Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে গল্পে চিত্রা মুখার্জী

maro news
ক্যাফে গল্পে চিত্রা মুখার্জী

শীলার জীবন

শীলার বয়স তখন মাত্র ১২ বছর।সে তার বাবা ও মায়ের সাথে বাংলাদেশ থেকে এসেছে এদেশে। ১২ বছর মানে মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত পাত্রী। উপযুক্ত পাত্রের খোঁজ চলছে। খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া গেল চারগুণ বয়স বেশি একটি পাত্রের। শীলার বাক্ স্বাধীনতা নেই,সে বাবা ও মায়ের হাতের খেলনা। যাইহোক, বাপের বয়সী পাত্রের সঙ্গে শীলার যথাসময়ে বিয়ে সাঙ্গ হল।
বিয়েই হলো, ঘর হলো না।
বিয়ের পর শীলা বাপের বাড়িতে রয়েছে। শীলার জৈবিক কাঠামো উপযুক্ত হলে তাকে শ্বশুর বাড়ি পাঠানো হবে, এই ছিল রেওয়াজ।
বিধাতার কি নিষ্ঠুর পরিহাস!
বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এক কঠিন ব্যাধি শীলার স্বামীর প্রাণ নিল কেড়ে। শীলার গায়ে চড়িয়ে দেওয়া হলো সাদা থান।
যে মেয়েটি সদ্য রঙীন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে,
সমাজের এক মারণ রোগ তার সব রঙীন স্বপ্ন গুলোকে শুষে নিয়ে ঢেলে দিল সাদা রঙ।
কি দুর্বিষহ মানবিকতা!
যে ছোট্ট মেয়েটি মাছ ছাড়া এক গ্রাস ভাতও মুখে তুলতে পারে না, তার পাতে ঢেলে দেওয়া হলো শুক্তোর ঝোল। তার পাশে বসেই মাছ, মাংস দিয়ে মহাভোজে রত আছে পরিবারের অন্যান্যরা (এমনকি মা,বাবাও) ।
ধিক্ এই সমাজের চিন্তাকে।
শীলা সারাজীবন সাদা থান আর নিরামিষ খেয়ে যখন ৭০ বছর বয়সে কঠিন রোগে আক্রান্ত, তখন সে ঘোরের মধ্যেই বলে চলেছে-
" লাল, নীল ফিতা পড়ে সে স্কুলে যাবে।
মাছ খাবে, মাংস খাবে ।"
অবচেতন মনে শীলার অতৃপ্ত বাসনাগুলো বেরিয়ে আসছে।
শীলার এক আত্মীয়া চুপিসারে শীলাকে মাছ, মাংস, ডিম সব খাইয়ে দিয়েছে।সে ভেবেছে,
পাপ বলে যদি কিছু থাকে তার হোক, তবুও শীলা শান্তি পাক।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register