Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৫০

maro news
ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৫০

ফেরা

পরদিন, ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে বেরোতে বেরোতে আটটা বেজে গেলো। আজকের গন্তব্য বদ্রীনাথ। উখিমঠ থেকে যেতে প্রায় সারাদিন লেগে যাবে গাড়িতে। কথায় আছে আগে নাকি একই পুরোহিত কেদারনাথ ও বদ্রীনাথের পুজো করতেন। এতে তাঁর সারাদিন কেটে যেত। ঘর গেরস্হালিতে সময় দিতে পারতেন না। পুরোহিতের স্ত্রী ক্রুদ্ধ হয়ে যান দিন দিন স্বামীর থেকে সময় না পেয়ে( দেখা যাচ্ছে সব সমান, কি ত্রেতা যুগ কি ঘোর কলি)। তপস্যার মাধ্যমে পুরোহিত পত্নী লাভ করেন বর, কেদার বদ্রীর যে রাস্তা দিয়ে পুরোহিত যাতায়াত করতেন, সেখানে এক পর্বত প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে পরে। পুরোহিতের দুই জায়গায় পুজোয় ছেদ পড়ে, এক জায়গায় পুজো করেই তাঁকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। পরিবারকেও সময় দেন, হাসি ফোটে তাঁর স্ত্রীর মুখে, স্বামীকে কব্জা করতে পেরে( সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে)। এদিকে সেই পথের গল্প মিথ হয়ে ঘোরে পর্বতারোহীদের মধ্যে। অনেক চেষ্টা ও চলে, কিন্তু পাওয়া আর যায় না। দুই অসমসাহসী বাঙালি পর্বতারোহী ১৯৮৪ সালে এই অভিযান করেন, কিন্তু সেই সন্ধান করতে গিয়ে তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান, আজ অবধি তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। কয়েক বছর আগে, গুগল আর্থের স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে সত্যি সত্যিই সেই পথের সন্ধান পাওয়া যায়, এক পুরোহিত, দুই ধাম এই তত্ত্ব ও প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু অভিযাত্রীরা আজও তাঁদের প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। উখিমঠের মন্দির, যেখানে শীতকালীন কেদারনাথের পুজো হয় প্রথমে দর্শন করতে গেলাম। সেটি দেখে পরবর্তী গন্তব্য চোপতা। এটি আসলে একটি স্টার্টিং পয়েন্ট। এখান থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার মতো ট্রেক করে পৌঁছে যাওয়া যায় পঞ্চ কেদারের আরেক তীর্থ তুঙ্গনাথে। ইচ্ছা থাকলেও আমাদের যাবার সময় ছিলো না। তবে চোপতার অসাধারণ পরিবেশে, ঝকঝকে আকাশের নীচে, চতুর্দিকে সুবিশাল পর্বত দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে গরম কফি পানের মজাই আলাদা ছিলো।
সাত বছর পর আবার ঐ রাস্তা দিয়ে যাবার সময় চোপতাকে চিনতে পারিনি। প্রচুর ভিড়ে, সে যেন এক পিকনিক স্পট। বড্ডো কষ্ট হয়েছিল।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register