Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় স্বর্ণযুগে বৈজয়ন্ত রাহা

maro news
কবিতায় স্বর্ণযুগে বৈজয়ন্ত রাহা

তেমন কিছু নয়

১|
মৃত্যুর মতো ঘুম, অথবা ঘুমের মতো মৃত্যু আসে বারবার চুম্বনের চারিপাশ জুড়ে নেমে আসে বৃক্ষের অপার মহিমা, সূর্যালোক, নদীদের গহীন শীৎকার , পরজন্মে ধুলোদের ক্লান্ত আবহ, এই জন্মে বুকে এসে বাজে; তোমার চোখের মতো আলো, তোমার বুকের মতো ঘর, শালুকের নীল গান, শব্দ হয়ে ওঠে অন্তহীন...
২|
জানলা খোলাই থাকে, আচম্বিতে ঢুকে পড়ে মেঘ, ভাঙা পাড়, তড়িৎশাস্ত্র, ঘূর্ণীঝড়, পাহারার ঘোলাটে আকাশ একা একা নৌকা বায়, মাথায় কে হাত রাখে? বন্ধুর বোন? কলমেরা আততায়ী , বনাঞ্চলে ঢেলে দেয় বিষাদের জল—
৩|
কাজ নেই? কাজ নেই কোনো? বন্ধুরা ঠোঁটে করে মৃত্যু নিয়ে আসে, শোনো ।

খালি

পক্ষীশাবক নেই পাখিটিও শুলো পাশ ফিরে ঘুমের শিয়রে ঘুম, মেঘ থাকে পাখিটিকে ঘিরে। শরীরে শ্রাবণধারা তবু তার নদীটিকে চাই পাখির চোখই জানে কোথায় মেরেছে মাছ ঘাই।
দেওয়ালে দেওয়াল চেনে পড়ে নেয় অদৃশ্য লেখা কোথায় টেনেছে মেঘ পাবকের শেষ সীমারেখা। ভুলে যাওয়া রাত ফেরে উৎসবে উৎসবে সাদা কোথাও বাঁধন ছেঁড়ে কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা রাধা।
আরও দূরে মেঘ যায় পাখিদের ডানাভাঙা জ্বরে নদীও মুখটি গোঁজে পরজন্মে বাতাসের ঘরে।

মৃতের নগরী 

হাওয়াদেরও ঘুম? তবে কে রাঙাবে পথ? শিয়রে শিয়রে শুধু অশ্রুমেঘ জাগে হাড়-মজ্জা পড়ে থাকে, মন স্থানুবৎ, সতর্ক দাঁড়ায় এসে গোপনের আগে,
রক্তের ধারাপাত অস্তিত্বহীন; জলের মুকুট নিয়ে মৃতের মিছিল নিঃশব্দে চোখ বোজে, ভুলে যাওয়া ঋণ ক্ষত হয়ে ফিরে আসে। ভ্রান্ত নিখিল।
ঘুমায় ও নির্জন, লোকায়ত রীতি ঘরের ভিতর, শুধু প্রতারণা থাকে, শিয়রে প্রহরী যেন, রাত্রির ভীতি, শ্মশানের গল্প হাত নেড়ে ডাকে।

অযাচিত

আমিতো কারোর কাছে কিছু চাইনি, কোনদিন না। যেদিন আমার মনখারাপ হয়, আর যেদিন হয়না, আমি বিকেলের দুই হাতে লুকিয়ে ফেলি মুখ, আমার জন্য কোন নৌকো আসেনা, এক নিঃস্ব কবির গন্ধে, পরাগেরা জেগে থাকে, পথে পড়ে থাকে দুচারটে কুসুম, শূন্যতার টুকরো টাকরা, বৃষ্টি প'ড়ে জলের আয়না যখন চৌচির হয় চোখ বুজে ফেলা নদীর ভিতর, আমি একলা ঘাসে শুয়ে থাকি, মাটি ছুঁয়ে, আমি মাটির কাছেও কিছু চাইনি, কোনদিন না।
ঘাসে ঘাসে মৃদুনীল কবিতা ছড়ায়, সূর্যের আলো হাত নাড়ে -- প্রতিটি শব্দের কাছে, কবিতার কাছে, আনত বসে থাকে পরজন্ম, মৃত্যুর খুব পাশে, অলৌকিক ক্যানভাসে ছবি ফুটে ওঠে বিষাদের,
এই সবকিছু আমি দিয়ে গেছি , বিনিময়ে কিছুতো চাইনি,
সন্ন্যাসীর মত উদাসীন পিছুটান, জলেভেজা রাস্তার মত পারস্পরিক, গাছে গাছে রেখে যাওয়া আলো, চুম্বনের মত নেশাতুর তারাদের শেষরাত, আবছায়া পরি, হেরে যাওয়া বাঁশি, জ্যোৎস্নার সামিয়ানা থেকে পাহাড়ের গায়ে ঝাঁকে আসা মেঘ
এই সব গান
সব, সব, দিয়ে গেছি...তোমাকেই, কিছুতো চাইনি কোনদিন, তবে তুমি কেন আমাকেই দিলে ঘুমহীন ভ্রমণকাহিনী?

নৈঃশব্দ্য

নৈঃশব্দ্য এমন অস্ত্র যা দিয়ে মানুষ ধ্বংস করা যায়।
কিছু কিছু বন্ধু থাকে , যারা বন্ধুর মত দেখতে, আসলে পুলিশ, তার চেয়েও বলা ভালো খোচর। তারা প্রায়ই তোমার তালে তাল দেবে, গান গাইলে নাচবে, আসলে খুঁজে নিতে চাইবে তোমার দুর্বলতাগুলো।
তারপর একদিন দেখবে তারা কামান দেগেছে, আর তুমি বিনা দোষে ফাঁসি যাবে ।
এসময় গুলোতে আমি চুপ করে থাকি। একেবারে চুপ। অনেক ভিতরে গিয়ে হাত পা মেলে শুই। শহরের অন্ধগলি দিয়ে খানিকটা পায়চারি, একেবারে একা, পাঁচিলের পরে শুয়ে থাকা আদুর ছেলেটাকে দুটাকা দিই, ভাবি বেঁচে থাকা কত সুন্দর!! কবিতা না লিখলেও বেঁচে থাকা যায়।
চায়ের দোকানে গিয়ে বসি। একটা সিগারেট ধরাই। গম্ভীর গলায় বলি –“ একটা চা”। আকশের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে মাছি তাড়াই।
আর মুহূর্তে সমস্ত কামানে জং ধরে যায়।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register