Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে বিচিত্র কুমার (গুচ্ছ কবিতা)

maro news
কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে বিচিত্র কুমার (গুচ্ছ কবিতা)

১| প্রেমিকা

স্বপ্নপূরীর পার্কে রঙিন ঘিরাপান্তর ভিষণ নির্জন
চতুর্দিকে জোড়া জোড়া বুলবুলিরা কথা বলছিল;
তখন তুমি ছাতাচত্বরে বসে হৃদয় দিয়ে আমাকে মাপছিলে
আমার চোখে রঙিন স্বপ্ন দেখছিলে ছলবল।
পাখপাখালির কলকালরির মধ্যে-
হঠাৎ তুমি যেন বললে আদর করবে,
মুহূর্তেই আমি রাজি হলাম উতলা হাত্তয়াতে
তোমার অবাক করা ক্ষুদার্ত শরীরে---।
তোমার একাকিত্বতা আমার ঠোঁটের কাছে
চায়ের উষ্ণ চুমুকে চুমুকে;
তুমি আরও জড়িয়ে ধরলে বাঘীনির মতো
থেকে থেকে।
তোমার দীর্ঘলকালো চুলগুলো হাওয়াই উড়েউড়ে পড়ছিল :
আমার চোখে মুখের পর;
পলকে পলকে ঝলকে ঝলকে
দুজন বেঁধেছিলাম বালু দিয়ে ভালোবাসার ঘর।
পড়ন্ত বিকেল নামছিল আলোকচিত্র পৃথিবীর পর
হঠাৎ তুমি চলে গেলে আসি বলে পাখির মতো ঘর।

২| কেউ তো একজন আসুক

কেউ তো একজন আসুক-
পাখির কলকালরির মতো আমার স্বপ্নের ঘুম ভেঙে দিতে
জানলার পাশে দাঁড়িয়ে কোকিলের মতো শিস বাজিয়ে
চুপিচুপি আমাকে কাছে ডাকুক হাত ইশারাতে।
আমাকে তাড়াতাড়ি উঠানের দুয়ার খুলে ভেতরে ডাকতে
তার নিদারুণ ভেজা কপালে চুম্বন আঁকতে।
কেউ তো একজন আসুক-
তার মুখশীর একঝলকের মিষ্টি হাসিতে
ওর এলোমেলো চুলগুলো হাওয়ায় উড়াতে উড়াতে
টানাটানা চোখ দুটোর না বলা ভাষাতে।
এসো বলুক প্রিয় দুজন একটু সময় কাটাই প্রেমেতে
বকুল ফুলের মালা গাঁথতে গাঁথতে।
কেউ তো একজন আসুক-
জ্যোৎস্নার ভিতরে আল্পনা হাতে
উঠানের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে প্রেমময়ী আলাপে
সন্ধ্যার পরে বলুক গগনে চাঁদের আলো ছড়াতে।
সারারাত মধুচন্দ্রিমা চাঁদের ছায়াতলে কাটাতে
দুজনে হাতে রেখে হাত তেপান্তরে হারাতে।

৩| শিশিরের চোখে অশ্রুপাত

বাঁকাচাঁদ নখে আঁচড় কাটে গন্ধ ছড়ায় পূর্ণিমা রাত
গগন জুড়ে খেলা করে প্রেমের অনুপাত,
আকাশের বুকে তারাগুলো ঝকমকিয়ে জ্বলে
ঝিঁঝিঁ পোকার গানে ফুরাই না জোছনার রাত।
মেঘোরাশি প্রিয়তমার নাম লিখে হাতের তালুতে
সাদা আর কালো রঙে শিশিরের চোখে অশ্রুপাত।
শিশির কাঁদতে কাঁদতে হারিয়ে ফেলেছে বয়সটা
কেঁদে উঠে আঁধার ফোটেনা বিয়ের ফুল,
ভোরের দক্ষিণা বাতাসে মিছিলে শ্লোগানে মুখোরিত-
এক রূপ লাবণ্যের কন্যা অরুন্ধুতির চুল।
ঘাসফুল শিশিরের ভালোবাসায় ভিজতে ভিজতে ক্লান্ত
প্রেমিকের সমস্ত শরীর লাউয়ের ডগার মতো অমিমাংসিত।

৪| প্রেমের ব্যাকরণ

আমি প্রেমের সজ্ঞা জানিনা-
তোমার কাছে প্রেমের ব্যাকরণ শিখতে শিখতে,
কখন যে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি জানিনা
সে কথা তুমিও জানো প্রেমের ক্লাসে।
নিজেকে নিজের বাস্তব দুনিয়ায় দাঁড় করিয়ে রেখে
সীমাহীন আকাশের গায়ে রোমান্টিক চিত্রকথায়,
যেনো অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ভাষায় তোমায় ভালোবাসা জানাই
অভূত এক মায়ার ঘ্রাণ ভেসে আসে নীরবতায়।
এ হৃদয়জমিন প্রেমের ব্যাকরণ মানে না
শুধু উড়ন্ত মন তোমাকে কাছে চায় বারবার,
রাধারাণীর দীর্ঘ আকুলতা কিম্বা কৃষ্ণের সুমধুর বাঁশিতে
না  জানি বাকী প্রেমের পদাবলী লিখবার।
অথচ তুমিই ছিলে আমার বেঁচে থাকার স্বপ্ন
আমার প্রথম ও শেষ প্রেম,
চুম্বনহীন সঙ্গম কিংবা প্রেমিকাহীন স্বপ্নে
তোমার নাম লিখে গেলাম।

৫| উপহার

চাইনি আমি তোমার ভুরু ছুঁতে
চাইনি আমি তোমার ওষ্ঠ ছুঁতে,
কিম্বা তোমার সমস্ত কচি ডানার নীড়
অথবা তোমার জীবন্ত শরীর।
একদিন তুমি আমাক দেখিয়েছিলে
গোলাপ পাপড়ীর উন্মুক্ত শুভা,
রকমারি ফুল ফুটছে ভিন্ন স্বাদের
ভিতরে রয়েছিলো ফুটন্ত রক্তজবা।
তুমি আমাকে দিতে চেয়েছিলে
তোমার শরীরের সব কাম বাসনা অলঙ্কার,
আমি শুধু চেয়েছিলাম তোমার কাছে
দু-ফোঁটা অশ্রু উপহার।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register