Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকি (সাবেক কথা - ২৪)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকি (সাবেক কথা - ২৪)

সিরিজ সাবেক কথা

পাতিল 

'কোন নদীতে ডুইব্যা মরার লাইগ্যা উথালিপাথালি করতাসো কইন্যা, ধইন্য তোমার কলিজা, লও নাওখান ভাসাইয়্যা দিয়া উদ্ধার করো আমারে' ---

অশ্বগন্ধা নারীর এ হেন উর্বরতা, ভাবলে নিমেষেই কেঁপে ওঠে শরীর। নদীর মতো মেয়েমানুষ নাকি পথভ্রষ্ট কোনো পুরুষের চোখের নষ্টঘুম, কলিজার সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য লেখা থাকে কোন পুঁথিতে? নৌকার বিপরীতে অভিনয় করে আলেয়ার সমবয়সী কোনো এক আগুন। দাউদাউ জ্বলা উনুনের অগ্রভাগে কে যেন রেখে গেছে পাতিলভরা গঙ্গাজল। আশেপাশে ছিটিয়ে আছে আতপ। মৌন সমর্পণ সেরে করতলের মেঘ সরাতে সরাতে ঘন সন্ধ্যা হয়ে এল যখন তখন ওই মেয়ের কপাল জুড়ে দরগার মাটি কমলা সূর্য।

যে পাতিলে রান্না হত কোনো এক বৈদিকযুগে, কাদামাটি ছেনে ত্রিমুখী চুলায় জ্বলে উঠত পাটকাঠির আগুন, আজ সেখানে শুধুই জল।বুকসমান জলে পাপ। ছেড়ে যাচ্ছে হাজার প্রজাপতি। পাতিল ভাঙছে, গড়ছেও অজস্রবার। স্থির জলরাশি এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে গোড়ালি সমান দৈর্ঘ্য। আরাধ্য অথবা অর্জিত, পাতিল মাড়িয়ে যাচ্ছে যারা, প্রত্যেকেই বোবা। শব্দ-কম্পনে অনিরুদ্ধ বাসনা। ভাসানের হদিশ পেলে যেমনভাবে নদীর প্রান্তে জমে যায় ভিড় সেভাবেই পাতিলের গা ভরে থিক থিক করছে পিঁপড়ের দল। মানুষের ভিতর অন্ধকার, গোপন ডেরা, লজ্জাবাঁক। পিঁপড়ে ঢুকে যাচ্ছে সর্বত্র। দরজার বাঁদিকে এক বিরাট গর্ত,মাটি লাগা পা এসে ধুয়ে নিচ্ছে মানুষ। পাশেই কাঠচাঁপা, প্রত্যেকের চোখে জল। পোড়ামাটির পাত্রের গা বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে মরণের অযুত সংলাপ। সামান্য ছাই আর... সামান্য বালিকার কলিজা শরীর ছাড়িয়ে এখন ব্রহ্ম মুহূর্তে। সে নাও ছাড়ে বাঁধে, পারাপারের পর চেয়ে নেয় পারিশ্রমিক। অশ্বগন্ধা মেয়ের গায়ে তাই মৎসবীজ। পাতিলভরা জলে একপাশে মায়া আর অন্যপাশে অনিত্য সূত্র। নির্বাসনের নামে উপাসনা গুছিয়ে রেখেছে যে রাইকমল, সেই রাইকমলের নামেই বরাদ্দ একটি জলপ্রপাত

৭ই জৈষ্ঠ্য রাত ২:৪৫ ইছাপুরের বাড়ি
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register