Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৫৪)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৫৪)

সোনা ধানের সিঁড়ি

৮৯
ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই রোদের তাপ বাড়তে থাকে। শীত অবশ্যই থাকে কিন্তু রোদের উত্তাপটা বাড়ার জন্যে শীতটা ততটা প্রবল বলে মনে হয় না। এতদিন গোটা শীতকাল জুড়ে দুপুর বলে কিছু ছিল না। এই প্রথম মনে হতে শুরু করল দুপুর আছে। হঠাৎ করেই চারপাশটা কেমন যেন নিঝুম হতে শুরু করেছে। কোনো কোনো দিন বিকালে দক্ষিণদিক থেকে বাতাস বইতে শুরু করে। আমার মাথার গোলমালের শুরু ঠিক এখান থেকেই। বুঝতে পারি গ্রীষ্ম একটু একটু করে তার জায়গা করে নিচ্ছে।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি। সাইকেল নিয়ে, কখনও হেঁটে আবার কখনও বা কোনো রেলস্টেশনে নেমে চুপচাপ বসে থাকি। কোনো কারণ নেই, কোনো উদ্দেশ্যও নেই। সেই কোন ছোটবেলা থেকে উদ্দেশ্যহীন যাত্রার প্রতি এক অমোঘ টান আমার।
এইসময় মন যেমনই থাক দুপুর এলেই সবকিছু কোথায় উবে চলে যায়। খুব ছোট তখন আমি। সেভেন কি এইটে পড়ি। কতদিন এমন হয়েছে গরমের দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়েছি। এদিকে খোঁজ খোঁজ। কোনো নির্জন স্টেশনে দুপুরবেলা ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকেছি। কখনও কিছু লিখেছি আবার কখনও চুপচাপ বসে থেকেছি। কত অচেনা লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। কখনও আবার স্টেশন থেকে নেমে গ্রামের রাস্তা ধরে হেঁটে গেছি। রাস্তায় যার সঙ্গেই দেখা হয়েছে তার সঙ্গেই কথা বলেছি। আমি এমনিতেই কম কথার মানুষ। অন্য সময় যাদের সঙ্গে কথা বলি না গরমের দুপুরে তারা হয়ে যায় আমার প্রাণের মানুষ। আসলে দুপুর আমার কাছে একটা নেশার মতো। আমাকে সবকিছু ভুলিয়ে দেয়।
এক একসময় আমি অনেক ভেবে দেখেছি দুপুর আমার কেন এতো প্রিয়। খুব ছোটবেলা থেকেই আমার খুব কাছের জন দুপুর। বাবা মা মারা যাওয়ার পর থেকে এই দুপুর আরও অনেক অনেক বুকের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে আমার। এককথায় সে আমার অভিভাবক।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register