Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পবাজে পাভেল ঘোষ

maro news
গল্পবাজে পাভেল ঘোষ

"নবরূপে ভটামদা" 😊

সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ে গভীর প্রশান্তিতে এক চুমুক দিতেই গিন্নির ফরমাশ কানে এলো,"ফ্রিজটা খুলে দেখেছো?" "কিছুই নেই..?" আমি হাই তুলে জিজ্ঞাসা করতেই তেলে বেগুনে জ্বলে মা দুর্গার মতো চোখ পাকিয়ে বলে উঠলো গিন্নি,"তোমার জন্য দুটো পটল,আর খান কয়েক ঢেঁড়স পড়ে আছে...." বুঝলাম,মাস্ক,রেনকোটটা গায়ে দিয়ে এখুনি বাজারে বেরুতে হবে আমাকে। বাড়ির গেট পেরুতেই গাড়ির স্টার্ট গেলো বন্ধ হয়ে। "আরে...ভাই,কি হলো? দেখবো,'ভটাম' করে একটু চেষ্টা করে?" মহিলা কণ্ঠে 'ভটাম'...! নির্ঘাত পুলিশ বৌদি। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি,যা ভেবেছি তাই..। "আসলে 'ভটাম' বললেন,তাই একটু অবাক হলাম। ভালো আছেন তো?" "ভালো আছি,তবে আপনাদের ভটামদা তো বাড়িতে নেই।কদিন হলো একটু আউটিং এ গেছে।" "আউটিং?জানি না তো..." "একটু রাগ করেই গেছে..! যাবার সময় হুমকি দিয়েছে,হিমালয়ে যাচ্ছি, কবে ফিরবো জানি না.." "কদিন হলো গেছেন?" "তা প্রায় মাস চারেক হতে চললো..!" করোনার চোটে খুব আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছি বুঝতে পারলাম। চার মাস হলো,আমি জানি না..! নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। হুঁশ ফিরতেই বললাম,"চিন্তা করবেন না বৌদি।অভিমান কেটে গেলেই চলে আসবে..।" "দেখা যাক ভাই।কাউকে বলতেও পারি নি।পুলিশের স্বামী তো..!আবার কথা উঠবে..!চলি ভাই.." একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উনি বিদায় নিলেন। আবার স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করতেই বুকে একটা কম্পন অনুভব করলাম। বুঝলাম,কেউ ফোন করেছে..! 'আননোন নাম্বার'। ধরবো কি ধরবো না ভাবতে ভাবতেই গেলো ফোনটা কেটে। কল ব্যাক করতে যাবো... একই নাম্বার থেকে আবার ফোন। ধরলাম। "হ্যালো.….কে বলছেন?" "ভটাম করে ফোনটা কেটে দিও না মাস্টার।আমি...." মনে এই আবহে ঠান্ডা বাতাস খেলে গেলো। ভটামদার ফোন..! "আরে ..বলুন ভটামদা। কোথা থেকে বলছেন?শুনলাম,হিমালয়ে চলে গেছেন?" "না রে ভাই।তোমাদের বৌদিকে ছেড়ে কি আর যেতে পারি..?আশেপাশেই আছি..।" "আরে কোথায় বলবেন তো..?" "বর্ধমানে দু নম্বর পাক মারা গলিতে চলে এসো।বার্নিক বই বিতানের পাশে। অবশ্য দাড়ি দেখে চিনতে পারবে না..!নাম পাল্টে ফেলেছি।আসলেই বুঝবে।" "ওখানে কি করছেন?" "আরে এখানে চেম্বার করেছি। নতুন ব্যবসা..