গারো পাহাড়ের গদ্যে ড. এস এম শাহনূর (পর্ব -১০)

দানবীর

মুক্তি যুদ্ধ কালীল অক্ষত মহেশাঙ্গন:
বলা বাহুল্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠানটি পাকসেনাদের নির্ঘাৎ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে আইনজীবী রেজাউর রহমান, ডাঃ সুলতান আহম্মদ, আইনজীবী মজিবুর রহমান প্রমুখের বদৌলতে।

➤একজন সম্পূর্ণ মানুষ মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য :
তাঁর আত্মজীবনী প্রমাণ করে অতিসুক্ষ কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ, সময়জ্ঞান এবং সংবেদনশীলতা কখনো তাঁর দৃষ্টি এড়াত না। সম্পূর্ণ মানুষ তিনি হতে পেরেছিলেন বলেই ছাত্ররা যাতে মানবিক আদর্শে নিজেকে আদর্শায়িত করে জীবন গড়ে তুলতে পারে সে বিষয়ে তিনি সর্বদা সজাগ ছিলেন এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের সেভাবে নির্দেশ দিতেন। খুঁজে খুঁজে তিনি শিক্ষক নিয়োগ করতেন। নীতি থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত হওয়া ছিল যার প্রবল অনীহা।সেই আদর্শ বাঙালি মহেশচন্দ্রের
সাধারণ কোনো ছাত্রাবাস ছিল না রামমালা! ইন্দ্র কুমার সিংহ রচিত গ্রন্থের ভূমিকাতেই তিনি তা সুস্পষ্ট করেছেন। রামমালা ছাত্রাবাসের মূল আদর্শ ছিল: সর্ব্বম আত্মবশং সুখম্ সর্ব্বং পরবশং দুঃখম্ অর্থাৎ আত্মনির্ভরতা পরম সুখ ও পরনির্ভরতা পরম দুঃখ। এখানে ছিল ১) কৃষি বিভাগ ২) সেবা বিভাগ ২) খাদ্য বিভাগ ৪) মুদিদোকান ৫) সভা-সমিতি ৬) ক্রীড়া ও আমোদ প্রমোদ ৭) রামমালা পল্লীমঙ্গল সমিতি ৮) ধর্মশিক্ষা। সকাল বিকাল প্রার্থনা পরিচালিত হত ছাত্রাবাসের অধ্যক্ষ পন্ডিতপ্রবর ড.রাসমোহন চক্রবর্তীর তীক্ষ্ণ তত্ত্বাবধানে। সুস্থ ও স্বাভাবিক মানবজীবন গড়ে তোলার জন্য জরুরি সব শিক্ষাই ছাত্রাবাসে অন্তর্ভুক্ত ছিল। মহেশচন্দ্র রামমালা ছাত্রাবাসকে তাই নিজের মানসপুত্র বলে বিবেচনা করতেন।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!