Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী

maro news
গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী

ঠিকানা পেয়েছে ফিরে

সেসব ছিল কোনো এক কালের কথা। মানুষ প্রকৃতির সন্তান রূপে সবকিছুকে খুব যত্ন করে ব্যবহার করা হত। গাছপালা নদী সাগর জল বাতাস অর্থাৎ প্রাকৃতিক সব কিছুই ছিল মানুষের কাছে দেবতার মতো পূজনীয়। তাইতো নদীকে গঙ্গা, সাগরকে নীলদেব, জলকে বরুণ, হাওয়াকে মরুৎ, বজ্র বিদ্যুৎকে ইন্দ্র রূপে পূজার প্রচলন হয়। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ রূপে এই সব প্রাকৃতিক উপাদান অপরিহার্য। মাটি জল বাতাস সূর্য গাছপালা এগুলোই এই পৃথিবীর আসল উপাদান। গাছথেকে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান ওষুধপত্র শ্বাস নেবার জন্য অক্সিজেন সব কিছু পাই। আর বাতাসের যতরকম খারাপ উপাদান সেটা কার্বন ডাই অক্সাইড হোক বা অন্য কোনো খারাপ গ্যাস সেগুলি গাছ শুষে নিয়ে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় রাখে। তাইতো ঋষিরা মানে প্রাচীন কালের সাইন্টিস্টরা তাদের গুরুগৃহ গড়ে তুলতে অরণ্যের কোলে। শিষ্যরা বৃক্ষলতার কার্যকারিতা ও গুণাবলী সম্পর্কে খুব সহজেই চিনতে ও জানতে পারত। বর্তমানে সভ্যতার নামে তৈরি হয়েছে মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং। সেখানে বড় বড় গাছ নেই। ধুলো নেই, কাদা নেই, প্রাকৃতিক হাওয়া নেই। গাছে ফুটে থাকা ফুলের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য নেই। প্রজাপতি ভ্রমর জলফড়িং বনের পাখি - কিছুই নেই। এখানে যন্ত্রের সাহায্যে জীবন কাটাচ্ছে মানুষ। বর্তমানে ফ্ল্যাট নামের এক একটা সুউচ্চ বস্তিতে সবাই এয়ার কন্ডিশনের হাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সংসারের যাবতীয় কাজ মেশিনের সাহায্যে করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে এমনকি শ্বাসবন্ধ হয়ে যাওয়ায় জোগাড় হয়। এই যন্ত্রের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মরিয়া মানুষ আবার নতুন করে বাগান সাজিয়ে তুলছে। কেউ ছাদবাগান, কেউ ব্যালকনিবাগান আবার কেউ ঝুলন্তবাগান তৈরি করে সবুজের চাষ শুরু করেছে। সবজি ফুল ফলের গাছ লাগিয়ে নিজেদের জীবন থেকে অসুখ বিদায়ের প্রস্তুতি নিয়েছে। তাইতো আবার বর্ষায় জল ফড়িং আর রংবেরংয়ের প্রজাপতির আনাগোনা শুরু হয়েছে। চড়ুই শালিখ টিয়া বুলবুলিরা ফিরে পাচ্ছে তাদের পছন্দের ঠিকানা।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register