জ্যোতিষচর্চা।এই ক'মাসে পসার ভালোই জমে উঠেছে।" "এতো কিছু থাকতে জ্যোতিষী হতে গেলেন কোন দুঃখে?" "আরে ভাই,তোমার বৌদি কমাস ধরে সমানে খোঁটা দিয়ে যাচ্ছিলো.. 'বউয়ের পয়সায় মদ গিলতে লজ্জা করে না..!' কদিন আর তেল দিয়ে চলে বলো...! ঠিক করলাম,কিছু একটা করতেই হবে..।" "সে ঠিক আছে..কিন্তু জ্যোতিষী....!" আমার মুখ থেকে কথাটা কেড়ে নিয়ে ভটামদা বলে চললেন, "আরে ভাই,এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।শ্রীরামপুরে আমার 'মামাতো দাদা' বড় জ্যোতিষী।'সোনার বাংলা' চ্যানেলে রেগুলার প্রোগাম করে।ওকে দুঃখের কথা জানাতেই বললো,'আমার মতো লোক ঠকানোর ব্যবসা কর।এখন ইন্টারনেটের যুগে এটা আরো সোজা।এমনি করোনার জেরে লোকের সমস্যা আরো বেড়েছে।শুধু একটা কম্পিউটার জানা লোক ঠিক কর, সে শুধু ক্লায়েন্টের ইনফেকশন যোগাড় করে তোকে দেবে...ব্যাস, কেল্লা ফতে..!" "গ্রহ, রত্ন...এসবের ব্যাপার নেই ভটাম দা..?" "আরে...শোনো,সবইতো আল্টিমেট পাথর। পাশে একটা বই রেখে দিয়েছি,ব্যাস। দেখে দেখে শুধু নাটক করে বলে দেওয়া.." "আপনিই পারেন ভটামদা..সাবধান..ধরা পড়ে যেন না যান।" "শোনো মাস্টার,মানুষের দুঃখ তো চিরদিন থাকে না।ও পাথর পড়লেও কাটবে,না পড়লেও কাটবে।এই সুযোগে আমরা একটু পয়সা করে নিই...." "বৌদি কিন্তু আপনাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজছেন...সাবধান..!" "এটাও একটা চ্যালেঞ্জ ভায়া..।তোমার বৌদির নাকের ডগায় মাস দুয়েক হলো ব্যবসা করছি,কিন্তু আমার টিকিটাও ধরতে পারে নি।কেমন জব্দ করেছি বলো...' "ঠিক আছে রাখছি,ভটামদা...বাজারে যাচ্ছি,নাহলে..." "রাখো ভাই..তোমার ব্যথাও বুঝি।একদিন চলে এসো চেম্বারে..." গাড়িটা কষ্ট করে স্টার্ট দিয়েছি সবে,হঠাৎ ল্যাটাদা গাড়ির পিছনে চেপে বসলেন। "আমায় একটু থানায় নামিয়ে দাও মাস্টার,একটু দরকার আছে..।" পাড়াতে নন্দী নেই তো কি,ভিরিঙ্গিটা আছে..!শালা, জ্বালিয়ে খেয়ে দিলো...! "চলুন..আবার থানায় কেন ল্যাটাদা?" "আমিও জানি না,মিসেস ভটামের জরুরী তলব।" ল্যাটাদাকে থানায় নামিয়ে ফিরতে ফিরতে প্রায় ঘন্টা দুয়েক হয়ে গেলো।গিয়ে দেখি রান্না বান্না বন্ধ করে গিন্নি ইউ টিউবে রান্না দেখছে। 'কি দেখছো' বলতেই গিন্নির হুঙ্কার,"ভাত,ডাল, সবজি ফুটিয়ে শর্টকাটে কিভাবে রান্না করা যায়,তাই দেখছি।কটা বাজে,সে খেয়াল আছে তোমার?" কানে ঢুকলো না গিন্নির কথা।মাথায় খালি ঘুরপাক খাচ্ছে ভটামদার কথাটা,'তোমাদের বৌদি আমার টিকিটাও ধরতে পারবে না...!'
