Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

অণুগল্পে পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি

maro news
অণুগল্পে পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি

প্রেম-খুন

রবিবারই দ্বিরাগমন শেষে ফিরেছে রমেন আর শ্বেতা। বিয়ের পরে মধুচন্দ্রিমার আশায় আগে থেকেই জল ঢেলে দিয়েছিলেন অফিসের ম্যানেজার। বলেছিলেন এখন বাড়তি ছুটি দেওয়া যাবে না। পরে লম্বা ছুটি নিয়ে বেড়াতে যাবেন। আসলে ম্যানেজার নিজেই বদলির চিঠি হাতে নিয়ে বসে আছেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পরে রমেন আর শ্বেতার বিয়ে। শ্বেতা বিশাল ধনী পরিবারের মেয়ে। পরিবারের পরিচিত কেউ চাকরি করে না। সবাই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাই চাকরি বিষয়টার সহবৎ ওর নেই। গতকাল রমেন বিয়ের পরে প্রথম অফিসে গেছে। নীচের ফ্ল্যাট ছোট ভাইয়ের নামে। ও এখনো পড়ছে। বাবা-মা নীচেই থাকেন। ওপরের ফ্ল্যাট রমেনের নামে। ভাই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গেলে বাবা-মা দেশের বাড়িতে গিয়ে থাকবেন এমন পরিকল্পনা করে রেখেছেন। রবিবারই মা শ্বেতাকে বলেছিলেন অসুবিধা হলে আমাকে বলবে। শ্বেতার অভিমানে বা সম্মানে লেগেছিল। ও ভেবেছিল রমেনকে অফিসে পাঠানোর আর কি হ্যাপা আছে। কাজের লোক তো আছেই। আর পরের সপ্তাহ থেকে তো শ্বেতাকেও অফিস ছুটতে হবে। তখন কে কাকে সামলাবে? কিন্তু, প্রথম দিনেই ঝামেলা দেখা দিল। ন’টার সময় রেডি হয়ে শ্বেতাকে বললে, “আমার সামগ্লাসটা দাও তো!” “কোথায় আছে আমি কি করে জানবো?” “ওয়াল আলমিরার ওপরের তাকে।” শ্বেতা খুঁজে পেলো না। অপেক্ষা না করে রমেন বেরিয়ে গেল। বাড়ি ফিরে এলো রাত আটটার সময়। সদ্যবিবাহিত বলে ম্যানেজারের কাছে কোন সমবেদনার লেশমাত্র পেলো না রমেন। রাতে মা নীচে এসেছিলেন। অনেকক্ষণ ছিলেন। মা চলে যাওয়ার পরে রমেন আর শ্বেতা খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়েছে। রমেনের তো শুয়েই নাকডাকানি। শ্বেতার কাছে রমেনকে কেমন যেন অচেনা মনে হলো। প্রেমিক রমেন যেন অন্যরকম ছিল। পরের দিন অফিসে বেরোবার আগে আবার রমেন সানগ্লাসটা চাইল। শ্বেতা বললো, “তুমি যেখানে বলেছিলে সেখানে পাইনি।“ “আমাকে রাতে বলনি কেন?” “তুমি ফিরে রেস্ট নিতে নিতে মা চলে এলেন। আর তারপর ক্লান্ত তুমি তো খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লে।” “ননসেন্স! এসব অজুহাতের কথা। আসলে তুমি ভুলেই গিয়েছিলে।” বলেই রমেন অফিসের পথে বেরিয়ে গেলো। শ্বেতা বুঝলোঃ ওরা আর এখন প্রেমিক-প্রেমিকা নেই। ওরা স্বামী-স্ত্রী!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register