Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পেরা জোনাকি -তে শর্মিলা ঘোষ

maro news
গল্পেরা জোনাকি -তে শর্মিলা ঘোষ

উত্তরণ

মিতা স্কুলে যাবার পথে অনাথ আশ্রমটা ঘুরে যায়।মিল্টু বিলু সকলের জন্য চকোলেট,কেক,বিস্কুট গাড়ি থেকে নামিয়ে ওদের মধ্যে বিলি করতে করতে সে মা হবার তৃপ্তি খুঁজে পায়।মাসে এক থেকে দুবার এখানে আসা চাই তার।আজ একটা নতুন বাচ্চা এসেছে, রাঁচি থেকে ওকে আনা হয়েছে, আদিবাসী বাচ্চা,নিটোল কালো , অপূর্ব মুখখানি।মায়ায় সারা শরীর আন্দোলিত হয়ে উঠলো মিতার।এই মাঈ ,বাচ্চাটা ডেকে উঠলো,মনে হয় চকোলেট চাইছে আরো। মিতা আজ সারাদিন স্কুলে অন্যমনস্ক থাকে।কি যেন নাম মেয়েটার!আনন্দী,হ্যাঁ তাই তো বললো।এত সুন্দর নাম কে রেখেছে কে জানে! সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরেই দেখলো ননদ তার ছেলে মেয়ে নিয়ে হাজির। খুব খুশি হয় মিতা।ওদের সাথে কথা বলে ঘরে ফ্রেশ হতে উঠে পড়ে । শ্বাশুড়ির গলা কানে আসে তুই আর জামাই এই বাড়িতেই সিফ্ট কর,মিতা তো বাচ্চা কাচ্চা জন্ম দিতে পারবে না! শূন্য বাড়ি খাঁ খাঁ করে। মিতার মনের মধ্যেও শূন্যতা গ্রাস করে,সে তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে শাওয়ারটা চালিয়ে দেয়। অনেক রাতে অভীক বাড়ি ফেরে,মিতা ডাইনিং টেবিলেই তার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পড়েছিল।অভীক ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলে মিতা কথাটা পাড়ে।আনন্দীকে সে দত্তক নিতে চায়।অভীক হেসে ওঠে,বলে মাথাটা দেখছি পুরোদস্তুর খারাপ হয়ে গেছে!কার না কার বাচ্চা,মা মেনে নেবে ভেবেছো! আরো পনেরোদিন এই রকম টানাপোড়েন চলে মিতা অভীক আর মিতার শ্বাশুড়ির মধ্যে। অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হিসাবে মিতা এদের কাছে হেরে যায়। পরেরদিন মিতা অনাথ আশ্রমে আনন্দীকে দত্তক নেয়, বাড়িতে ঢোকার পথেই ,দরজা আগলে শ্বাশুড়ি ও আরো আত্মীয়-স্বজন।মিতা বুঝতে পারে এই বিচারসভাটা তার শ্বাশুড়ীমা আহ্বান করেছেন।মিতা আনন্দীকে দাঁড় করিয়ে উপর থেকে সুটকেসটা আনতে যায়।অভীক এসে তর্ক বিতর্ক শুরুর আগেই মিতা বলে,প্রয়োজনে ডিভোর্সের কাগজটা পাঠিয়ে দিও,আমি যাদবপুরের কাছে একটা মেসে উঠছি,আর তোমার মাকে জানিয়ে দিও মা আমি হতে পারতাম,বাবা হবার সামর্থ্য তোমার ছিলো না।আর তাকে বলো 'সিঙ্গল মাদার' বলে একটা শব্দ আছে,উনি বোধহয় জানেন না। মিতা সুটকেস নিয়ে আনন্দীর হাত ধরে বেরিয়ে আসে। উফ্ মাঈ কি ভাবছো চোখ বুজে!আনন্দীর ডাকে সম্বিৎ ফেরে মিতার ,সে আনন্দীর সাথে নার্সিংহোমে চেক-আপ করাতে এসেছে, স্পেশালিস্টের কাছে।আনন্দী উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে স্যার বলেছেন তুমি খুব দুর্বল,রক্ত কম,খাওয়া দাওয়া করতে ভালো করে।স্টেথো গলায় আনন্দীকে দেখে মিতা, ডাক্তার আনন্দী সেন, মিতা সেনের মেয়ে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register