সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ৪২)
পুপুর ডায়েরি
অন্য লোকেরা এলে আমি আর পাপুর কাছে বিশেষ একটা পাত্তা পেতাম না। ওর পাশে পাশে সবার সাথে কথা বলতাম, কিন্তু,... ওই আর কি, পরিচয় হত খালি পড়াশুনায় ভালো বলে, একটা আশ্চর্য জীব।
এরকম হত, বড়োরা ডেকে জিগ্যেস করতেন, কী পড়ি। আবার নিজে নিজেই গল্পের বই পড়ি সেটাও সবার চর্চার বিষয় ছিলো। অনেকে বিশ্বাস করত না। হয়ত একটা কোনো বই ধরিয়ে দিয়ে বলত, “ পড় দেখি। ”
আমি গড়গড় করে পড়ে গেলেই এক্সক্লামেশন চলত, “ ওমা!! কেমন পড়ল!! আমার বাচ্চা ত এখনো একটা একটা করে শব্দ… ” ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরও একটা আশ্চর্য চর্চার বিষয় ছিলো, এর মা অফিসে যায়!
পুপু একা একা খাওয়া দাওয়া সব নিজে করে থাকে কী করে, সে নিয়ে সবাই গোল হয়ে বসে জিগ্যেস করত পুপুকে। পাপু বাড়িতে আসা বাইরের বন্ধুদের একটু ঠোঁট উলটে বলত, ওরা আমাদের ভাড়াটে।
সেই থেকে “ভাড়াটে” শব্দটায় গভীর আপত্তি আমার সাবকনশাসেও।
একটু পরে আস্তে আস্তে আমি ছাদে কেটে পড়তাম একা একা ।
আর নিজেকে বলে রাখতাম, আমি বড় হয়ে কখনো ভাড়াটে হব না।
0 Comments.