দিন দুয়েক পরে সকাল সকাল স্নান করে বেরিয়ে পড়লাম।গন্তব্য.....দু নম্বর পাক মারা গলি। চেম্বারে ঢুকতেই চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো আমার।করেছে কি ভটামদা ? একদম স্মার্ট জ্যোতিষীর দপ্তর বলতে যা বোঝায়,সেটাই চোখের সামনে।ঢুকতেই রিসেপশন রুম। একটা ছেলে দেখি,কম্পিউটার নিয়ে বসে আছে।চোখদুটো একবার কম্পিউটার স্ক্রিনে ,আর একবার কাস্টমারের আগমনের দরজায়।আমি ঢুকতেই বললো, "কি চাই,বলুন?" "ভটামদা আছেন?" বলতেই অবাক হয়ে বললো, "ভটামদা...! এই নামে তো কেউ এখানে থাকেন না।" "না মানে...." "টল,এ হলো আমার বন্ধু।মাস্টার রে হারামজাদা। তুই অবশ্য চিনবি না।" সেই আন্তরিক চেনা স্বর। আমাদের সবার প্রিয় ভটাম দা।আমার কাঁধে স্নেহের হাত পড়তেই ঘুরে তাকালাম।গেরুয়া বসন, কাঁচা পাকা দাড়ি।চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা।একদম নতুন বেশে।মানিয়েছেও দিব্যি। সেই মাতাল ভটামদার সঙ্গে তো কোনো মিলই নেই দেখছি "পরিচয় করিয়ে দিই মাস্টার,এ হলো 'টলানন্দ'।আমার আ্যসিট‍্যান্ট। আমি আদর করে 'টল' বলে ডাকি।" টলানন্দ হাতজোড় করে হাসিমুখে নমস্কার করতেই ভটামদা ওকে বললেন,"আমার নতুন নামটা মাস্টারকে বলে দে টল।" "আজ্ঞে, ধড়ফড়ানন্দ।" নামটা শুনতেই হাসি চাপতে পারলাম না। "হেসো না মাস্টার।অনেক বুদ্ধি করে নামটা নিয়েছি।এই করোনা আবহে মানুষ ভয় পাচ্ছে বেশি।মানে বুক ধড়ফড় বেশী করছে লোকের। এই ধড়ফড়ানি থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র এই অধম। তাই নামটা নিয়েছি। চলো,যে ঘরে বসে লোককে টুপি দিই,সেই ঘরটা তোমায় দেখাই।" "চলুন,ভটামদা..." "উঁহু, ভটাম নয়.." "ধড়ফড়ানন্দ...." মুচকি হেসে বললাম। চেম্বারে ভটামদার পাশে বসতেই উনি বললেন,"মাস্টার শুধু আমার মাজিকটা দেখো..!" হঠাৎ টেবিলে আদ্যিকালের মুগুরফোনটা বেজে উঠলো। "ক্রিং..ক্রিং...." "হ্যালো, টল ক'জন মুরগী এসেছে রে?" "তিনজন স্যার, দুজন ভদ্রলোক আর একজন মহিলা।" "আগে মোরগদুটোকে পাঠা..." "ওকে স্যার.." ওপ্রান্তে টলানন্দ ফোনটা কেটে দিলো। আমি চুপচাপ মজা দেখছি।বেশ লাগছে। দেখি ভটামদা এ দুটোকে কিভাবে জবাই করে। "আসুন,নাম বলুন।আর হ্যাঁ... জন্মমাস, জন্মের সময়ও বলবেন।" দেখি,ভটামদা দুই ভদ্রলোকের নাড়ি নক্ষত্র সব বলে দিলেন একদম মুখস্থের মতো.....! আমি তো অবাক। সাক্ষাৎ শেষে ওনাদের বিল হলো পাথর সহ প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা।ওরেব্বাস..! "এ কি করে সম্ভব ভটামদা মানে ধড়ফড়দা..?" কৌতূহল চাপতে না পেরে প্রশ্ন করে বসলাম। "আমি জানি,তুমি অবাক হবে 'ভটাম' করে...!এই রে,আবার বলে ফেললাম 'ভটাম'।অনেক কষ্টে ছেড়েছি গো মাস্টার।' "ব্যাপারটা বলুন প্লিজ...।জানার লোভটা সামলাতে পারছি না..." আমি হাঁ করে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে বললাম। "শোনো,মাস্টার...