অভয় হঠাৎ নূপুর জোড়া দেখে একটু চমকে যায় ! তার চেনা চেনা লাগছে ! এইরকম নূপুর জোড়া তো সেদিন শ্যামলী মেয়ের জন্য কিনে এনেছিল । ঝিমলির নূপুর পরার খুব শখ যে !
সকাল থেকেই আজ বেশ তাড়াহুড়ো চলছিল ।আজ অনেক নতুন মাল এসেছে । তাদেরকে নতুন ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে । তাই সকালবেলায় আর একমাত্র মেয়ে ঝিমলির সাথেও দেখা হয়নি। বাড়িতে সকালবেলায় এককাপ চা খেয়েই বেরিয়েছিল।এই কাজে অনেক চাপ ! মেয়ে পাচারের কাজে অনেক ঝামেলা! তবে মোটা টাকার রোজগার ! কম বয়সী কিশোরী মেয়েদের এখন বাজারে খুব চাহিদা ! রাতারাতি সব মেয়েরা বিদেশে পাচার হয়ে । রমরমিয়ে চলছে দেহ ব্যবসা ! আজ পাঁচটে কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে আনা হয়েছে ! পা থেকে মাথা পর্যন্ত একেবারে ঢাকা ! দেখার উপায় নেই ! আজ তো অভয়ের দায়িত্ব ছিল মেয়েগুলোকে তাদের নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার ! তাই অভয় তাদের জাহাজ ঘাটে অনেকক্ষণ আগেই পৌঁছে দিয়েছে । এতক্ষণ তো নৌকা হয়তো তার ঠিকানায় পৌঁছেও গেছে ! সারাদিনের কাজের হিসেব বুঝে তার পাওনা টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য সে গাড়িতে ওঠে পড়ে । ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে রাত আটটা বাজে । এখনো বাড়ি ফিরতে এক ঘন্টা লাগবে ! অমনি গাড়ির ভেতর এক জোড়া নূপুর দেখে একটু চমকে গেলেও পর মূহুর্তে নিজেকে এইভেবে শান্ত করে যে ,একরকমের নূপুর অনেক জনের থাকতে পারে ! ঝিমলি এতক্ষণে হয়তো খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে ! এবার মুঠোফোনটা খোলে । এতক্ষণ বন্ধ রেখেছিল !দেখে কুড়িটা মিসকল ! বাড়ি থেকে! অমনি অভয়ের মুঠোফোন বেজে ওঠে ! ওপাশে স্ত্রীর গলা শোনা যায় ,তোমাকে কতবার ফোন করেছি ! ঝিমলিকে কেউ অপহরণ করে নিয়ে গেছে ! খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না !
অভয় আর ভাবতে পারে না ! মাথাটা ঝিমঝিম করতে থাকে ! তবে কি ঝিমলি! নূপুর জোড়া হাতে নিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে ! বিড়বিড় করে বলতে থাকে ,আমার পাপের ফল ..... পাপের ফল ... মেয়েকে গ্রাস করলো !
0 Comments.