Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক টুকরো হাসিতে কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় - দুই

maro news
সাপ্তাহিক টুকরো হাসিতে কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় - দুই

টুকরো হাসি - দুই

শাড়ির দোকানে

গুলেদাকে আসতে দেখে সামাজিক দূরত্ব মেনে মুখে মাস্ক লাগিয়ে আমরা দাঁড়ালাম।      
গুলেদা বলল,আড্ডায় কাম নাই।বাড়ি যাই।
বললাম,কতদিন বাদে দেখা।এখনই চলে যাবো?
হ যাবি।আমার তো তগো ভোট পাইয়া মন্ত্রী হবার দরকার নাই,যে খুশি করোনের জন্য কমু বাইক চালাইয়া শব্দ কইর‍্যা ঘুইরা বেড়া।দুষ্টু ছেলেরা দুষ্টমি কর।করোনার মধ্যেই গোপন সেলুনে গিয়া মাথায় মুরগিরঝুঁটি ছাট দিয়া রঙ লাগা।বিউটি পার্লারে গিয়া মুহে ছাই ডইল্যা আয়।পাড়ার বেকার পোলা মাইয়াগুলারে চাকরি দেওনের নামে আমি কাউরে হাসপাতালে পাডামু?কমু কিছু না জানলেও নাকি হইবো?শুধু অক্সিজেন আর স্যালাইনের নল যেইহানে হউক ঢুকাইয়া দিলেই হইল?হেইডাই নাকি সেবা।কওন তো যাইবে যে চাকরি দিছি।রুগি মরে মরুক।যা গ্যাছে গ্যাছে কইয়া যা থাকবে তাগো নিয়া ভোটে জেতলেই হইল।শোন তোগো কইতাছি আপনা ভালো পাগলেও বোঝে।যা বাড়ি যা।
গুলেদার রঙ মেশানো জল কামানের মতো কথার তোড়ে বাড়িতে আটকে থাকা মাথাটা কেমন চক্কর খেল।কয়েকমাস ব্যাঙ্কে কিছু ঢোকেনি।কেউ চাল,ডাল,তেল,মাস্ক,স্যানিটাইজার হাতে নিয়ে পুজোর চাঁদা নেবার সময় যেমন দন্ত বিকশিত করে আসে তেমন করে কেমন আছি খোঁজ নেয়নি।বার বার হাত ধুয়ে মনে হয়েছে ভাগ্যরেখাটা মুছে গেছে।জ্বরের ঘোরে স্বপ্ন দেখেছি করোনায় কোথাও বেড না পেয়ে চিকিৎসা করাতে শ্মশানে হাজির হয়েছি।বাকি রাতটা আতঙ্কে জেগে থেকেছে প্যাট প্যাটে দুটো চোখ।
বললাম,গুলেদা তোমার কথা কিছু বুঝতে পারছি না।
বুঝবি কি কইর‍্যা? টিভির দিকে তাকাইয়া ভুলভাল বুকনি হুইন্যা মাথাডা তো এক্কেরে গ্যাছে।কইতাছি ভাইরাসরে মারতে গেলে নিজেরা ভাইরাস না হইয়া মানুষ হ।বাড়ি যা।কেডা যে গোমূত্র নিয়া ঘোরতাছে,আর কেডা রাস্তায় গোল গোল চক্কর আঁইক্যা মহল্লায় বক্তিমে দিয়া করোনা বোঝাইতেছে দেহ নাই?হ্যাগো খপ্পরে পড়লে কিন্তু ছাড়ান পাইবি না।জেবন অতিষ্ঠ কইরা ছাড়বে।বিপদে পইড়্যা যাবি।
একজন মহিলা এসে দাঁড়াল আমাদের সামনে।গুলেদার দিকে হাত বাড়িয়ে কাতর হয়ে বলল,আপনারা আমাকে কিছু সাহায্য দিন।আমি  স্বামীর কাছে যাবো।
গুলেদা বলল,আহারে শোনলে বড়ো কষ্ট হয়।দ্যাখছস করোনার ঠ্যালায় মাইনষের অবস্থা।কত পরিযায়ী শ্রমিক যে এহনও আইতে পারে নাই।আইতে গিয়া রাস্তায় মরছে।দ্যাখ দেহি পকেট হাতড়াইয়া।সবাই মিল্যা সাহায্য করি।আহা মাইয়াডা স্বামীর কাছে যাইবো!এমন পতিভক্তি আইজকাইল দ্যাহা যায় না।
সবার পকেট হাতড়ে যা পাওয়া গেল তা কম নয়।
গুলেদা মহিলার হাতে টাকা দিয়ে জিজ্ঞাসা করল,স্বামীর কাছে যে যাইবেন আপনে জানেন তিনি আছেন কোথায়? 
মহিলা বলল,শাড়ির দোকানে। 
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register