এই দুই ভদ্রলোকের একজন আমার চেনা।ওর সঙ্গে আগেই যোগাযোগ করেছে টল। সুভাষপল্লীতে ওর বাড়ি। এমন দালাল শহরে গোটা দশেক আমার রাখা আছে।এদের কাজ পাড়ার চায়ের দোকান,ঘুমটিতে আড্ডা মারা আর সুকৌশলে খদ্দের যোগাড় করা।দশ পার্সেন্ট কমিশন থাকে ওদের।শুধু মাঝে মাঝে এরা ভেক বদল করে,যাতে ধরা না পড়ে...বুঝলে ভায়া....!" "ভটামদা ..কিন্তু এত নিখুঁত তথ্য বলতে পারছেন কি করে.?" "এগুলো দালালদের কাজ।টল শুনে নোট করে একটা কপি আমায় আগের দিন দিয়ে দেয়।ব্যাস...! তবে প্রতিদিন দশটার বেশী খদ্দের নয়..." হঠাৎ মুগুরটা আবার বেজে উঠলো। "ক্রিং...ক্রিং...." ভটামদা ধরতেই ও প্রান্ত থেকে টল বললো,"স্যার, ভদ্রমহিলাকে পাঠাবো?" "পাঠা.... নামটা কি রে.?" ভটামদার হাসির মধ্যে একটা প্রশান্তি দেখতে পেলাম। "করুনাময়ী থান্ডার...." স্পষ্ট শুনতে পেলাম টলের গলা। নড়েচড়ে বসলেন ভটামদা। কপালে মনে হলো বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে। "পুলিশ বৌদি নাকি, ভটামদা ?" আমি আমতা আমতা করে বললাম। "তাই তো দেখছি ভাই...তুমি একটা কাজ করো ভাই...মাস্ক আর আমার নকল চশমাটা পরে নাও।" "কিন্তু আপনি......" "আমার আরো চশমা আছে মাস্টার।যা বলছি করো..." আমি ভটামদার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলাম।উনিও মাস্ক আর চশমা পরে বৌদির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন।বুঝলাম,ভটামদা উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। এক বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকবো, এটা ভেবে মনটা খুব ফুরফুরে হয়ে উঠলো আমার। "আসতে পারি?" মহিলা কণ্ঠ শুনে বুঝে নিতে অসুবিধা হলো না আমার। পুলিশ বৌদি..! বসলেন একদম ভটামদার মুখোমুখি। "বসুন..." ভটামদার এমন মিনমিনে গলা কখনো শুনিনি।বুঝতে পারছি,ভটামদা গলছেন বরফের মতো...'ভয়ে' না 'প্রেমে' সেটা অবশ্য বুঝতে পারলাম না। "আপনিই স্বামী ধড়ফড়া...." "আজ্ঞে.. বলুন,আপনার কি সমস্যা?" "না মানে.." এবার কাঁদতে শুরু করলেন পুলিশবৌদি। "কাঁদবেন না...বলুন,আশা করি সমাধান করতে পারবো...." এমন করে চোখের জল যে পুলিশে ফেলে আমি প্রথম দেখলাম।আমার বুকটাও একটু হলেও হু হু করতে লাগলো। "আসলে আমার স্বামী মাস চারেক বাড়ি ফেরেন নি। ওনার কথা ভেবে ভেবে আমার রাতে ঘুম হয় না।সকালে আবার ডিউটি...আমি মনে হয় আর বাঁচবো না।" "কেন...কোথায় গেছেন আপনার স্বামী?" ভটামদাকে একটু নরম্যাল মনে হলো। "হিমালয়ে যাচ্ছি বলে সেই যে গেলেন...!" "কাউকে কিছু না বলে 'ভট'.." আমি ভটামদার পায়ে একটা চিমটি কাটতেই উনি সতর্ক হয়ে গেলেন।আর একটু হলেই 'ভটাম' বেরিয়ে যেতো। "না,মানে... আপনার স্বামীর নাম,জন্মতারিখ আর জন্মের স্থান দিয়ে যান,দেখছি।আশা করছি..." "আর একটা সমস্যায় পড়েছি স্বামীজী।" "ব....ব..