Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সম্পাদকীয়

maro news
সম্পাদকীয়

দীপালি ২০২১

কালি পুজো 

সে কত দিনের পুরোনো সিঁড়ি, মহাকালের ছাদে উঠে ফিরে দেখার রাস্তা। 
কালিপুজো মানে সকাল থেকে মায়ের লুচি, ছক্কা, বাবার আনা মিষ্টি। আমেদ কাকুর দোকান থেকে আনা ফার্স্ট ক্লাস মাংসের ঝোল আর ভাত দুপুরে। রাতে ছোলার ডাল নারকেল কুচি, আলুর দম, চমচম, পরোটা, পায়েস। 
সারাদিন গান, গান। বাবার গলায়, বাইরের মাইকে। সন্ধ্যে হতেই মায়ের ধূপধুনোর সুন্দর গন্ধ, ঠাকুরের সিংহাসন আর শ্যামামায়ের সুন্দর মুখখানার চারপাশে টুকটুকে লাল জবার মালা। আর বাবার গলায় অজস্র শ্যামাসংগীত। সে সুরের কি মাধূর্য যে না শুনেছে সে জানবে না। রাত একটু গড়ালে পিছনের দরজা খুলে পাসের বাড়ির কেকাদের রোয়াকের পাশে মোম বাতি লাগিয়ে বাবা আর আমার বাজি ফোটানোর হুল্লোড়। 
তারাবাতি, চরকি, তুবড়ি, সাপবাজি। 
মা কানে তুলো গুঁজে রাখতেন, মাইক এবং বাজির আওয়াজ ঠেকাতে। 
আমাদের বাজি শেষ হলে, বাঁচলাম,  বলে তাড়াতাড়ি সাবান দিয়ে হাত পা ধুইয়ে মুখ মুছে মাথায় মাফলার পেঁচিয়ে কটসউলের জামা পড়িয়ে দিতেন। 
নাকি নতুন হিম পড়ে এ সময়। 
তারপর আমি আর বাবা প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে। 
ক্লাস নাইন, কে পাশে বাজি ফাটায় খেয়াল করে ফেললাম। কারা ইলেক্ট্রিক তার দিয়ে মাইক আলো গোছাতে ব্যস্ত ঠাকুরের সামনে স্টেজে। 
আলতো করে পা দিয়ে আটকে দিলে, তারটা আর টেনে নেয়া যায় না ভেবেই অপার আনন্দ। 
কি নাচ স্টেজের পিছনে। 
" আছে গৌর নিতাই নদীয়াতে.. "
ইসস।

সেই থেকে কালিপুজো মানেই ফাংশন। 
আর খালের পাড়ে, পার্কে হাতে বানানো তুবড়ি ফাটানো। 
এই একটা গোলার্ধের জীবন। 

আরেক গোলার্ধে, ঝমঝমিয়ে কাঁচের চুড়ি, লেহাঙ্গা, লম্বা বিনুনিতে সোনালি ঝিলিমিলি,  সঙ্গে ছোট মানুষের দল। হাতে বানানো রঙমশাল তুবড়ি। কত কত বাজি, বোমা, পটকা। 
বিরিয়ানি পোলাও ফ্রাই রকমারি মিষ্টি। 
তারপরেই ছোট্ট মানুষেরা। 
মাথায় মাংকি টুপি, পায়ে খুদি খুদি রঙবেরঙের হাওয়াই চপ্পল। লম্বা বাঁশের ডগায় বাজি। 
দাদা আম্মু বাবা মায়ের হাত ধরে বাজি আর বাজি। 
আরও বড় হওয়া। কত সাহস করে নিজেরা বাজি, আলো, জ্বালিয়ে সাজিয়ে, আলো বয়ে নিয়ে চলেছে নতুন প্রাণ। 
আলো আসুক। 
হাত থেকে হাতে। প্রাণ থেকে প্রাণে। 
তমসো মা জ্যোতির্গময়ো। 

সোনালি

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register