Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

রম্য রচনায় চার অক্ষর

maro news
রম্য রচনায় চার অক্ষর   সিন্দাবাদ। অকুতভয় অ্যাডভেঞ্চারার যার বেশীরভাগ সমুদ্রযাত্রাই ইন দা ভোগ অফ আল্লাতালা হয়েছে । তিনি তিমি মাছের ওপর পিকনিক করেছেন, রূপসী ভ্যাম্পায়ারের ছলা কলাকে হেলায় এড়িয়েছেন, চুম্বক পাহাড় থেকে জাহাজ ঘুরিয়েছেন এবং মৃত্যুর সঙ্গে হা ডু ডু খেলতে খেলতে প্রচুর মাল কড়ি কামিয়েছেন। তবে সিন্দাবাদ কি আদতে মুসলমান ছিলেন? তার বাই ফেইথ নিয়ে একটু দোনোমোনো থাকার কারণ হচ্ছে এই যে এতো সব রুদ্ধশ্বাস ব্যপার স্যপারের মধ্যে ওনার কোরান পড়াটা সেভাবে কোথাও উল্লিখিত হয় নি আর এরকম তো নয় যে জাহাজে যেতে যেতে কোরান পড়া বারণ। আর সবচেয়ে তাজ্জবের কেস হচ্ছে সিন্দাবাদ মাল ঝাল ভালই টানতেন। মাল ঝাল টানার প্রসঙ্গে বলি, সিন্দাবাদের প্ঞ্চম সমুদ্রযাত্রায় উনি যথারীতি ফেঁসে গিয়েছিলেন আবার এক নির্জন দ্বীপে যেখানে সিন্দাবাদ ছাড়া মানুষ বলতে এক পিস চলৎশক্তিহীন বোবা শয়তান বুড়ো ছিল। ইনসানিয়াতের চক্করে সিন্দাবাদ তাকে সেই যে ঘাড়ে চাপিয়েছিল ব্যাস! সে বুড়ো হয়ে পড়েছিল শক্তিশালী প্যারাসাইটসুলভ সিন্দাবাদের শরীরের অবিচ্ছেদ্য পার্ট। সিন্দাবাদ বাবুর যতগুলো গল্প আছে তার মধ্যে এইটা আমার হেব্বি প্রিয়। ঘাড়ে চাপা লোকজনের সঙ্গে মেলা মেশার ফল স্বরূপ আমার-ও নিজেকে মাঝে মধ্যে সিন্দাবাদ লাগে বইকি। আর এই সেই পঞ্চম সমুদ্রযাত্রা যেখানে সিন্দাবাদ দেশজ রেসিপি দিয়েছিল মদ তৈরিরঃ “ একদিন আঙুরের ঝোপের তলা দিয়ে যেতে যেতে, পাশেই দেখি লাউগাছে পাকা লাউ। অমনি মাথায় একটা বুদ্ধি এল। একটা লাউ তুলে, বিচি গুলো কুরে কুরে ফেলে দিলাম। তারপর সেই ফোঁপরা খলের মধ্যে পাকা আঙুর পুরে, মুখটা এঁটে , খোলটা মাটিতে পুঁতে রাখলাম। বুড়ো অবিশ্যি সারাক্ষণ আমার ঘাড়ে বসে সব-ই দেখল। কয়েক দিনের মধ্যেই বুঝলাম লাউ- খোলার ভিতরে পাকা আঙুর পচে নিশ্চই গেঁজে উঠেছে। তুলে ফেললাম লাউটা। মুখ খুলে দেখি টলটলে মদ তৈরি হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে কয়েক চুমুক খেলাম। একটু পরেই শরীরের সব গ্লানি কেটে গেল, দশটা মানুষের বল পেলাম। বুড়ো সেটা লক্ষ্য করল। অমনি তার-ও খাওয়া চাই। লাউের খোলাটা আমার কাছ থেকে নিয়ে, ঢকঢক করে অনেক খানি খেয়ে নিল। একটু পরেই নেশায় বুঁদ। হাত পা আলগা হয়ে গেল। ঝেড়ে তাকে ফেলে দিলাম। উঠবার চেষ্টা করল, কিন্তু আমি দিলাম না। মন টা আমার পাষাণের মত হয়ে গেছিল। আবার কোন দিন কার সর্বনাশ করে বসবে কে জানে! মস্ত একটা পাথর তুলে, তার মাথাটা গুঁড়ো করে ফেললাম। মন টা কেমন হাল্কা হয়ে গেল। গান গাইতে গাইতে সমুদ্রের তীরে এসে দেখি একটা জাহাজ তখুনি নোঙর ফেলেছে। দেখতে দেখতে কাপ্তান আর মাঝি মাল্লারা নেমে এল।“ জাস্ট অসাধারণ! লাউ আর আঙুরদের সঙ্গমে টলটলে মদ তৈরি, শত্রুকে নিধন করার সহজতম উপায়, মন হাল্কা করবার উপায় এবং সবচেয়ে ইন্টেরেস্টিং হচ্ছে, স্বয়ং খোদা চেয়েছিলেন সিন্দাবাদ মদটা তৈরি করে বিলি বণ্টন করুক কারণ নির্জন দ্বীপ, লাউ, আঙুর, শয়তান বুড়ো আর রেস্কিউ জাহাজ সবই খোদার লীলা। অতএব আসুন, এই কঠিন সময়, আমরা সবাই মিলে লাউ এবং আঙুরের সঠিক সৎকার করি। পুণ্য হবেক।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register