লুন। আ.. মি শুন..ছি।" ভটামদা তোতলাতে শুরু করলেন। বুঝলাম,উনি নার্ভাস হয়ে পড়ছেন। "আমার পাশেই থাকে 'ল্যাটা' বলে এক হতচ্ছাড়া।মাঝে মাঝেই বাড়িতে সকাল বিকেল চা খেতে চলে আসছে।আমি 'না' করতে পারছি না।আসলে আমার স্বামীর না থাকার সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটারও একটা বিহিত করুন স্বামী...." স্বামী...! ওঃ.. কি আবেগে উচ্চারণ করলেন পুলিশ বৌদি। চোখ বুঝলে মনে হচ্ছে যেন তৃপ্তি মিত্রের সেই কালজয়ী কণ্ঠ শুনছি। আর মনে হয় না,ভটামদা নিজেকে সামলাতে পারবেন...! "চিন্তা নেই আপনার করুনাময়ী...। শালা ল্যাটার ব্যবস্থা আমি করছি। এত বড় অস্পর্ধা....!" "আজ তাহলে আসি স্বামীজী....." "আসুন করুনাময়ী দেবী।আমি এখুনি যজ্ঞে বসবো,এর সমাধান না করে আমি উঠবো না।কথা দিলাম,আপনার স্বামী শীঘ্রই আপনার কাছে ফিরে আসবে।" কিন্তু এটা কি করে সম্ভব হবে ? ভটামদা তাহলে বাড়ি ফিরে যাবেন? মাথায় ঢুকছে না কিছু..! পুলিশবৌদি বিদায় নেওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ফোনটা হঠাৎ সাইলেন্ট মুডে বেজে উঠলো..। "হ্যালো..." "ভটামদার পাশে বসে বসে ভাই, খুব তো মজা দেখছো। বাইরে এসো….." রীতিমতো হুমকির মতো শোনালো পুলিশবৌদির গলাটা। সর্বনাশ...! চটপট উঠে পড়লাম। বাইরে বেরুতেই দেখি পুলিশবৌদি কোমরে হাত দিয়ে রাগে মনে হচ্ছে ফুঁসছেন। "শোনো,হাফ হাতা জামা পরেই ভুলটা করলে ভাই। কব্জির উপরে তো জ্বলজ্বল করছে নিজের নামটা। পুলিশে কাজ করি কিনা..!তাই নজর এড়ালো না।" শুনেই চোখ চলে গেল বাম হাতটায়। তাই তো..!গত বছরই শখ করে নিজের নামটা খোদাই করেছিলাম,আর সেটাই আজ কাল হলো..! "কিন্তু ল্যাটাদা কি দোষ করলো? ওনার নামে..." আমার কথা শুনে বৌদি বলে চললেন, "তোমাদের ভটামদাকে জব্দ করতে চিত্রনাট্যে আবেগ,আ্যকশন..সব চাই।ল্যাটাদাকে আজ সকালে ডেকে সব ছক কষেছি থানায়। শুনেই উনি বললেন, আপনি যা করবেন করুন,ভটাম ছাড়া পাড়াটা একদম মিইয়ে আছে।ওকে ফিরিয়ে আনুন।" সবটা শুনে আমি ভ্যাবাচাকা খেয়ে বললুম,"কিন্তু ভটামদাই যে ধড়ফড়ানন্দ,সেটা কি করে বুঝলেন..?" "আরে... দিন পনেরো আগে পোস্টারে এক জ্যোতিষীর মুখটা দেখেই সন্দেহ হলো। ছদ্মবেশটা ভালোই নিয়েছিলো তোমাদের ভটামদা,কিন্তু কপাল জুড়ে 'ভারতের মানচিত্রের মতো জরুল'টা লুকোবে কি করে ভাই..? এই পনের বছরের বিবাহিত জীবনে কত আবেগের চিহ্ন এঁকেছি ওখানে...!" আমি হো হো করে হেসে উঠতেই বৌদির ফোনটা বেজে উঠলো। "তোমাদের ভটামদা ফোন করেছে চেম্বার থেকে,স্পিকারে দিচ্ছি..কি বলছে শোনো..." বৌদি স্পিকারে দিতেই ভটামদার গলা,"বিকেলে যখন 'ল্যাটা' চা খেতে আসবে,তখন যাবো...শালার গলায় পা দিয়ে...." এরপরে ভটামদা কি বললো,আর আপনাদের শোনাচ্ছি না।আমি কানে আঙ্গুল দিয়েছি।মাইরি বলছি.....!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register