Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ১২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ১২)

রেকারিং ডেসিমাল

১২
জোরদার তাসের আড্ডা বসত নতুন বউয়ের খাটে । কিছু দিন যেতেই বাড়ির লোকেরা টের পেয়েছিল বউটি বিশ্ববখাটে। তাকে যাই বলে ঘুরিয়ে গালি দেয়া হোক সে পাত্তা না দিয়ে হ্যা হ্যা করে হেসে খুদে ননদিনীদের নিয়ে ছাদে পালিয়ে যায়। গরমের পর নতুন বৃষ্টি নামলে কাকিদের ছোট টেপরেকর্ডারে হিন্দি গান চালিয়ে পুচকেদের নিয়ে ভিজে ভিজে, একরাশ লম্বা চুল খুলে খোলা ছাদে ধেই ধেই করে নেচে আসে। বারান্দায় দৌড়ে চলে। তার বর এবং বরের চেলারা সোরা গন্ধক বাটখারায় মেপে বাজি বানিয়ে রুপোলী ভুত বনলে ছাদের রান্নাঘরে গরম জল করে চানের ব্যবস্থা করে। যারা বাজির মশলা ঠুসেছে, তাদের খালি সাদা চোখ আর সাদা দাঁত ছাড়া আর কিছুটি বোঝা যায় না। মনে হয় হি হি করে হাসা তিনটে ভুতের ছানা। প্রথম দোলে এমন হই হই শুরু করেছে যে দাদু নিজের পুরোনো আলমারি খুলে দুর্দান্ত একটা পেতলের পিচকিরি বের করে দিয়েই দিল রঙ খেলার জন্য। শ্বশুর মশাইয়ের ভয়ংকর ভুরু কুঁচকে থাকা মনে হয় দেখতেই পেলনা কেউ। উলটে, শ্বাশুড়ি চুপি চুপি এসে ইয়া লম্বা চুলগুলো দুটো টাইট বিনুনি করে বেঁধে দিয়ে বললেন, যা পালা। শেষে দিদা অসুস্থ মানুষ উঠে পিছনের দিক থেকে দাদুর টাক মাথায় চারটি লাল আবির মাখিয়ে দিয়ে টুক করে আবার ঘরে ঢুকে গেলেন । দাদু শেষমেশ ছাদেই চলে এলেন এই হ্যা হ্যা পার্টিদের সাথে। কি রঙ খেলাই হল!! পাশের বাড়িতে থাকতেন এক মাঝবয়েসী ব্যাচেলর। তিনি এইসব দেখে ক্যামেরা এনে খচাখচ ছবি তুলে দিলেন এই গুষ্ঠির। মায়ের এলবামে এখনো জ্বলজ্বল করছে সেই সব মজারা। তো সেই বউয়ের ঘরে বিকেল হতেই তাসের আড্ডা বসে। দেওর ননদ মায় শ্বাশুড়ি মা অবধি। কি তাস খেলার ধুম, আর তার সাথে কি হই হই। মাঝে মাঝেই হুংকার আসে বাড়ির পুরুষ মহল থেকে , এইসব কি হচ্ছে চেঁচামেচি? তখন একটু চুপ করে যায় তাসুড়েরা। ফিস ফিস করে হাসে। আর এ ওকে চোট্টামি করার দোষ দেয়। খাবার দিতে দেরি হবে বলে আরও হুংকার শোনা যায়। কখনো শ্বাশুড়ি উঠে ভাতের ফেন গেলে আসেন, কখনো বউ। কিন্তু আড্ডা থামেনা। দাদু মেজাজ ভালো থাকলে পর্দা তুলে বলেন এ বউটা সবাইকেই নাচিয়ে ছাড়বে দেখছি।

(চলবে)

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register