Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সমীপেষু

maro news
সমীপেষু

সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক

ওরা দিনের বেলায় যাদের দেখে শুধু ঘৃণা ছেটায় আবার রাতে তাদের বধূ করে, পশুর খিদে মেটায়, ওদের এমন যাদু দিনে সাধু, নামাবলি ওরা পরে যে গায়। ওরাই রাতের ভ্রমর হয়ে নিশিপদ্মের মধু যে খায়।।
(গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার)
ইদানিং কালে বাজারে সূর্যদেবের কদর বেড়েছে। কবি সূর্যদেবের কথা কাগজে, ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপের গ্রুপে গ্রুপে। সূর্যদেব কবিতা লেখেন বলেই জানতাম, আজও তাই ই জানি। জনৈক জেষ্ঠ্য কবির কলমে তার মানে, কবি সূর্যদেবের বেশ কিছু সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের হিসেব পড়ছিলাম। সূর্যদেবের দায়িত্ব পড়েছিলো পশ্চিমাঞ্চলের বাংলা কবিতায় বিশেষ আলোকপাতের। দায়িত্ব দিয়েছিলো আকাদেমি। তা সূর্যদেব কোন অঞ্চলে বেশি কিরণ ছড়াবেন তা নিয়ে আমার বলবার বিন্দুমাত্র অধিকার নেই, ঠিক যেমন রুচি নেই তার সিঁড়িভাঙা অঙ্কের ইতিহাস আর তার ফলাফল জানবার। কিন্তু দুটি বিষয়ে আলোকপাত আর দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন বোধেই এই কথাগুলির অবতারনা। প্রথমত, সূর্যদেবের কবিতাগুলো এতদিন পর হঠাৎ করে অনুত্তীর্ণ মনে হবার কারণ কী? এই সূর্যদেবকেই আমরা না বিভিন্ন সাহিত্য বাসরে,সাহিত্য মেলায়, দেশে-দশের মঞ্চে ডেকে নিয়ে গেছি! তাহলে আমরাও কি পরোক্ষভাবে বা বৃহত্তর সিঁড়িভাঙা অঙ্কের অংশীদার নই? আমি কিন্তু পার্সোনালি এমন অনেককেই চিনি যারা কৃত্তিবাসে লেখার জন্য সকাল বিকেল দুপুর এক করে দিতেন তাঁকে তৈলমর্দন করতে করতে। একটা গোটা ম্যাগাজিনের বিষয়বস্তু তাঁকে বানানো, তাঁকে বই উৎসর্গ করা- এগুলো আমাদের ছোট্ট ছোট্ট সিঁড়িভাঙা অঙ্ক নয় কি?
দ্বিতীয়ত, আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি এই সূর্যদেবদের সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের গল্প শুনি, গল্প জানি, দুদিনের জন্য প্রতিবাদ ও করি। তারপর? যে সিঁড়িভাঙা অঙ্ক কষতে কষতে ওইসব আকাঙ্খিত সুউচ্চ ক্ষমতার আসনে বসা যায় সেই সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মাস্টার আর ছাত্র দুইজনকে পরিত্যাগ করি না কেন? ক্লাসরুম ভেঙে গুড়িয়ে দিই না কেন? সিঁড়ি পেলে আমিও ভাঙবো তাই না? প্রতিষ্ঠান বিরোধী তকমা গায়ে নিয়ে প্রতিবাদী হওয়া আর রাতে শুতে যাবার আগে দেশ, কৃত্তিবাসের মেলে টুক করে লেখাটা পাঠিয়ে দিয়ে হালকা করে হিসু করে শুয়েপড়া আমরা প্রত্যেকেই একএকজন সূর্যদেবকে ভেতরে পালন করি না কি?
তৃতীয়ত, সূর্যদেবের কটা কবিতার বই আছে আর তাদের নাম কী কী তা কজনই বা জানে সত্যি করে বলুন তো। একটু খারাপ করে বলি? একশ জন পাঠকের মধ্যে দুজন ও জানেন না। অথচ গত এক সপ্তাহে অধ্যাপক—কবি সূর্য দেবের নাম ও তাঁর মহান কীর্তি দিকে দিকে দায়িত্ব নিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছি আমরাই। বদনামের চেয়ে বড়ো বিজ্ঞাপন হয় না। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, চাইলে আপনারাও খোঁজ নিতে পারেন এই করোনা জনিত লকডাউনের আবহেও অনলাইনে সূর্যদেবের বইএর চাহিদা বেড়েছে।এটাই আমরা, প্রতিবাদী বাঙালিরা সন্তর্পণে যুগ যুগ ধরে করে আসছি।
না আর কিছু বলার নেই।যেটুকু বলতে চেয়েছিলাম বোধকরি তার থেকে বেশি শব্দ ব্যায় করেছি। তার নামটা উচ্চারণ করলাম না কোনো সমীহে নয়, কোনো ভয়ে নয়, কোনো সিঁড়িভাঙা অঙ্কের দায়ে নয়। স্রেফ আর স্রেফ তার কোনো প্রচার করবো না বলে।

শাল্যদানী

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register