- 17
- 0
ভালোবাসার অর্ঘ্য
প্রেমটা চিরদিনই ব্রাত্য ছিল আমার জীবন সীমায়,
সে তো শুধুই এক কামনার কায়া, সম্ভোগের থালায়।
আমি আজীবনের ভালোবাসার পূজারীণী,
আপন মনের অর্ঘ্যে বরেছি তাকে, মন আঙিনায় সাজিয়েছি যতনে এক রূপকথার আবেশে।
তবু কিছু খামতি ছিল কোথাও হয়তো সময় পরিস্থিতির অপরিসর সীমায়,
তাই প্রতিটা রাগ-রাগিণী বাজেনি সঠিক মূর্ছনায়।
তবুও প্রাপ্তি ছিল, সুরবাহারে সুর উঠেছিল,
হয়তো কখনো সময়ের আগে হয়েছিল আরোহণ,
তেমনই বহু সময়ের আগেই হয়েছিল সব সাঙ্গ,
সঠিক আরোহণ, অবরোহণের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘে।
তাই রয়ে গিয়েছিল বাকি মনের মতো পুজোর অবকাশ,
বহু আক্ষেপ গোপনে অশ্রু ঝরাতো একাকী সংগোপনে।
পূজার উপাচার রয়েছিল পড়ে নৈবেদ্যের থালায় ব্রাত্য হয়ে...
কাটছিল কিছু সময় নিরুচ্চারে, ধূসরতার ধূলো মেখে,
মৃতবৎ মন পড়েছিল সব স্বপ্নের বাসি মালায় সেজে
কোথাও কোনো চাওয়া-পাওয়ার অবশেষটুকু না রেখে।
ভালোবাসাটা হয়েছিল এক অধরা রূপকথা...
কিছু সময়ের ব্যবধানে তুই এলি,
তখন আমার শূণ্য দৃষ্টি, তোর পানে চেয়েও চিনতে পারিনি তোকে!
নোনা জল ঝাপসা করে রেখেছিল পথ,
তবু ঈশ্বর যেন নিয়েছিল শপথ আমার মনের পূজা নেওয়ার...
কি নিপুণতায় পেশ করলেন তোকে বাকি রাখা পূজার সব উপাচারে সাজিয়ে,
মনের কুয়াশা কাটিয়ে দেখালেন অবয়ব যেন রূপকথারই পর্দা তুলে!
কতোটা সময় নিয়ে সারলেন সুরের আলাপ বিস্তার,
যেন পরতে পরতে খুলতে লাগলেন মনের ধূসর আবরণ।
সংগীতের মতোই সব অলংকারে মনকে করে নবরূপে আভূষিতা,
প্রতিটা দিনের, প্রতি ক্ষণের রাগ-রাগিণীর অপরূপ মেলবন্ধনে,
সময়ের গতিধারায় খুব ধীর-স্থির শান্ত লয়ে বেঁধে।
যেন নব কলেবরে নবরূপে ভালোবাসার পূজার নিবদনে...
অবাক আমি চেয়ে রই আজ তোর ভালোবাসার নিপুণ অবরোহণের দিকে,
এক অমোঘ মূর্ছনার আবেশে মন ডুবে থাকে,
সমর্পিত হয় আপনা থেকেই।
প্রতিটা বাদ্যের প্রতিটা নিপুণ সঙ্গত এক অপরূপ ঝংকারে বাজে,
সৃষ্টিতে মাতে যেন কতদিনের কাঙ্খিত এক মনের জলসা...
আসলে তুইও যে এক ভালোবাসার পূজারী,
তাই মনের অর্ঘ্যে করিস নিত্য পূজা তার।
মিলে যায় তাই দুটি পথ এক মনমন্দিরে এসে,
ঈশ্বর নেন সেই অর্ঘ্য কিছু আশীষে,
কিছু প্রসাদী ভালোবাসায়...
0 Comments.