Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৪৬)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৪৬)

সোনা ধানের সিঁড়ি

৮১
আকাশে চাঁদ ওঠা মানেই আমার সন্ধেবেলার পড়াশোনা দফারফা। ১৯৮৩, ৮৪ সালের কথা। তখনও আমাদের গ্রামের বাড়িতে ইলেকট্রিকের আলো মানে এক কল্পনার জগৎ। আলো বলতে হ্যারিকেনের আলো। উঠোন পর্যন্ত সেই আলো পৌঁছাতো না। কিছুটা দূরে রান্নাচালায় লম্ফর আলোয় মা রান্না করত। তাই উঠোন অন্ধকারেই ডুবে থাকত।
আকাশে চাঁদ উঠতে শুরু করলেই উঠোনে অন্ধকার বলে কিছু থাকতো না। তখন আমার চোখ বই হ্যারিকেন দুয়ার ছাড়িয়ে একেবারে উঠোনে। মন তো কখন চলে এসেছে। একঘেয়ে বসে আছি পায়ে লাগছে ----- এরকম নানা অজুহাত দেখিয়ে উঠোনে নেমে আসতাম। দিদির শাসনের ডাক যখন চিৎকারে পরিণত হতো তখন ভয়ে ভয়ে আবার দুয়ারে উঠে এসে বইয়ের সামনে বসতাম।
পূর্ণিমার দিন আমার কাছে উৎসব। সেদিন আর বইয়ের দিকে ফিরে তাকানো নয়। গরমকালের পূর্ণিমার দিনগুলোতে উঠোনে এসে শুই। উঠোনে বসে ভাত খাই। কখনও আবার পাড়ায় একটা গামছা গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ি। এরকমই এক পূর্ণিমার দিনে সন্ধে পেরিয়ে যেতে বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথে পুলের ওপর এসে বসি। বসে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়ে গেছি জানি না। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে কেউ আমাকে ডেকে ঘুম থেকে তুলে দেয়। দেখি চারপাশে কেউ কোথাও নেই। সব চুপচাপ। বাড়ি ফিরে কাউকে কিছু না জানিয়ে শুয়ে পড়ি। সেদিন যদি আমায় কেউ ডেকে না দিত তাহলে খোলা আকাশের নিচে আমার জন্যে যে কি অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে ছিল কে জানে!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register