- 52
- 0
সমর্পিতা
খুব কৌতূহল হচ্ছিল আইভির,মায়ের ডায়েরিটা পড়ার ইচ্ছা তার বহুদিনের
।আইভি তার ডাকনাম, তার ভালো নাম সমর্পিতা ডিকোস্টা বিশ্বাস, এই সমর্পিতা নামটা তার ভারী পছন্দের। সে ডায়েরি পড়ার দিকে মন দিল ।
তিনটে ডায়েরির প্রথমটা রুদ্ধশ্বাসে পড়ে ফেললো, দ্বিতীয়টা খুলে প্রথম তিনপৃষ্ঠা পড়ার পর চোখ ঝাপসা হয়ে এল ।সে কান্না চেপে সব পৃষ্ঠা পড়ে ফেললো, এ যেন কোনোসিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়ছে।ছোটো থেকেই আইভি জানে তার বাবা প্রভু যীশুর কাছে চলে গেছেন।তার মা রোজি ডিকোস্টা বিশ্বাস একাই তাকে লালন পালন করেছেন ।কিন্তু তার দিদা মানে মায়ের মা আইভিকে পচ্ছন্দ করতেন না কোনোদিন।কেন! কেন !কেন!আজ সব উত্তর পেয়ে মা কে মাতা মেরি মনে হচ্ছিলো, হে প্রভু আমাকে সহ্য করার শক্তি দাও ।চোখ বুজে ফেলে আইভি ।
তার মা ভালো বাসতো তার বাবা অনিতেন্দু ভট্টাচার্যকে।খ্রিস্টান মতে একদিন তারা বিয়েটাও সেরে ফেলে ।কিন্তু বিধি বাম ।পরিবারের প্রবল চাপের কাছে নতি স্বীকার করে তার বাবা তার মায়ের সাথে সব সম্পর্ক ত্যাগ করে ।রোজি বিনা অভিযোগে ফিরে আসে তার বাবা মায়ের কাছে ।অনিতেন্দু পুণরায় বিয়ে করে সীমা চক্রবর্তীকে। অনিতেন্দু আর সীমার সন্তান আইভি! আইভিকে জন্ম দিয়ে তার মা মারা যান ।এক বছরের মধ্যে অনিতেন্দুর মারণ রোগ ধরা পড়ে ।অনিতেন্দু রোজির শরণাপন্ন হয়, ততদিনে অনিতেন্দুর বাবা গত হয়েছেন।রোজি অনিতেন্দুর মৃত্যুর পর ছোট্ট শিশুকে বুকে করে নিয়ে আসে, সেই থেকে কেটে গেছে উনিশ বছর ।প্রতিদিন সন্ধ্যায় মা একটা মোমবাতি জ্বেলে দিতেন প্রভুর সামনে,আর মায়ের বড় বড় চোখ দুটো থেকে জল গড়িয়ে গাল বেয়ে নামতো ।এতদিনে আইভি তার ভালো নামের অর্থ বুঝতে পারে;সমর্পিতা ডিকোস্টা বিশ্বাস ।হ্যাঁ প্রভু যীশুর চরণে সে সমর্পিতা ।
0 Comments.