Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব - ২২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব - ২২)

আরশি কথা

ঝোরাদের অফিসের দু জন, স্কুল অফ এন্থ্রপোলজির থেকে অপূর্ব ভট্টাচার্য্য, বাচ্চা ছেলে ঝোরার মেয়ে আকাশলীনার বয়েসি হবে, এই তিনজন মিলে আজ অভিজান হবে চীনে পাড়াতে, ইতিহাসের খোঁজে, ডকুমেন্টারির শুটিং এর জন্য আজ খানিক সার্ভে হবে . কথাবার্তা সেখানকার লোকেদের সাথে আজ ঝোরা এবং টিম ফাইনাল করে এলে, ঝোরা চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করবে. তারপর ফাইনাল শুটিং. ঝোরা কথা শুরু করে "চীনেরা এই শহরে প্রায় তিনশো বছর ধরে আছে সেই ওয়ারেন হেস্টিংসের আমল থেকে ', অপূর্ব বলে ঝোরার পাশে বসে গাড়ীতে যেতে যেতে , ' আর আমরা কত কম জানি ওদের কথা, ওই গল্প, উপন্যাস বা সোসাল মিডিয়াতে দু চারটে কলকাতার উপর গ্রূপে যা লেখা থাকে. লাইব্রেরীও তেমন নেই. একমাত্র ন্যাশনাল লাইব্রেরী যেখানে ইতিহাসের অনেক দুষ্প্রাপ্য বই আছে চৈনিক ইতিহাস নিয়ে. কে ই বা ভাবে এদের নিয়ে, যারা ঠিক আমাদের মত নয়, যাদের চেহারা, কথা বলা, এ দেশের মত নয়, নিজেদের মধ্যেই গুটিয়ে থাকতে হয় তাদের , ' আলাদা' হয় তারা. আগে মানুষ যখন নোমাড ছিল, আই মিন 'হান্টার গ্যাদারার' , তখন কোন এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর মানুষকে দেখলে মেরে ফেলত . কারন তাদের রকম সকম, আদব কায়দা কিছুর সাথেই নিজেদের আদব কায়দার মিল পেত না, অর্থাৎ যা আমার মত বা আমাদের গোষ্ঠির মত নয় তাকে শেষ করে দাও আর এখন কোনঠাসা করে দেয়া হয়. মানুষ এখন সভ্য হয়েছে'. এতক্ষন কথা বলে চুপ করে যায় অপূর্ব. ঢকঢক করে খানিক জল খায় নিজের বোতল থেকে. জলের বোতলটিও বেশ আকর্ষণীয়. কম্বলে মোড়ানো একটা ভারি স্টিলের পাত্র. এ ছেলে আর পাঁচটা এ বয়েসী ছেলে মেয়ের চেয়ে আলাদা. কেমন যেন ঘোর লাগা চোখ. ড্রাগস নেয় না তো? বলা যায় না. যা অস্থির সময়. ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো কেমন যেন বিভ্রান্ত হয়ে থাকে. না: খারাপটা কেন ভাববে ঝোরা. থাক ও নিজের জগত নিয়ে. কথা বলতে বলতে ঝোরাদের গন্তব্য এসে যায়. সায়েন্স সিটির দিকে টার্ন নেয় গাড়ী. এরপর খানিকটা এগিয়ে আবার খানিকটা পিছিয়ে এসে চীনে পাড়া. কলকাতার চৈনিকদের সং্খ্যা কমতে কমতে প্রায় ২০০০ এসে ঠেকেছে. সকলেই চলে যেতে চাইছে আমেরিকা বা কানাডাতে. প্রথমেই রিসার্চের টিমের কাজ এখানকার মানুষদের সাথে কথা বলা. মূলত এই এলাকার মানুষ রেস্টুরেন্টের ব্যাবসা করেন বা চামড়ার কাজ. এদের চামড়ার জুতো নিউ মার্কেটের ছোট ছোট দোকানে প্রচুর পাওয়া যেত. ঝোরাদের প্রথম কাজ হল মেই লিং নামক এক ভদ্রমহিলার সাথে দেখা করে কথা বলা. ভদ্রমহিলা এই কলকাতার মাটিকে ভালবাসেন. জন্ম কর্ম এখানে হওয়ার সুবাদে, তিনি মনে প্রাণে ভারতীয় এবং বাঙালি. মেই লিং একটি রেস্টুরেন্টের মালিক, সঙ্গে সঙ্গে কিউরিও,এন্টিক এসবের ব্যাবসাও করেন. অনেক দুস্প্রাপ্য স্ক্রোল উনি দেখেছেন. ঝোরাদের অপিস থেকে যোগাযোগ করেই রেখেছিল ওনার সাথে. ঝোরাদের টিমকে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভেতরে নিয়ে গেলেন মেই লিং.

ক্রমশ

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register