Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪১)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪১)

কেমিক্যাল বিভ্রাট

সে যাই হোক। অভিমন্যু মনে মনে ঠিক করল, সে আর গলির মুখে গিয়ে ওর জন্য হা-পিত্যেস করে অপেক্ষা করবে না। কক্ষনো না। তার চেয়ে বরং… হ্যাঁ, রিকি তার খুব ন্যাওটা। রিকিকে সুস্মিতাও খুব ভাল বাসে। সে দেখেছে, রিকিকে দেখলেই রিকির তুলতুলে গাল দুটো ও খুব করে চটকায়। আদর করে। চুমু খায়। বাড়িতেও নিয়ে যায়। অভিমন্যু ঠিক করল, হ্যাঁ, ওর হাত দিয়ে সুস্মিতার কাছে চিঠিটা পাঠাবে। তবে... ও তো একটু ছোট। সবে ফোরে পড়ে। ওকে পইপই করে বলে দিলেও ও যদি সুস্মিতাকে না পেয়ে ওদের বাড়ির অন্য কারও কাছে চিঠিটা দিয়ে দেয়! কিংবা সবার সামনেই যদি সুস্মিতার হাতে দিয়ে বলে, এই নাও, এটা অভিদা পাঠিয়েছে। তা হলে কেলেঙ্কারির একশেষ। একটা মারও আর বাইরে পড়বে না। বলা যায় না, ওদের বাড়ির বড়রা এসে হয়তো তার বাবা-মাকেও বলে যেতে পারে, তাদের একমাত্র ছেলের এই কেলোরকীর্তির কথা। তখন? তখন একটাই উপায়। সঙ্গে সঙ্গে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে চিঠির কথা একদম অস্বীকার করা। এমন ভান করা, যেন এটা শুনে একেবারে আকাশ থেকে পড়ল সে। মুখের ওপরে সরাসরি বলে দেওয়া, ওটা আমার লেখাই নয়… আর সেটা করতে গেলে প্রথমেই যেটা করতে হবে, তার লেখা চিঠিটা অন্য কাউকে দিয়ে কপি করাতে হবে। যাতে ওই চিঠির সঙ্গে তার হাতের লেখা মেলাতে গেলেও, অতি সাধারণ লোকও বলে দেয়— না, এই দুটো হাতের লেখা এক নয়। আর ওটা করার পাশাপাশি তার নিজের হাতে লেখা চিঠিটাও কুটিকুটি করে ছিঁড়ে নর্দমায় ফেলে দিতে হবে। না, যাকে পাঠাচ্ছি, তার নাম তো নয়ই, কোনও সম্বোধনই লেখা যাবে না। এমনকী, কে পাঠাচ্ছে, তার নামও নয়। ও যেমন তাকে পাঠানো দু’লাইনের চিরকুটটায় কে পাঠাচ্ছে, কাকে পাঠাচ্ছে কিছুই লেখেনি, সে-ও সে ভাবেই লিখবে। পর দিন টিফিন পিরিয়ডে তার সমস্ত টিফিনই শুধু নয়, সদ্য কেনা দুটো সুগন্ধি ইরেজার আর চোখ-ধাঁধানো বারোটা রঙিন জেল পেনের পুরো সেটটাই, তার ক্লাসেরই শান্তশিষ্ট মেধাবি ছাত্র— শিমূলের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, এই নে। অভিমন্যুর কাণ্ড দেখে শিমূল একেবারে অবাক। আজ পর্যন্ত যে তাকে কোনও দিন কিচ্ছু দেয়নি, তার হঠাৎ এমন কী হল যে, একটা-দুটো নয়, একেবারে তিন-তিনটে জিনিস একসঙ্গে নিজে থেকেই তাকে যেচে দিচ্ছে! ওকে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অভিমন্যু ফের বলল, নে, ধর। তোর জন্য এনেছি। — আমার জন্য! সবগুলি? যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তার। তবু হাত বাড়িয়ে সব ক’টাই নিয়ে নিল সে। তার পর বলল, তুই খাবি না?
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register