Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

"গান ভালোবেসে গান" সংখ্যার গুচ্ছ কবিতায় নিলয় গোস্বামী

maro news
"গান ভালোবেসে গান" সংখ্যার গুচ্ছ কবিতায় নিলয় গোস্বামী

ক্রঁদ

এখন সময় চুপ। দাঁড় বেয়ে যায় মৃদু হাওয়া। আলোদের বিপরীতে বাঁচা! চৌকাঠ পেরিয়ে শুনি জমে থাকা মায়াদের ডাক। জামা খুলে রাখে রোদ,চৌপায়ে ছায়াদের বিলাস। আমার আপন কেউ নেই, যা আছে- সব সন্ন্যাস। হৃদয় প্রবাহ খুঁজে, ঢেউয়েরা ফেরিওয়ালাই থাক। ভূমি ছুঁয়ে ফিরে আসে তরুণ দৃশ্যের মৃদু ঝাঁক। নিরুপায় আগ্রহটা এভাবে আঁকড়ে ধরা কী ঠিক? আর কতো টুকু নেবে?এখন বাকি আছে  প্রলাপ!
চোখেরা যে মুখোমুখি,অভিমান পিছু টানে কারে! সঞ্চয় ফুরিয়ে পথে, পাশাপাশি দুজনেই হাঁটি। দীর্ঘ ঠোঁটের আকাশ নাগপাশ অযাচিত ছাড়ে!
স্মৃতিরা যে বলে যায়,মৃত্যুর কাছেই আমি ঋণী।
এখন দুকূল খালি,কোন খানে খুঁজি বলো তা'রে !

ঋণ

বাতাবী পাতার বনে, আদিম মানবী- রাতসোহাগি! আমি দূর, সব চুপ, বেহুঁশ -নিঝুম গল্প লিখি।
এক বিন্দু সত্য নেই , একটুকরো বেদনা শুধু ভাসে! ফসিল স্বপ্নের ঠোঁট ছুঁয়ে দিলে- মুহূর্তরা হাসে।
নদীরা অবুঝ মেয়ে, সম্মোহনের যুবতী ঘর! রোদ্দুর ঘুমিয়ে আজ বাজি ধরে বেহাগের স্বর।
তুমি চোখ পড়ছ জানি, কতটা রয়েছ নিজেরই ! শরীর কী করছে পাঠ, ভুলের সুখ আর হইচই!
দিঘির রঙ চিনেছে তুলি, আঁচড় হয় রঙিন ! প্রসূতি মাঠের ঘাম কিনে অধৃষ্য প্লাবন দিন।
আঙুলের শীত চিনে গান্ধার যে কতটা মলীন পঙক্তিরা খুঁড়ে চলেছে গত জন্মের কিছুটা ঋণ।
 

ফসিল

দীর্ঘ শতাব্দী জুড়ে  কতরকম কান্নার সুর ছড়িয়ে রেখেছি যত্নে। জোছনা রাতের বাতাসের দু'চোখে লিখে রেখেছি মধুর সর্বনাশ, আগলে রেখেছি মাঘী সংক্রান্তির ছমছমে সরীসৃপী তুরুপ।
নম্র হাতের তালুর পৃথিবী জানিয়ে যায়, এখানে কতো দিন আর ভালোবাসার সিপাই নাচে না।
কতো দিন লেখা হয় না স্পর্শপুরাণ... শীৎকার খুঁড়ে জেগে ওঠেনা বানভাসি হৃদয়। ক্রমাগত অপেক্ষারা জমে জমে হয়ে গেছে আক্ষেপের ফসিল।
দুটো অর্ধমৃত চোখ আর কতো কাল খুঁজতে পারে বলো চেনা পাঁজরের গন্ধ!
তুমিও কী জেগে আছো ভূষণ্ডি পরভৃতের মতো?
না কি বৃদ্ধ আকাশের বুকে টাঙিয়ে নিয়েছ সীমানার ধ্বজা.....
তবু আমার অপেক্ষা আর শেষ হয়না, ভরসার শ্বাস জিয়ন পালা গেয়ে যায় বেলা-অবেলায়। শুচিবায়ুগ্রস্ত অাশ্বাস বার বার জাগিয়ে রাখে আমায় প্রয়াত স্মৃতির ঘুমঘরে।

প্রাচীর

শ্রাবণ বিপন্ন। তখন সভাটা আয়োজন করেছে রোদ্দুর। বিকেল বাঁধন খুলে আনে,পরিচ্ছন্ন ভোর।
সহজ তত্ত্বকথার উচ্চারণ যে সোচ্চার! প্রশ্ন ঠোঁট খুলে রাখে এ দায় কাহার ?
রাতের দাঁড়কাক জানে পালক টুকুই সার, ছোবল খুলে চিনেছি  বিষদাঁত যাহার !
পিয়ানো চোখের ভাঁজে ছুঁয়ে যায় মরীচিকা দিন ফ্যা, সো, ল্যা, টি ক্রোম্যাটিক হবে থাক কিছু ঋণ।
আগুন গুনগুন করে গেরুয়া স্মৃতির দিকে ধায় মুহূর্ত অঞ্চল চিনে খাতায় পরাজয় রাঙায়।
নির্বাণ লগ্ন চিনেই করে গেছে ভুল ঠোঁটের তূণীর আজ বেজায় সবুর।
সংকল্প চিনেছে, উপবাসী নবীন ফসিল প্রচ্ছন্ন আহুতি গড়ে নাভির প্রাচীর।

চারুকাজ

এত যে আঁধার পেয়ালাটা গিলেছে শুধুই রুপ, বন্দরে বিরহী সুর দুরন্ত মহল গড়ে। আকাশ সীমানা পড়ে হয়ে যায় ঘোর। এত যে চাওয়া জমেছে মনের রুক্ষ দু'পাড়ে বনবাসী রোদ বৃষ্টি কিনেছে সে ভুলে যমজ বাতাস লেগে আছে মন ধোয়ার কারবারে। ওই যে চারপায়ে হেঁটে যায় মৃত প্রেমিকের দল এরা কী মৃত্যুর দামে ভালোবাসা কিনে? দু'পায়ে পৃথিবী ছাড়ে, বাকিরা ওপাড়ে বাঁধে ছল। বুকেতে আগুন জ্বলেছিল এককালে,সান্ত্বনা আজ ঠিকানা আকাশে রাখে। ডাকপিয়ন খুঁজে ফিরে শুধু চিঠিরই কারুকাজ। জীবনের বন্দরে ভীড়ল যে একুশের ছায়া সময়ের উপকূলে দেখি বিরহিণী স্রোত স্মৃতির ঘুঙুর পরে নাচে বিষাদের কায়া। আড়ষ্ট শব্দদাহে লগ্নের মানভাঙা উল্লাস নিরেট বালুর চোখে থাকে পৃথিবীর চারুকাজ জলের গভীরে নাভিকূপ মেলে রাখে সমুদ্রসন্যাস।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register