Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

রম্যরচনায় ইন্দ্রাণী ঘোষ

maro news
রম্যরচনায় ইন্দ্রাণী ঘোষ

লেখা বা না লেখা, কেন লিখি, কোথায় লিখি

ফেসবুক একটা নিজের জায়গা. এমন দেয়াল যেখানে নিজের মত লেখা যায়. কেউ পড়লেও কি বা না পড়লেও কি, মনের মতন দেয়াল সাজানো যায় বৈকি. নাই বা হল সাহিত্যপদবাচ্য, আসল কথাটি হল লিটিল ম্যাগাজিনের মত সাহিত্যের আতুড়ঘর না হলেও, ফেসবুকের দেয়াল খোলা আকাশ তো নিশ্চয়ই. ছোটবেলায় দেয়ালে আঁকিবুকি কাটার অমোঘ আকর্ষণ খানিকটা এই দেয়ালে এসে মেটে তো বটেই. ডায়েরির পাতায় বন্ধ শব্দমালা না হয় পেল একটু আলোর পরশ. আসলে আমরা যারা অক্ষরবিলাসী, কিছুটা 'ফসলবিলাসী হাওয়া' র মতই, অক্ষরের ফসল ছুঁয়ে বিলাসের আরামের কাঙাল. কখনো চিঠি লিখতাম, এলোমেলো, আনতাবড়ি, বেশিরভাগ চিঠির উত্তর আসত না. সময়ের অভাবে কেউ উত্তর দিত না, কেউ বা চিঠির উত্তর দিত. শব্দের মাঝে মাঝে জ্বলত উষ্ণতার প্রদীপের টিমটিমে শিখা, সূর্যের মত উজ্জ্বল সে নয় তবু তো আলোটুকু জ্বালানোর তাঁর অদম্য ইচ্ছেটাই তাঁর বেঁচে থাকার সম্বল. এমনো মানুষ আছেন যারা শুধু অক্ষরটুকুর ওম পাবার জন্য মাইলের পর মাইল পাড়ি দেন গ্রাম থেকে শহরে কোন কবিতা উৎসবে.
যে শব্দমালায় তৈরি হয়েছে রবীন্দ্ররচনাবলী, সাতটি তারার তিমির, ঢোড়াই চরিত মানস, তিস্তাপারের বৃতান্ত, সে শব্দমালার আলোর পথেই আমাদের যাত্রা. কালের গর্ভে নিহিত কোন আলোর ভ্রূণ থাকে কেই বা বলতে পারে. সভ্যতা যদি ধ্বংস হয়েও যায় কোন অতিমারীতে বা ভুমিকম্পে, তখন ছাপার অক্ষরের খাজানার পাশাপাশি এই যে অপার্থিব বা ভার্চুয়াল জগত সেখানেও যে মানুষ নামের জীবটির অক্ষরবিলাসের জায়গা ছিল তাও হয়তো খুঁজে বের করবে মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান কোন প্রাণী. এই অক্ষরের ধুপছায়ার পথে অবাধ বিচরণের জন্যই অক্ষরের সাথে সালতামামি, সাত সতেরো, হাবিজাবি. নাই বা হল মণিহারের মালা পাওয়া এই তুচ্ছ জীবনে তবু অক্ষর যাপনের সুখটুকু আঁচলে বেঁধে হাঁটা তো হল. এই জন্যই লিখি, পার্থিব বা অপার্থিব যে মাধ্যমেই হোক না কেন.
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register