Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩৯)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩৯)

সোনা ধানের সিঁড়ি

৭১
খুব ছোটোবেলা থেকেই আমি খুব চুপচাপ। একা একাই থাকি। কাউকে বিরক্ত করা আমার ধর্মে নেই। ছেলেবেলা থেকেই বিশ্বাস করতাম, প্রতিটি মানুষ তার নিজের ছন্দে চলুক। তুমি তোমার মতো। তাই কারও পথচলার ছন্দই তোমার ছন্দের সঙ্গে মিলবে না। তাই নিজেকে দিয়ে কাউকে বিচার না করাই ভালো।
আজও রাস্তায় যখন চেনা কোনো মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, তিনি যদি আমাকে দেখতে না পান তাহলে নিজে থেকে তাকে আমি খুব কমই জাগাই। আসলে এটা আমার স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে। কেন জানি না আমার কেবলই মনে হয়, প্রতিটি মানুষ সবসময়ই কিছু না কিছু ভাবছে। দেখা গেল আমার সঙ্গে দেখা হওয়া মাত্রই তাঁর ভাবনার সংযোগটি ছিন্ন হয়ে গেল। হয়ত সেই সময় উনি আমাকে দেখতে চাইছিলেন না বা আমাকে দেখামাত্র তাঁর এমন একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল যে তিনি আগের ভাবনাটি পুরোপুরি ভুলে গেলেন। এটা আমাকে কেউ শিখিয়ে দেয় নি। আমার নিজেরই মনে হয়েছে। তবে সবসময় যে এমন করি তা নয়। কখনও কখনও তিনি দেখতে না পেলেও আমি নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে তাঁকে বিরক্ত করি।
৭২
আমার আরও একটা স্বভাবের কথা বলি। যে বিষয়ে আমার কোনো জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে আমার মুখ থেকে কোনোদিন কেউ একটা কথাও কখনও বার করতে পারবে না। এই নিয়ে বন্ধুদের কাছে অনেক বকা খেয়েছি। সুযোগ পেলেই ওরা আমাকে বলে -----  প্রাথমিক একটা জ্ঞান তো আছেই সেটা দিয়েই তো চালিয়ে দেওয়া যায়। কি দরকার বলার, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না ? হয়ত মানুষটির সঙ্গে আর কখনও দেখা হবে না, কি দরকার তার কাছে নিজের অজ্ঞানতার কথা জানান দেওয়া ? আমি ভাবি ঠিক এর বিপরীত। প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে কখনও শিক্ষকের আসনে দাঁড়ানো যায় ? তাহলে তো সেটা চূড়ান্ত মূঢ়তার পরিচয়। জানি মানুষটির সঙ্গে আর আমার কখনও দেখা হবে না, কিন্তু তিনি যেন আমার কাছ থেকে এই ধারণা নিয়ে কখনও না যান ----- কোনো কিছু না জেনেও কত কিছু বলে দেওয়া যায়।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register