Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক মুড়িমুড়কি -তে সুদীপ ভট্টাচার্য (শেষ পর্ব)

maro news
সাপ্তাহিক মুড়িমুড়কি -তে সুদীপ ভট্টাচার্য (শেষ পর্ব)

বল্টুদার ট্রাভেল এজেন্সি - ৩৪

এবার ফেরার পালা। কান কাটা কানাই পুলিশের হেফাজতে। তাকে নিয়ে আজই কলকাতায় ফিরে যাবেন ক্যালকাটা পুলিসের অফিসারেরা। বোটে করে এপাড়ে ফিরে এলো সবাই। গাড়ির সামনে পৌঁছালো তারা। বল্টুদারা আগামীকাল ফিরবেন কলকাতা। একটু টেনশান হচ্ছে। গাড়ির ড্রাইভারের কি হবে তবে। এখান থেকেই বা কি করে হোটেলে পৌঁছবেন, তারপর কলকাতার দীর্ঘ যাত্রা। সমস্যার সমাধান করলো গাড়ির হেল্পার। এতদিন কানাইয়ের আড়ালেই ছিলো ও। আজ যেন কিছুটা স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। বল্টুদাকে বললো " দাদা, একদম চিন্তা করবেন না আমি থাকতে। আমি আসলে ড্রাইভার। এ গাড়িটাও আমারই চালিয়ে নিয়ে আসার কথা ছিলো, কিন্তু হঠাৎ করে এই কানাই এসে গেলো। নিশ্চিন্তে থাকুন আপনারা।"
নিশ্চিন্ত বলতে নিশ্চিন্ত, যেন ঘাম দিয়ে জ্বর সারলো সবার। কিছু রহস্য আস্তে আস্তে পরিস্কার করছেন বল্টুদা। প্রথম দিকে চুরি যাওয়া জুতো গুলি থেকে হিলের দিকের সোলটা তুলে দেখে নিত কানাই যে হীরে আছে কিনা। তার রাখা হীরে বেশ কিছু জুতোতে ছড়িয়ে রেখেছিলো। পরে গুলিয়ে যাওয়ায় সবার জুতোই আস্তে আস্তে চুরি করতে হয় তাকে। চোরের স্বভাব যাকে বলে। হীরে চুরি করেও সামান্য জুতো চুরির থেকে কিছু পয়সা রোজগারের ধান্দা সে ছাড়তে পারছিলো না। আর তাই জুতো চুরির পর অপারেশান হয়ে গেলে সেটা জুতোর দোকানে অল্প দামে বিক্রি করে দিচ্ছিলো কানাই। দোকানের কর্মচারীরা কিনে নিচ্ছিলো সেগুলো, যা অল্প কিছু পাওয়া যায়, তাই লাভ, এই ভাবনাতে। পরবর্তী সময় পরপর বল্টুদারা জুতো চুরি হলেই সে দোকানে যাওয়ায় এবং জুতো ওখানে পাওয়ায় ওরা আর রিস্ক নেয় নি।
বল্টুদার বৌ উচ্ছ্বসিত। এমন একটি রহস্য কাহিনী, এবং যে রহস্যের সমাধান তিনি নিজেও করতে গিয়েছিলেন, তার এমন সমাধান বল্টুদা করলেন। দলের সবাই জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলো বল্টুদাকে। খুব শান্ত থেকে সুচারু ভাবে পুরো অপারেশানটা শেষ করেছেন তিনি। এবং রিস্ক ও নিয়েছেন। যদি কোনোভাবে বন্দুকের গুলি বল্টুদার দিকে ছুঁড়ে দিত কানাই, খুব খারাপ কিছু হতে পারত। কিন্তু বল্টুদা অসম্ভব সাহস দেখিয়েছেন।
রাতের দিকে হোটেলে ফিরে এলো সবাই। আগামীকাল ফিরে যাওয়া কলকাতা। বল্টুদার ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যারা এসেছেন, তাদের মনখারাপ সকলের। এমন সুন্দর ঘোরা, সঙ্গে রহস্য উন্মোচন, টানটান উত্তেজনা।
সমুদ্র পাড়ে বসে আছে সবাই। গান ধরেছে একসাথে। বাড়ি ফেরার গান। আনন্দের গান। বল্টুদা ঘোষনা করলেন মাস কয়েক পর আবার এক অনবদ্য জায়গায় ভ্রমনে যাবো আমরা। এবার ট্রেনে।
আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠলো সবাই।

সমাপ্ত

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register