গা। ওখানকার অধিকাংশ বাড়ির মতো এ বাড়ির ও দুটি প্রবেশ পথ... একটি সদর দিয়ে, সেটা দিয়ে ঢুকলে একটি ছোটো গলি মতো বারান্দা দিয়ে নাটমন্দিরে যাওয়া যায়। আরেকটি পথ হলো, পেছনে রেললাইনের গা ঘেঁষে আরেকটি দরজা, যেটি দিয়ে সরাসরি নাটমন্দিরে ঢুকে যাওয়া যায়। ঘটনার দিন পিশেমশাই সেই দিয়েই নাটমন্দিরে গেছিলেন। সকাল আটটা বাজে, নাটমন্দিরে তখন প্রতিমার যিনি সাজ পোশাক পরান, যাকে সাজকী বলা হতো এছাড়া আর কেউ ছিলো না। পিশেমশাই ঠাকুর প্রনাম সেরে সবে ঘুরেছেন, এবং তাঁর কথায়... আমি আটকে গেলাম। দেখলাম একটি বাচ্চা মেয়ে, এক গা গয়না পরা, মাথায় সিঁদুর, ঐ দরজা দিয়ে ঢুকলো। রূপের যেন অবধি ছিলো না। চারদিক যেন আরো আলোয় ভরে গেলো। মায়ের বিগ্রহের সামনে এসে মেয়েটি দাঁড়ালো, তারপর তাকে আর দেখতে পেলুম না। আমি সাজকীর দিকে তাকিয়ে খালি বললুম কিছু দেখেছিস? সে জানালো যে হ্যাঁ সেও দেখেছে। দুজনেই তারপর ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলাম। মায়ের সাক্ষাৎ দর্শন পেয়ে আনন্দের সাথে আর কিছু তুলনা হয় নি।
এর পর অনেক বছর কেটে গেছে। এরকম দর্শন ঐ বাড়ির আর কেউ কখনো পাননি।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register