Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সায়ন (পর্ব - ২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সায়ন (পর্ব - ২)

অমৃতায়ণ

অমৃতা ঘর দেখতে ভিতরে চলে গেছে। এখনও আমি একা এই শূন্য গলিতে দাঁড়িয়ে। বাড়িটা আরও অবাক করে দিচ্ছে আমাকে । এত সুন্দর করে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে সম্পূর্ণ রূপে বাড়িটা তৈরি করে কেউ এলো না। কেন? কাদের জন্যে এই বাড়ি তাহলে! - জানি না কেন যে এই বাড়িটা তৈরি হল - এর কোনও গৃহপ্রবেশ হয় নি? - নাহ! শুধু দেখেছিলাম কজন রাজমিস্ত্রি এই বাড়িটায় কাজ করেছিল। লেবারদের এত চুপচাপ কাজ করতে আগে কখনও দেখি নি। বাড়িওযা়লার সঙ্গে প্রথম কথা বলতে আসার সময় এই কথাগুলো হয় । এই কথাগুলো হতে হতেই সমস্ত সময়টা কেটে যায় । সেদিন উনি বলেছিলেন বটে - "আপনাদের ঘরটা দেখবেন না?" আমি চুপচাপ চলে আসি। বাড়িটা ঠিক রাস্তার বাঁকে, একটা ত্রিকোণ তৈরি করেছে। আমি ত্রিকোণের শীর্ষবিন্দুতে এসে দাঁড়াই, ঠিক উল্টো দিকেই বিরাট একটা ডোবা। এই নৈঃশব্দের ভাষালিপি এখন অনেকখানি আয়ত্ত করে নিয়েছি। তাহলে একটা ভাষা আছে নাকি..... একটা কল পাম্প করার শব্দ আসছে। কোথায় ? .... সকালবেলায় জানলা বন্ধ করা একটা ঘর আমাদের ভাড়া বাড়ির ঠিক পাশেই। মানুষ আছে এখানে? নাকি এখানে প্রকৃতি এমনভাবে শাসন করছে যে মানুষ নামক জীব বড়ই সন্ত্রস্ত হয়ে থাকে সদা সর্বদা। অবাক করার বিষয় ঘরের একটা দরজা লাগানো হয়েছিল এক সময়, যে ঘরে কাঁচা ইট দিয়ে নগ্ন হয়ে দাঁডিযে় আছে দেওয়াল। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে তাহলে কি নিকষ সময় একটা চিন্ময় মানবের আকার নেয়..... প্রকৃতির বিবর্তনে জড় প্রাণ মন - পরিবর্তনের কালরেখায় শেষ উদ্ভব ঘটে মানব। চিৎশক্তি নব উন্মেষ দেখে বোঝা যায় মন অপেক্ষা এক শক্তি পূর্ণভাবে উন্মোচিত হবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে। এই আত্মা দেহ-প্রাণ-মন থেকে ভিন্নতর এক সত্তা। এখনে তো একটা নতুন জীবন তৈরি করতে এসেছি আমার স্ত্রী কে নিয়ে। তবুও চাপা বিবর্ণ ঘরের ভিতর অলিগলির মধ্যে চোখ কেন খুঁজতে চাইছে কোনও পা'যে়র ছাপ.....অজানা ঊর্ধ্বলোক থেকে একটা সর্বভূত ভোক্তা কি আমার আত্মার মধ্যে আসতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে? পা এর শব্দ আসছে ....
- "কি গো?" অমৃতা কাঁধে হাত রাখে। "অন্যের বাড়িতে উঁকি দিচ্ছো কেন?" কেঁপে উঠলাম। - ও তুমি! হ্যাঁ... কোথায় অন্যের বাড়ি! - এই যে - এই বাড়ি তো কারোর নয়... 'অন্যের' বাড়ি কেন বললে তুমি ! তোমার ও কি মনে হয়- - আমাদের নিজেদের ঘরটা দেখা উচিত এখন। কথাটা শেষ হল না নাকি? অমৃতার ঠোঁটের কোণে এমন একটা হাসির প্রলেপ রেখা যা শুধু দীর্ঘ সময় ধরে আমার ভাবনার সাথী হয়ে থাকবে। ওর সিঁথিভরা তীব্র লাল রঙের লেলিহান মার্গ থেকে উচু গাছের সারির সবুজ বিকিরণ শান্ত করতে চাইছে আমার চোখে। কিন্তু আমার চোখ ওর মধ্যে ডুবে যা দেখছে, তা হয়তো দেখার কথা ছিল না আমার... অমৃতা বললো - কেমন লাগছে গো আমাকে? আস্তে আস্তে মেঘের মুখে চলে যাচ্ছে সূর্য ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register