Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

"বিভূতির পথে অপুর সাথে" পথের গল্প না পাঁচালী -তে শর্মিলা ঘোষ

maro news
"বিভূতির পথে অপুর সাথে" পথের গল্প না পাঁচালী -তে শর্মিলা ঘোষ

সুনামি

নীতা দুমদাম করে নিচে নামতে নামতে চুলটা ঠিক করে নিচ্ছিল।আজ একটা কাঁথা স্টিচ পড়েছে,তার প্রিয় নীল রঙের ।অফিসের কলিকের বিয়ে;দুটো সুমো ভাড়া করেছে তারা সবাই মিলে ।নিষ্ঠা বাচ্চা মেয়ে, অফিসে নতুন জয়েন করেছে ।ইঞ্জিনিয়ার পাত্র বয়স একটু বেশি কিন্তু ভালো পরিবার বড় চাকরি, কাজেই ....... সবাই মিলে সুমো চেপে যাওয়ার পথে একজায়গায় দাঁড়ালো ।মেয়েরা সবাই মিলে খানকতক মালা ও গোলাপ ফুল কিনে মাথায় দিল । গিয়ে দেখে এলাহি আয়োজন ।একদিকে বুফে ও নানা রকম খাবার স্টল, অন্য দিকে বসিয়ে খাওয়ার আয়োজন।নিষ্ঠা বেশ আধুনিকা ,সুন্দর করে সেজেছে ।ওদের দেখেই আনন্দে ঝলমল করে উঠলো ।এসো নীতাদি বলে হাতে একটা আলতো চাপ ;বর এলে দেখে খেতে বসো কিন্তু ।আমি কিন্তু মোটেও উপোষ নই সকাল থেকেই খেয়ে চলেছি, মা আর কিছু বলেনা জানো, জানে শুনবো না । হঠাৎই সারা পড়ে গেল বর এসেছে ।অফিস কলিগ রা নিচে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো, সামনেই বরের বসার জায়গা । নীতা দেখলো বর বেশে সুশোভন সেই আগের মতো শান্ত সৌম্য চেহারা নিয়ে এগিয়ে আসছে ।নীতা ঘামছে বুকের ভেতর একটা চাপা কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠে এলো ঠিক আলজিভের কাছে । সুশোভন একটা কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর নীতা হঠাৎই সম্পর্কটা কেটে দিয়েছিল।মার্জিত সুশোভন কোনো অভিযোগ ছিলনা, শুধু বলেছিল নীতা জীবন তোমার সিদ্ধান্ত তোমার, আমি কিছু চাপিয়ে দেবো না ।আজ নীতার সব কিছু আছে ,সুশোভন ছাড়া । মনে পড়লো নীষ্ঠার কথা,সে বলেছিল নীতাদি ছেলের একটা কিডনি নেই কিন্তু মানুষটা বড় ভালো গো! আমরা গঙ্গার ধারে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে অনেক আলাপ করেছি, আমি রাজি বাবাকে বলে দিয়েছি। সব খাবার নীতা পাতে নিল কিন্তু কতটা খেল তা সময় বলবে ।থাইয়ের কালশিটেতে হাত বুলিয়ে রুদ্রর কথা ভাবলো ।সে জানলে বলবে পুরোনো প্রেমিকের বিয়ে খেতে গেছিলে!সুশোভন তোমার কোথায় কোথায় হাত দিয়েছিল! কিছু মদ্যপ কালশিটে, কুরুচিকর শব্দ, আর বিশাল একটা নিঃশব্দ অট্টালিকা তার দিনরাতের সঙ্গী।নীতা ড্রেসিং টেবিলের ধারে জুঁই এর মালাটা খুলে বিছানার দিকে তাকায়।সেই কষ্টটা গলার কাছে উঠে আসে সুনামি র মতো ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register